আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

শিক্ষকরত্ন সন্মান পাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের এক হাইমাদ্রাসা ও এক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

 

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ৪ সেপ্টেম্বর

শিক্ষকতাকে শুধুমাত্র পেশা হিসাবে ভেবে নেওয়া নয়।স্কুলের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি সাধন ঘটানো ও পড়ুয়াদের সুশিক্ষিত করে তোলার কাজে অগ্রনী ভূমিকা নেওয়া শিক্ষকরা বরবরই সমাদর পেয়ে থাকেন।পূর্ব বর্ধমান জেলার এমনই দু’জন শিক্ষক ৫ সেপ্টেম্বর
শিক্ষক দিবসের দিনে পেতে চলেছেন রাজ্যের শিক্ষক রত্ন সন্মান।ওই শিক্ষকরা হলেন খণ্ডঘোষের নিশ্চিন্তপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ উজির আলি এবং বর্ধমান শহরের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যাপীঠ প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক পলাশ চৌধুরী।এই খবরে খুশি জেলার শিক্ষক মহল।

 

 

 

বর্ধমান শহরের বাদামতলা এলাকা নিবাসী পলাশ চৌধুরী ২০০০ সালে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন।পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালে তিনি বর্ধমানের শ্রীরামকৃষ্ণ সরদা বিদ্যাপীঠ প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন।এই স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে চর্তুথ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।কোভিড অতিমারি ও লকডাউনের জন্য গত দু’বছর স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু এবছর তা বেড়েছে।বর্তমানে স্কুলে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ২০৭ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা ৭ জন।

 

 

 

পলাশ চৌধুরী রবিবার জানান,শুধু নিয়ম
মাফিক ক্লাস হওয়া আর নির্দিষ্ট সময়ে ছুটি দিয়ে দেওয়া এই ধরাপাতে তাঁর স্কুল চলে না।
কমিউনিটি সচেতনাতামূলক প্রচার,শিক্ষক বিহীন শ্রেণীতে পাঠদান,পাঠদানের জন্য বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি তাঁরা ব্যবহার করেন। এছাড়াও পড়ুয়াদের নিয়ে ডাটাবেস তৈরি ও ডাটা বানানোর ব্যাপারে তাঁরা উদ্যোগী হয়েছেন।এছাড়াও Open Souzee software এর ব্যবহার করার পাশাপাশি Response System এর ব্যবহারও স্কুলে করেন।

 

 

পলাশ বাবু আরো জানান,রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় T.C.T এর Master trainner এর দায়িত্বও তিন পালন করেছেন।এই সবকিছুই হয়তো তাঁর শিক্ষক রত্ন সন্মান পাওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচিত হয়েছে বলে পলাশ বাবু মনে করেন।

 

 

শিক্ষকরত্ন সন্মান পেতে চলা অপর শিক্ষক
মহম্মদ উজির আলির আদি বাড়ি শিউড়ির
ইটাগড়িয়া গ্রামে।বর্তমানে তিনি শহর বর্ধমানের বহিরসর্বমঙ্গলা পাড়ায় থাকেন ।
ইটাগড়িয়া গ্রামের স্কুলে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াশুনা করার পর বর্ধমান টাউন স্কুল ও পরে সিএমএস স্কুলে পড়াশুনা করেন । স্নাতক স্তরের পড়াশুনা তিনি করেন বর্ধমান রাজ কলেজে ।কল্যাণী ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে
মাষ্টার ডিগ্রী অর্জন করার পর ইটাগড়িয়া হাই স্কুলেই উজির আলির প্রথম শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন।

See also  বিকল্প চাষ-কৃষকের দুয়ারে

 

 

পরে ২০০৭ সালে তিনি খণ্ডঘোষের নিশ্চিন্তপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান
শিক্ষক পদে দায়িত্ব গ্রহন করেন । বর্তমানে
এই মাদ্রায় শিক্ষক সংখ্যা ২৩ জন এবং পড়ুয়া সংখ্যা ৭৪৪ জন ।

 

 

উজির আলির জানিয়েছেন ,শিক্ষকতাকে
শুধুমাত্র পেশা হিসাবে না ভেবে আন্তরিক ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর ব্যাপারে তাঁকে প্রেরনা জুগিয়েছেন তাঁর দাদা মহম্মদ ইয়াসিন ।বর্তমানে তিনি শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন।দাদার প্রেরণাকে কাজে
লাগিয়েই তিনি তাঁর মাদ্রাসার পড়ুয়াদের মধ্যে ইনোভেটিভ চিন্তাভাবনা জাগানো ও শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে মান উন্নয়নের ব্যাপারে প্রথম থেকেই উদ্যোগ নেন।সেই মত মাদ্রার রুপকেও সৌন্দর্যায়নে ভরিয়ে তোলেন।কো-ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসে তিনি তাঁর মাদ্রাসার পড়ুয়াদের আগ্রহী করে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।

 

 

 

এইসবের বিচারে ২০১৩ সাল থেকে নিশ্চিন্তপুর হাই মাদ্রাসা একের পর এক পুরস্কার পেতে থাকে ।ওই বছর ’নির্মল বিদ্যালয়ের’ স্বীকৃতি মেলে । ১০১৪ সালে মাদ্রাসা বোর্ড নিশ্চিন্তপুর হাই মাদ্রাসাকে মডেল মাদ্রাসার স্বীকৃতি দেয় । এরপর ২০১৮ সালে তাঁর মাদ্রাসা স্কুল পূর্ব বর্ধমান জেলার সেরা মাদ্রাসা হিসাবে বিবেচিত হয়।২০১৯ সালে ’শিশুমিত্র’ পুরস্কারও পায় তাঁর মাদ্রাসা।এমনকি ২০২১ সালে ’জামিনি’ পুরস্কারে জন্যেও তাঁর মাদ্রসা রাজ্য থেকে মনোনিত হয় ।

 

 

এছাড়াও এই বছর রাজ্য থেকে জেলার সেরা ’স্বচ্ছ’ বিদ্যালয়ের নমিনেশনও পায় তাঁর মাদ্রাসা। উজির আলির জানান ,নিশ্চিন্তপুর হাই মাদ্রাসার এই পুরস্কার প্রাপ্তির কৃতিত্ব তাঁর একার নয় । এইসব পুরস্কার ও সন্মান প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তার মাদ্রাসার সকল শিক্ষক,ছাত্র ছাত্রী,অভিভাবক ও পরিচালন কমিটিরও যথেষ্ট অবদান রয়েছে

 

 

পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সহ-সভাধীপতি
দেবু টুডু বলেন ,আমাদের জেলার দুই স্কুলে
দুই শিক্ষক পলাশ চৌধুরী ও মহম্মদ উজির আলি এই বছর শিক্ষক রত্ন সন্মান পাচ্ছেন জেনে আমরাও গর্বিত বোধ করছি । বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন সহ সর্বাঙ্গিন উন্নতি সাধনে এই দুই শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। যোগ্য শিক্ষক হিসাবেই রাজ্য সরকার তাঁদের যোগ্য সন্মানে ভূষিত করতে চলেছে।

See also  সার্কিট হাউসে সেচ বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সমন্বয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো

 

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি