প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান

চার পায়ের জীব গরু জন্মেছে ছয়টি পা নিয়ে। আর তা নিয়েই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার শেরপুর গ্রামে।
তবে অবশ্য ওই জীবটির প্রতি ভালবাসা ও ভক্তিতে কোন খামতি পড়ে নি। কারণ তিনি যে গো মাতা।তাই ছয় পায়ের শিশু গোমাতাই এখন শেরপুর গ্রামের বাসিন্দাদের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে।তাকে দেখতে প্রতিদিন বহু মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন গো পালক মনোজ সিং এর বাড়িতে ।
শেরপুর গ্রামে সপরিবার বসবাস করেন মনোজ সিং।তাঁদের পরিবারের সকলেই কৃষিজীবী। বাড়িতে গরু প্রতিপালনও করেন।
মনোজ বাবু জানান ,’গত মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁদের বাড়ির গাভিটি একটি বছুরের
জন্মদেয়।জন্মের কিছু সময় বাদ বাছুরটি
উঠে দাঁড়াতেই তাঁরা দেখেন বাছুরটি চারটে পায়ের বদলে ছয়টি পা নিয়ে জন্মেছে।তার সামনের দুটি পায়ের উপর অংশে আরো দুটি পা রয়েছে।তবে পিছনের দিকে দুটি পা-ই রয়েছে বলে মনোজ জানান।একই সঙ্গে তিনি
বলেন ,বাছুরটির এমন শারীরিক গঠন দেখে তিনি দুশ্চিন্তায় পড়ে যান ।
বাছুরটির কি হবে ,
বাছুরটিকে বাঁচানো যাবে কি যাবে না ,এই ভেবে কোন কুলকিনারা করে উঠতে পারছিলেন না।কিন্তু শেষমেশ যদিও কোন আর অঘটন ঘটেনি। তিন দিন হয়েগেল বাছুরটি চনমনে রয়েছে। হাঁটা চলাও করছে। কোন অসুবিধা হচ্ছে না।মনোজ সিং এও জানান ,’জিন গত’ পরিবর্তনের কারণে বাছুরটি এমন শারীরিক গঠন নিয়ে জন্মেছে বলে তিনি পশু চিকিৎসকের কাছে গিয়ে জানতে পারেন।
এদিকে মনোজ সিং বাছুটিকে নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করলেন তাঁর পরিবারের মহিলারা
অবশ্য এ নিয়ে চিন্তার কিছু দেখছেন না । বরং
তাঁরা মনে করছেন,’এমন বাছুর হল ভগবানের আশীর্বাদ পুষ্ট । মোটা টাকার বিনিময়ে এই বাছুরটি কেউ কিনতে চাইলেও তা কোনভাবেই
হতে দিতে নারাজ সিং পরিবারের মহিলারা ।
তাঁরা এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভগবানের
আশীর্বাদ পুষ্ট বাছুরের সেবাযত্ন ও লালন পালন তাঁরাই করবেন’।পরিবারের মহিলাদের
এই ধারণা ও বিশ্বাসের খবর ইতিমধেই ঝড়ের গতীতে ছড়িয়ে পড়েছে শেরপুর সহ পাশ পাশের গ্রামেও।তারপর থেকেই ওই বাছুরটিকে দেখতে প্রতিদিন বহু মানুষ সিং বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন । তাঁদের কেউ দূরে দাঁড়িয়ে হাত তুলে বাছুরটিকে প্রণান করছেন , আবার কেউ কেউ বাছুরটির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ প্রার্থনা করছেন ।

জেলার পশু চিকিৎসক সনাতন ভুঁই এই প্রসঙ্গে বলেন,জিন গত সমস্যার কারণেও
এমনটা হয়ে থাকে। এতে বাছুরটিকে নিয়ে
ভয়ের কিছু নেই । বাছুরটি যেহেতু চনমনে রয়েছে এবং ভালোভাবে হাঁটাচলা করতে পারছে তাই মনেহচ্ছে বাছুরটি বিপদ মুক্ত । সার্জারি করে বাছুরটির অতিরিক্ত দুটি পা বাদ দিতে যাওয়াটাও বড় ঝুঁকি সাপেক্ষ হবে বলে সনাতন বাবু মন্তব্য করেন।