প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১৩ মে
ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারানপূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার নবগ্রাম নিবাসী বিজেপি কর্মীর মা কাকলি ক্ষেত্রপাল ।৪৭ বয়সী কাকলি ক্ষেত্রপালকে ধর্ষণ করার পর খুন করা হয় বলে বৃহস্পতিবারজানালেন কেন্দ্রীয় তপলিশি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা।কেন্দ্রীয় তপশিলি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যানের এমন দাবি শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে ।যদিও জামালপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন ,কেন্দ্রীয় তপশিলি জাতি কমিশনের প্রতিনিধিরা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে এমন মন্তব্য করছেন ।মুখে কিছু না বললেও পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারাও এই অভিযোগের সঙ্গে সহমত হতে পারেন নি ।
ভোটের ফল প্রকাশের পরদিন রাজনৈতিকহিংসায় উত্তপ্ত হয় জামালপুর থানার নবগ্রামের ষষ্ঠিতলা এলাকা। তৃণমূল ও বিজেপির সংঘর্ষের ঘটনায় ওইদিন প্রাণ হারাণ এলাকার বিজেপি শক্তি প্রমুখ আশিষ ক্ষেত্রপালের মা কাকলি ক্ষেত্রপাল ও দুই তৃণমূল কর্মী শাজাহান শা ওরফে সাজু ও বিভাস বাগ । এছাড়াও ভোট পরবর্তী হিংসায়
প্রাণ হারান জেলার রায়না থানার সমসপুরের তৃণমূল কর্মী গনেশ মালিক ও কেতুগ্রামের শ্রীপুরের বিজেপি কর্মী বলরাম মাজি । পাশাপাশি বর্ধমান ১ ব্লকের বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের মিলিকপাড়াতেও ঘটে হিংসার ঘটনা। যার শিকার হন অনেক তপশিলি পরিবার।
হিংসার ঘটনার কারণ ও হিংসা পরবর্তি পরিস্থিতি সরোজমিনে খতিয়ে দেখতে এদিন
বেলায় কেন্দ্রীয় তপশিলি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা ,ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার সহ ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল নবগ্রামে পৌছান। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা ,জেলার পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন সহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের অন্য উচ্চ পদস্থ কর্তারাও কমিশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেই নবগ্রামে পৌছান।কমিশনে প্রতিনিধিরা গ্রামের রাস্তাদিয়ে হেঁটে কাকলি ক্ষেত্রপালের বাড়িতে যান । কিন্তু সেখানে কারুর দেখা পান না ।এছাড়াও বাড়িতে কেউ না থাকায় নিহতের প্রতিবেশী কারুর সঙ্গেও তাঁরা কথা বলতে পারেন না ।
এরপর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় তপশিলি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা । তিনি বলেন ,তপশিলি জাতি পরিবারের মহিলা কাকলি ক্ষেত্রপালকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়ে তাঁরা নবগ্রামে এসেছেন।
কিন্তু আতঙ্কেরপরিবেশ এখনও অব্যাহত থাকায় নিহতের পরিবার কিংবা তাঁদের প্রতিবেশী কাউকে বড়িতে পেলেন না বলে কথা বলতে পারলেন না । গত ৩ মে ভোট পরবর্তী হিংসায় নবগ্রাম নিবাসী তৃণমূল কর্মী বিভাস বাগও খুন হন । তাঁর বাড়িতে গেলেন না কেন ? এই প্রশ্নেরউত্তরে বিজয় সাম্পলা বলেন ,যাদের মৃত্যুরবিষয়ে তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন শুধু তাঁদের বিষয়েই তাঁরা খোঁজ খবর নিচ্ছেন। চেয়ারম্যান কে এরপরেই সাংবাদিকরা জানান ’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা পক্ষপাতদুষ্ট বলেই শুধু বেছেবেছে বিজেপির লোকজনের বাড়ি যাচ্ছেন ।
এর উত্তরে বিজয় সাম্পলা বলেন ,কাকলি ক্ষেত্রপালের বাড়িতে তাঁদের আসাটা কেউ রাজনৈতিক দৃষ্টিতে দেখলে ভুল করবেন । কে কি বলছেন সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না । তবে তিনি প্রত্যাশা করেন ,এই বিষয়ে কেউ যদি কোনও মন্তব্য কবেন তবে তিনি তাঁর সাংবিধানিক মর্যাদা বজয় রেখেই মন্তব্য করবেন ।নবগ্রাম ছাড়ার আগে চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা জানান, কাকলি ক্ষেত্রপালের স্বামী অনিল ক্ষেত্রপাল শহর বর্ধমানের একটি বেসরকারী নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন । তাই ওই নার্সিংহোমে যাবেন বলে তিনি পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান । এরপর নবগ্রাম থেকে বেরিয়ে ওই নার্সিংহোমে গিয়ে কেন্দ্রীয় তপশিলি জাতি কমিশনের প্রতিনিধিরা অনিল ক্ষেত্রপালের সঙ্গে কথা বলে সেদিনের ঘটনা বৃত্তান্ত শোনেন ।
