তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বাবাকে খুনের চেষ্টার মামলায় কারাদন্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন তৃণমূলের ১২ জন নেতা ও কর্মী। বর্ধমান আদালতের এই রায়ে দেড় মাসের বেশী সময় ধরে জেলে বন্দী থাকার পর অবশেষে হাইকোর্টে মিললো তাদের জামিন।কলকাতা হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করায় আপাতত স্বস্তিতে বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্ত সহ বর্ধমান ১ ব্লকের যুব সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানস ভট্টাচার্য, দলের নেতা শেখ জামাল, কার্তিক বাগ সহ ১২ জন অভিযুক্ত। গত ২৮ মার্চ বর্ধমান বর্ধমানের ফাস্ট ট্রাক সেকেণ্ড কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্তকে তিনবছর কারাদণ্ড এবং ৫০০০ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন।১২ জন অভিযুক্তকে বিচারক ১০ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও সাজা ঘোষণার দিনই বিচারক ২০ হাজার টাকার বেলবন্ডে অসুস্থ কাকলি তা গুপ্তর অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করে ছিলেন ।

হাইকোর্টের রায়ের কথা শুনে খুশি পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।সোমবার তিনি বলেন,“আমাদের আজ খুশির দিন। আশা রাখছি আগামীদিনে এরা সকলেই সাজা থেকে মুক্ত হবে।তখন প্রমাণিত হবে এরা নির্দোষ। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়ে দেন, জামিনে মুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা দলের যে পদে ছিলেন সেই পদেই বহাল থাকবেন।“ এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ে নি বিজেপি নেতারা। জেলার বিজেপি নেতা দেবজ্যোতি সিংহরায় বলেন,“অপরাধী ও ক্রিমিনালদের নিয়েই যে তৃণমূল কংগ্রেস দল ও প্রশাসন চালছে, তা আরো একবার প্রমাণ। মামলাটি হয়েছিল ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব বর্ধমানের নাড়ীগ্রাম দাস পাড়ায়।গোষ্ঠী সংঘর্ষে তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পালের বাবা দেবু পাল গুরুতর জখম হন। তা নিয়ে দেবু পালের স্ত্রী সন্ধ্যারাণী পাল ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।সন্ধ্যারাণীর অভিযোগ ছিল,“শাসকদলের ক্ষমতাসীন নেতারা বেধড়ক মার মেরে তাঁর স্বামী দেবু পালের বাবার চোখ নষ্ট করে দিয়েছে। এই মামলার তদন্ত চালিয়ে বর্ধমান থানা ২০১৮ শালের ২২ জানুয়ারি বর্ধমান আদালতে চার্জশিট জমা দেয় । তার পরেই শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া।

বর্ধমান আদালত তথা সাজা প্রাপ্তদের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস এদিন বলেন, ২০১৭ সালের মামলায় বর্ধমান আদালত যে ১২ জনকে ১০ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল তাঁদের সবার জামিন এদিন কলকাটা হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছে। অস্থায়ী জামিনে মুক্ত থাকা কাকলি তা গুপ্তর জামিনও কলকাতা হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছে পেয়েছেন। ১২ জনই সম্ভবত মঙ্গলবার জেল থেকে ছাড়া পাবেন বলে বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন।