আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

১০২ বছর বয়সেও ভোটাধীকার প্রয়োগের সিদ্ধান্তে অনড় বৃদ্ধের বাড়িতে পৌঁছে ভোট নিল কমিশন

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান

ভারত স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম নির্বাচনে হয়েছিল ভোট দানের হাতেখড়ি।আর এখন চলছে দেশের ১৮ তম লোকসভা সাধারণ নির্বাচন।সেই সময়ের তরুন সত্যনারায়ন সাঁই এখন ১০২ বছর বয়সী দেশের একজন প্রবীন নাগরিক।তাঁর শরীর বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হলেও ভোট দানের অধিকার থেকে তিনি কিছুতেই পিছু হঠে আসতে চান নি। তাই বিষ্ণুপুর লোকসভা অধীন পূর্ব বর্ধমানে খণ্ডঘোষের খুদকুড়ি গ্রামের এই প্রবীণ ভোটারের জন্য ভোটদানের বিশেষ ব্যবস্থা করে নির্বাচন কমিশন। সেই ব্যবস্থাপণা সত্যনারায়ন বাবুকেও মুগ্ধ করে ।

পঞ্চম দফার লোকসভা নির্বাচনের দু’দিন আগে অর্থাৎ শনিবার খুদকুড়ি গ্রামের সত্যনারায়ন বাবুর বাড়িতে পৌঁছে যান কমিশনের লোকজন।তাদের সহায়তাতেই এদিন তিনি ’পোস্টাল ব্যালটে’ তাঁর ভোটাধীকার প্রয়োগ করেন। ভোট দান শেষে
সত্যনারায়ন বাবু বলেন ,বাড়িত বসে ভোট দিতে পেরে আমার ভালই লেগেছে । দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে নাগরিকদের ভোট দানে অংশ নেওয়াটাও যে জরুরী সেইকথা এদিন সত্যনারায়ন বাবু স্মরণ করিয়ে দেন।

ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা খণ্ডঘোষ ব্লকের আধিকারিকদের কথায় জনা গিয়েছে,৮৫ বছরের বেশী বয়সী দেশের প্রবীণ নাগরিকরা যাতে বাড়িতে বসেই ভোট দিতে পারেন ,তার ব্যবস্থা করেছেন নির্বাচন কমিশন।এমন ক্ষেত্রে ইভিএম এর পরিবর্তে তাদের ভোট ’পোস্টাল ব্যালটে ’
নেওয়া হচ্ছে।গ্রীষ্মে রোদ গরমে বয়স্ক মানুষদের দীর্ঘক্ষণ ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে তার পর ভোট দেওয়া যথেষ্টই কষ্টের।সেই কথা চিন্তা করেই
নির্বাচন কমিশন এবছর বাড়িতে বসে পোস্টাল ব্যালেটে প্রবীণ ভোটারদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।সেই ব্যবস্থার সুবিধা পাইয়ে দিতেই কমিশনের লোকজন এদিন বেলায় সত্যনারায়ন বাবুর বাড়িতে পৌঁছে যান।সেই ব্যবস্থাপনায়
সত্যনারায়ন বাবু তাঁর গণতান্তিক অধিকার প্রয়োগ করেন বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন।

চিকিৎসক হিসাবেই খুদকুড়ি গ্রামের মানুষজনের কাছে পরিচিত সত্যনারায়ন সাঁই। স্বাস্থ্য বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসেবে তিনি তাঁর কর্মজীবন অতিবাহিত করেছেন বলে জানান। প্রায় ৪২ বছর আগে কর্মজীবন থেকে তিনি অবসর গ্রহন করেছে । তবে তাঁর পেনশন আজও চালু না হওয়ার আক্ষেপ তাঁকে বড়ই বেদন দেয়। নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার পর সত্যনারায়ন বাবু এদিন পেনশন না পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন । তিনি বলেন,কতদিন হয়ে গেল কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছি । আমার বয়স ১০২ বছর হয়ে গেল।এখনও আমার পেনশন চালু হল না। অথচ আমার সহকর্মীরা অবসর নেওয়ার পর তাদের পেনশন চালু হয়ে যায় । সেই
বামফ্রন্ট আমল ১৯৯২ সাল থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলেও,পেনশনের জন্যে রাজ্য বহুবার সরকারের দারস্থ হয়েছেন। কিন্তু
কাজের কাজ কিছুই হয় নি। সত্যনারায়ন বাবু আক্ষেপ প্রকাশ করেন,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজসাথী সাইকেল থেকে শুরু করে কত কিছুই দিচ্ছেন। উনি আমার পেনপনের
ব্যবস্থাটা করেদিলে আমার খুবই উপকার হত ।

See also  পূর্ব বর্ধমানের মাঝেরগ্রামে তারা মায়ের বাৎসরিক পুজো

সত্যনারায়ণ বাবুর বড় ছেলে অমল কুমার সাঁই এদিন বলেন,“আমার বাবা বয়স জনিত কারণে অণেকটাই অসুস্থ। কানেও ভালো শুনতে পান না। তবে এদিন বাড়িতে বসে ভোট দিতে পেরে বাবা খুবই আপ্লুত“।খণ্ডঘোষ নিবাসী পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন, ভোট গণতন্ত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব।শতায়ু পারকরা খণ্ডঘোষের সবথেকে প্রবীণ নাগরিক সত্যনারায়ন সাঁই এদিন বাড়িতে বসেই তাঁর ভোটাধীকার প্রয়োগ করেছেন। এটাই গণতন্তের উৎসবে সার্থকতা।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি