রথীন রায়;- যেন বিবাহে সেঞ্চুরি করবার স্বপ্ন ছিলো ! বেকার যুবকদের প্রতারণা এবং ঋণ জালিয়াতির জন্যও এর আগে দু’বার ওই ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে ! নাম-পরিচয় লুকিয়ে ৭ রাজ্যে ১৪ টি বিয়ে করেছিলেন এক ব্যক্তি ! ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ার পাতকুরার বাসিন্দা ওই ‘গুণধর’ শেষমেশ পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন ! তাঁরই বিয়ে করা এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে অপরাধের পর্দাফাঁস হয়েছে ! ধৃতের কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, ৪টি আধার কার্ড ও বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ !
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৯৮২ সালে প্রথম বিয়ে করেছিলেন, ২০০২ সালে দ্বিতীয়বার তিনি বিয়ে করেন ! ভুবনেশ্বরের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ উমাশঙ্কর দাশ জানিয়েছেন, ধৃতের এই দুই স্ত্রীর মোট পাঁচটি সন্তান রয়েছে ! ২০০২ থেকে ২০২০-এর মধ্যে ধৃত ব্যক্তি বিবাহ সংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলেন ! অন্য দুই স্ত্রীর অজান্তে পরপর তিনি বিয়ে করতে থাকেন ! সবচেয়ে শেষে বিয়ে করা বউ নিয়েই ভুবনেশ্বরে বাস করছিলেন ওই ব্যক্তি ! ধৃতের এই স্ত্রী দিল্লির একটি স্কুলের শিক্ষিকা !
এই মহিলাই কোনওভাবে ধৃতের আগের বিয়েগুলি সম্পর্কে জানতে পারেন ! তিনি পুলিশে অভিযোগ জানান, শেষমেশ তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের ! ভুবনেশ্বরের ভাড়া বাড়ি থেকে ওই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করে ! ভুবনেশ্বরের ডিসিপি দাশ আরও জানিয়েছেন, ধৃতের টার্গেট ছিলেন মূলত মধ্যবয়স্ক অবিবাহিত মহিলারা ! এছাড়াও ডিভোর্সি মহিলা যাঁরা বিবাহ সংক্রান্ত সাইটগুলিতে এসে বন্ধুর খোঁজ করেন, তাঁদেরই নিশানা করত ধৃত ব্যক্তি !
একসময় পরিচয় লুকিয়ে পরপর বিয়ে করতে থাকেন ওই ব্যক্তি ! দিল্লি, পঞ্জাব, অসম, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা সহ-সাতটি রাজ্যের মহিলারা ধৃতের ‘শিকার’ হয়েছেন ! স্ত্রীদের ছাড়ার আগে তাঁদের কাছে থাকা টাকা-পয়সাও নিয়ে নিত ওই ব্যক্তি ! পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত নিজেকে কখনও একজন ডাক্তার এবং কখনও আইনজীবী বলে পরিচয় দিতেন ! আধা-সামরিক বাহিনীতে কর্মরত একজন মহিলাকেও ওই ব্যক্তি বিয়ে করেছিলেন !
ধৃত ব্যক্তির প্রথম দুই স্ত্রী ওড়িশার বাসিন্দা, ভুবনেশ্বরের ডিসিপি উমাশঙ্কর দাশ জানিয়েছেন, এক স্কুল শিক্ষিকা গত বছরের জুলাই মাসে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ! ওই মহিলার অভিযোগ, ধৃত ব্যক্তি তাঁকে ২০১৮ সালে দিল্লিতে বিয়ে করেছিলেন ! পরে তাঁকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি ! সেই অভিযোগের পরেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে !
পুলিশের জালে ধরা পড়ে প্রতারক, ধৃতের কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, চারটি আধার কার্ড এবং অন্যান্য নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ! হায়দরাবাদ এবং এর্নাকুলামে বেকার যুবকদের প্রতারণা এবং ঋণ জালিয়াতির জন্যও এর আগে দু’বার ওই ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছিল বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে ! তাছাড়া লোণ সংক্রান্ত প্রতারণা প্রায় প্রতিদিন ঘটে চলেছে ! সাবধান থাকুন পাঠক বন্ধু !!