আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

সরাসরি জবকার্ড শ্রমিক ও উপভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে ১০০ দিনের কাজ আর আবাস যোজনার হালহকিকত জানলেন কেন্দ্রীয় দল

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১৭ জানুয়ারি

একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনা এই দুই প্রকল্পের কাজেই শীর্ষে রয়েছে বাংলা। তাহলেও রেহাই নেই।এই দুই প্রকল্পের কাজ সরোজমিনে খতিয়ে দেখতে দিল্লি থেকে রাজ্যে হাজির হয়েছেন কেন্দ্রীয় দল।তার মধ্যে একটি দলে থাকা আধিকারিকরা সোমবার থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় কাজ শুরু করে দিয়েছেন।এদিন কেন্দ্রীয় দলের আধিকারিকরা প্রথম জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলার সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে জেলাশাসকের দফতর থেকে কেন্দ্রীয় দল

 

ভার্চুয়াল বৈঠক করেন যে যে ব্লকে তাঁরা যাবেন সেইসব ব্লকের বিডিওদের সঙ্গে । পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ, আউসগ্রাম ২,গলসি ২ ও মঙ্গলকোট ব্লকের বেশকিছু পঞ্চায়েতে গিয়ে তারা দুই প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন । সেই মত এদিন দুপুরেই তিন সদস্যের কেন্দ্রীয় দল খণ্ডঘোষ ব্লকের  গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে পৌছে যান দুই প্রকল্পের কাজ সরোজমিনে দেখতে ।

 

কেন্দ্রীয় দল আসার খবর আগেথেকে জানানো থাকায় এদিন পঞ্চায়েতের সকল আধিকারিকদের পাশাপাশি জন প্রতিনিধিরাও পঞ্চায়েত অফিসে উপস্থিত থাকেন। কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজের যাবতীয় নথিপত্র পঞ্চায়েতে বসে খতিয়ে দেখা শুরু করে । তারই মধ্যে তারা নাম করে করে কয়েকন জবকার্ড শ্রমিককে পঞ্চায়েত অফিসে ডেকে আনতে বলেন। ওই জবকার্ড শ্রমিকরা পঞ্চায়েতে পৌছালে তাদের জনপ্রতিনিধিদের সামনে বসিয়ে কেন্দ্রের আধিকারিকরা জানতে চান ১০০ দিনের কাজ ঠিকঠাক পান ? কাজ পেতে কোন সমস্যা হয় না তো ? জব কার্ড শ্রমিকের উত্তর নথিভুক্ত করেন আধিকারিকরা ।আবাস যোজনার কোন কোন উপভোক্তার বাড়ি তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে তার তথ্যও পঞ্চায়েত থেকে নেন কেন্দ্রের আধিকারিকরা।এরপর তারা পঞ্চায়েত অফিস থেকে বেরিয়ে স্থানীয় লোদনা, কাপশিট ও শ্যামনগর এই তিনটি গ্রামে ঘোরেন । এই সব গ্রামে ১০০ দিনের প্রকল্পে হওয়া রাস্তা , বৃক্ষ রোপন ও বনসৃজনের কাজ স্বচক্ষো দেখেন ।

See also  মাধ্যমিকে ৬০৫ নম্বর পেয়েও ভর্তি হওয়ার ফর্ম মিললোনা পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না স্বামী ভোলানন্দ বিদ্যায়তনে।

 

এইসব গ্রামের যেসব আবাস যোজনার উপভোক্তার বাড়ি অসম্পূর্ণ রয়েছে তাদের কাছে যান কেন্দ্রের আধিকারিকরা। সরকারি গাইড লাইন মেনে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে কিনা এবং কেন বাড়ি তৈরির কাজ
অসম্পূর্ণ রয়েছে সেই বিষয়েও উপভোক্তাদের কাছে জানতে চান আধিকারকরা।ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল একই রকম ভাবে খণ্ডঘোষ ও বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতেও হাজির হবেন দুই প্রকল্পের কাজ সরোজমিনেখতিয়ে দেখতে ।

 

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই নয় । কেন্দ্রীয় দল রাজ্যের ১৬ টি জেলায় আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখবে ।জেলায় হওয়া এই দুই প্রকল্পের কাজ নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদন জেলা প্রশাসনের তরফে এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে । সেখানে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভূমিকা ও স্থান উল্লেখ করা রয়েছে ।

 

পাশাপাশি আবাস যোজনাতেও জেলার ব্লক ও পঞ্চায়েত গুলির অগ্রগতী নিয়ে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে তাও কেন্দ্রীয় দলের আধিকারিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় । তাতে উল্লেখ থাকে জেলায় সার্বিকভাবে আবাস যোজনা প্রকল্পে ৯০ শতাংশ বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে । বাকি বাড়ি গুলি তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল জেশা প্রশাসনকে জানিয়েছে,লোদনা ছাড়াও খণ্ডঘোষ ব্লকের খণ্ডঘোষ ও বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতে এই দুই প্রকল্পের কাজ তারা সরজোমিনে খতিয়ে দেখবেন । এছাড়াও আউসগ্রাম ২ ব্লকের অমরপুর , দেবশালা, এড়াল – গলসি ২ব্লকের আদরা,সাটিনন্দী ও মঙ্গলকোট ব্লকের সদর পঞ্চায়েত ,নিগন এবং ক্ষীরগ্রামে হওয়া কাজ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যাবেন ।

 

জেলা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে রবিবার পর্যন্ত জেলায় ১ কোটি ৯৬ লক্ষ ৮১ হাজার ৯২৯ শ্রমদীবস তৈরি হয়েছে । তাতে ৯ লক্ষ ১ হাজার ৩০ জন কাজ পেয়েছেন । ১০০ দিনের প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৫৭১ কোটি টাকা । জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে,’ পাঁচ দিন ধরে ব্লকের পঞ্চায়তে পঞ্চায়েতে ঘুরে সবিস্তার খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল ফের বৈঠকে বসবেন । প্রতিনিধিরা কি দেখলেন তা বৈঠকে জানাবেন । কোন অনিয়ম ধরা পড়লে কি করা উচিৎ তার পরামর্শ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা দেবেন“ । জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র আবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসার বিষয়টি নিয়ে অন্য ব্যক্ষা দিচ্ছেন ।

See also  সব খেলার সেরা বাঙালির ফুটবল", এই বাক্যটি প্রমাণ করে দেয় যুব সমাজের ওপর ফুটবলের প্রভাব

 

তাঁদের বক্তব্য,“বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ কয়েকদিন আগে দাবি করেন, এ রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী ’আবাস যোজনার’ দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তথ্য দিয়ে এসেছেন। আর ১০০ দিনের কাজে সব থেকে বেশি টাকা পশ্চিমবঙ্গ পেলেও দুর্নীতির অজস্র অভিযোগ ছিল দিলীপ বাবুর “। জেলা বিজেপি নেতাদের দাবি দিলীপ ঘোষের আনা সে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই সম্ভবত কেন্দ্রের বিশেষ দল জেলায় এসেছে। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধীপতি শম্পা ধারা বলেন , যাঁদের পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে কোন জ্ঞান নেই তাঁরা এমন অবান্তর কথাই বলবেন । সভাধীপতি জানান প্রতিবছরই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল আসে।এটা নতুন কিছু নয়।পাশাপাশি তিনি এও বলেন, কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা লোদনা পঞ্চায়েতের কাজ দেখে খুশী হয়েছেন।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি