আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

রায়নায় নির্দল কাঁটায় বিদ্ধ তৃণমূল -সেই সূযোগে পাশা বদলে দিতে মরিয়া সিপিএম

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

 

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ২০ জুন

তৃণমূল কংগ্রেস দল তাঁদের প্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছিল।দলের তালিকায় নাম থাকা পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ ব্লকের প্রার্থীরা এবাবের পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য মনোনয়নও জমা দিয়েছিলেন।কিন্তু দলের প্রার্থীদের একটা বড় অংশ পেলেন না তৃণমূলেন প্রতীক। উল্টে দলের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাঁরা
গোঁজ প্রার্থী হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন তাঁরাই পেলেন দলের প্রতীক । এই ঘটনার জেরে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়েছে রায়নার তৃণমূল শিবিরে । আর তা নিয়ে বেছায় উৎফুল্ল বিরোধী শিবির

 

 

 

একদা বামেদের দুর্গো হিসাবেই পরিচিত ছিল রায়না ।তৃণমূল কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই রায়নায় চরমে পৌছেছিল সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘাত । সেই সংঘাতের জেরে প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে থাকতো রায়নার নাম । রাজ্য রাজনীতিতে পালবদলের পর ধীরে ধীরে সেই দাপট বাড়তে শুরে করে ঘাস ফুলের । কিন্তু গাস ফুলের দাপট বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। যার প্রভাব এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছে রায়না ২ ব্লকের তৃণমূল শিবির ।

 

 

শাসক,বিরোধী শিবির ও ব্লক প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী , রায়না ২ ব্লকে ৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন সংখ্যা ১৪৪ টি । আস পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ২৪ টি । পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দাখিল শুরু হবাবার পর রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব এই ব্লকের সবকটি আসনে যাঁরা যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন তাঁদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেয় । সেই মত সব আসনেই তৃণমূলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। দলের এইসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল অর্থাৎ গোঁজ প্রার্থী হয়েও অনেকে মনোনয়ন জমা করেন।এরপর প্রতীক পাওয়ার নির্দিষ্ট দিন এগিয়ে আসতেই প্রতীক পাওয়া নিয়ে তৃণমূলের কোন্দলের জেরে সবকিছু ওলটপালট হতে শুরু করে ।মনোনয়ন প্রত্যাহার ও ফর্ম ’বি’ পূর্ণ করে দলীয় প্রতীক পাবার শেষদিন অর্থাৎ ঙ্গলবার ব্যাকফুটে চলে যান দলের বহু প্রার্থী। আর কেল্লাফতে করে ফেলেন নির্দলরা ।

See also  বর্ধমানের ২ নং জাতীয় সড়কের শক্তিগড়ে পথ দূর্ঘটনায় মৃত্যু এক পুলিশকর্মীর।

 

 

সিপিএম ও শাসক দলের নেতৃত্বের কাছ থেকে এদিন রাত পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রায়না ২ ব্লকে তৃণমূলের হয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন এরকম ৮০ টি বুথের প্রার্থীরা এখন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী বনে গিয়েছেন । চারটি বুথে আবার তৃণমূলের কোন প্রার্থীই নেই । এই চারটি বুথে লড়াই হবে সিপিএম ও বিজেপির মধ্যে। এছাড়াও কাইতি শ্রীরামপুর এলাকার একটি বুথে তৃণমূল প্রাথী সুব্রত ঘোষ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এই বুথে সিপিএম প্রাথী বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জিতে গিয়েছেন। আর তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এমন উল্লেখযোগ তিনজন হলেন,ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অসীম পাল ,সহ- সভাপতি অরুন চৌধুরী এবং যুব সভাপতি জুলফিকার আলী খাঁন। এঁনারা ক্ষোভে মনোনয়ন প্রত্যাহার করো নেওয়ায় এই তিন আসনে নির্দল হয়ে যাঁরা মনোনয় দাখিল করেছিলেন তাঁরা তৃণমূলের প্রতীক পেয়ে গিয়েছেন। এইসব দেখে তৃণমূলের সাধারণ কর্মী ও সমর্থকরা মনে করছেন,পঞ্চায়েত ভোটে রায়না
২ ব্লকে বড় ধাক্কা খেতে চলেছে তৃণমূল

 

 

এমনটা হওয়ার জন্য রায়না ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সহ অন্য নেতারা রায়নার বিধায়ক শম্পা ধারাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অসীম পাল বলেন,“দলের নির্দিষ্ট করে দেওয়া প্রার্থীরা বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।তা জেনেও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনেকে নির্দল হয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন। ওইসব দুর্নীতিবাজ নির্দলকেই দলের প্রতীক দেওয়ার ব্যবস্থা করেন আমাদের
বিধায়িকা শম্পা ধারা। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কি করে এটা সম্ভব করা হল , সেটাই আশ্চর্য্যের“।

 

 

আরও ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মুন্সি হাসিবুর রহমান বলেন,“তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক বন্দোপাধ্যায় তাঁর নবজোয়ার কর্মসূচি থেকেই ঘোষণা করেছিলেন, যোগ্য ব্যক্তিদের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করে দল তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ করবে। সেইমত দল আমাদের ব্লকের যোগ্য প্রাথীদের নামের তালিকা পাঠায় ।সেই তালিকা অনুযায়ী দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করেদেন ।তারই মধ্যে দলের ওইসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিগ্রস্ত বেশকিছু তোলাবাজ মনোনয়ন দাখিল করে। এখন বিধায়ক শম্পা ধারার কথায় দলের নির্দিষ্ট করেদেওয়া প্রার্থীদের পরিবর্তে দুর্নীতিবাজদের দলের প্রতীক দিয়ে দেওয়া হল। আর দলের প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী যাঁরা মনোনয়ন দখিল করে ছিলেন তাঁদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হল। এটা মনে নেওয়া সম্ভব নয়“ ।

See also  যাদবপুর কাণ্ডের মাঝেই স্কুলে ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার নিয়ে হুলস্থুল পূর্বস্থলীতে

 

 

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া পাবার জন্য রায়নার বিধায়িকা শম্পা ধারার ফোন নম্বারে একাধীকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,
দলের ঘোষিত প্রার্থী তালিকার মধ্যেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। অনেক সিটে দলের ঘোষিত প্রার্থী তালিকার বাইরে আরো ভালো প্রার্থী পাওয়া গিয়েছে।দলীয় ভাবে তাঁদেরই দলীয় প্রাথী হিসাবে প্রতীক দেওয়া হয়েছে ।তা নিয়ে অসন্তোষের কিছু নেই বলো জেলা সভাপতি মন্তব্য করেছেন।

 

তৃণমূলর এই কোন্দলের বিষয়টি জানার পর জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,“যেমন দল তেমন তার প্রার্থী তালিকা । যে দলে শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই,সেই দলের প্রার্থীও অদল বদল হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক ।স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোকেদের তৃণমূলে কোন স্থান নেই । তোলাবাজরাই তৃণমূলের সম্পদ। তাই তোলাবাজরই তো তৃণমূলের প্রার্থী হবে“। আর সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মির্জা আখতার আলী বলেন,“আসলে সবটাই বখরার ব্যাপার । তৃণমূলের ভাণ্ডারে যে যত বখরা দেবে তার গুরুত্ব তত বেশী। ভালো বকরা দেবার লোক পেয়েছে ,তাই তাকেই তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছে“।

 

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি