আজিজুর রহমান বর্ধমান ১৪ মে :স্ত্রী নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সন্তান ভূমিষ্ট হবার আগেই বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হল বাবার । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি বৃহস্পতিবার ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসি থানার পুরসার ডিভিসি পাড়ায় ।এই ঘটনায় মৃতর পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।পেশায ট্রাক চালক মৃত ব্যক্তির নাম মনিরুল হাসান মল্লিক ওরফে রনি (২২)।
পুরসা ডিভিসি পাড়াতেই তার বাড়ি।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে,এদিন সকালে ট্রাকের চালকের আশনে ওঠার সময়ে রাস্তার সামান্য উপরে ঝুলে থাকা বিদ্যুৎতের তার ঠেকে যাওয়ায় মনিরুল বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়।আশঙ্কা জনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক যুবককে মৃত ঘোষনা করেন।এদিনই গলসি থানার পুলিশ যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান হাসপাতাল পুলিশ মর্গে পাঠায় । মনিরুলের এমন অকাল মৃত্যুর জন্য তাঁর পরিবার বিদ্যুৎ দপ্তরের গাফিলতিকেই দায়ী করেছেন ।গলসি থানার পুলিশ ট্রাক চালকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
পুরসা ডিভিসি পাড়ার বাসিন্দা আনিসুল মিদ্দা জানিয়েছেন, লকডাউন ঘোষনা হবার পরেই মনিরুল ট্রাক নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে । সেই থেকে তাঁর বাড়ির সামনের রাস্তায় ট্রাকটি দাঁড় করানো ছিল । লকডাউনের কড়াকড়ি কিছুটি শিথিল হওয়ায় এদিন ট্রাক নিয়ে মাল লোড করতে যাবার কথা ছিল মনিরুলের।
লকডাউনের মধ্যে পথে যাতে খাওয়ার কষ্ট না হয় তার জন্য এদিন সকালেই মনিরুল চালকের আশনের কেবিনে উঠে স্টোভ ও বাসনপত্র চাপাতে যাচ্ছিল। ওই সময় রাস্তার সামান্য উপরে ঝুলে থাকা বিদ্যুৎতের তার হাওয়ায় দুলে মনিরুলের শরীরে ঠেকে যাওয়া মাত্রই সে বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়। তখন মনিরুল আর্ত চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা ট্রাকের কাছে ছুটেযায় । তারা কোনক্রমে মনিরুলকে উদ্ধার করে পুরসা হাসপাতালে নিয়ে গেলেও
শেষ রক্ষা হয়নি। আনিসুল মিদ্দা অভিযোগে বলেন,বিদ্যুৎ দপ্তরের ঠিকা কর্মীরা সঠিক ভাবে বিদ্যুৎতের তার লাগায় নি । রাস্তার সামান্য উপরে বিদ্যুৎতের তার বিপদজনক ভাবে ঝোলানো হয়েছে । আর সেই তারে বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হয়েই মনিরুলকে প্রাণ খোয়াতে হল ।
মৃতর আত্মীয় জিয়াউর রহমান মল্লিক জানালেন , “মনিরুল ছিল পরিবারের এক মাত্র রোজগেরে ব্যক্তি । তাঁর দাদা সামান্য একজন ভ্যান চালক ।বছর দেড়েক আগে বীরভুমের লাভপুরের তরুণী সুহানার সঙ্গে মনিরুলের বিয়ে হয় । বর্তমানে সুহানা বেগম ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা । বাবা হতে চলার আনন্দে বিভোর ছিল মনিরুল । কিন্তু নিজের সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগেই শুধুমাত্র বিদ্যুৎ দপ্তরে গাফিলতির জন্য মনিরুলকে অকালে চলে যেতে হল । ”
গলসি বিদ্যুৎ সহায়তা কেন্দ্রের স্টেশন ম্যানেজার সুবীর বিশ্বাস বলেন, ‘পুরসার ওই দুর্ঘটনার খবর পেয়েই তিনি এলাকায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। কভার তারে এমন ঘটনা কি করে ঘটল তা তদন্ত করে দেখাহচ্ছে। । তদন্তে গাফিলতি ধরা পড়লে যথাযথ ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেওয়া হবে ’।