রোড় জ্যাম–একটা জলন্তসমস্যা,SH-7
নীলঝড়
ঘুম থেকে উঠে কাজকর্মে যেতে তোড়জোড় শুরু করার আগে যেটা আমাদের দ: দামোদর বাসিদের মাথা-ব্যাথার সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোড়-জ্যাম;প্রথম চিন্তা আজ আবার সময়ে কর্মস্থলে যেতে পারবে তো পাঁচ-ছয় হাজার টাকা মাস মাইনের কর্মচারী!এটা শুধু এক-আদ্ দিন নয়,নিত্তনৈমিত্তক ঘটনা; মালিক রোজ রোজ দেরি মানবেন কেন; সুতরাং কাজের লোক পাল্টাতে আর কতক্ষন!
অফিস যাত্রীদেরো তাই;রোড়-জ্যামের জন্যে তো কাজ ফেলে রাখলে চলবে না;এখন আবার বায়োমেট্রিক উপস্থিতি:টা-৫টা-১০টা; সঠিক সময়ে অফিসে পোঁছাতে না পারলে নিজেকে ই অপরাধী লাগে সারা দিন। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ জন তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজে এখানে আসেন; টেবিলে অফিসার কে না দেখতে পেলে স্বাভাবিকভাবে মুখে আসে– আসিমাইনে পাই সরকারি কর্মচারী ।কত লোক টিটকারি দেয় আমাদের -হোক না দেরি মাইনে তো আর কাটা যাচ্ছেনা ।
শ্মশান যাত্রার আগে কিংবা যাদের সে যাত্রার সময় হয়নি তাদেরকে লাইন জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে শেষ যাত্রাতেই চলে যেতে হচ্ছে ।এই জলজ্যান্ত সমস্যাটা আমাদের বর্ধমান আরামবাগ sh7 রোডের ,সঙ্গে বাঁকুড়া বর্ধমান রোড ভায়া সোনামুখী; আমাদের ছোটবেলায় sh7 সিঙ্গেল লাইন রোড ছিল, আমাদের যৌবনে ডবল হল; কিন্তু যেটা এখনই হওয়া দরকার ফোরলেন- তা আমাদের বার্ধক্যেও সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। সমস্ত রকম মালবাহী ট্রাক বালির লরি আরামবাগ- বর্ধমান এবং বাঁকুড়া -বর্ধমান রোডে যাতায়াত করছে।
কোন টোল ট্যাক্স না থাকায় এই রোডে ট্রাকের ভিড় আরো বেড়ে চলেছে। গুরুতর লাইন জ্যাম বর্ধমান টাউন থেকে প্রধানত বাঁকুড়া রোড মোড়পর্যন্ত ;বর্ধমান টাউনথেকে বাঁকুড়া রোড মোড় পর্যন্ত 10 -12 মিনিটের পথ বেশিরভাগ সময়ই এক-দেড় ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে; খুড়োর কল এখনো পর্যন্ত আবিষ্কার হলো না ;পূর্ত দপ্তর যে একেবারেই চুপ করে বসে আছে সেটা অবশ্য অতি বড় নিন্দুকে ও বলতে পারবেনা;
বিগত 10 বছরে দেখেছি ফোরলেন রোড় বানানোর জন্য পূর্ত দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। ফুটপাতের দোকানদারদের নিয়ে কিংবা যাদের বাড়ি ভাঙ্গা যাবে তাদের নিয়ে ভিডিও অফিসে বেশ কয়েকবার সভা হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের সন্তুষ্ট করা যায়নি ।সুতরাং ফল যা হবার তাই হল- অশ্ব ডিম্ব ;মানুষের ক্ষতি করে তো কোন প্রগতি হয় না ;সুতরাং গাড়ির গতি বেগতিক করতে হলো ;রাস্তা সম্প্রসারণ বন্ধ হলো ।
এখন শুনছি দ্বিতীয় বিকল্প রাস্তারভাবনা চলছে এবং সঙ্গে দ্বিতীয় সেতু,কৃষক; সেতুর পাশে হবার সম্ভাবনা এটা অবশ্য অনেক বড় আশার কথা ;সেটা আমাদের মত পঞ্চাশোর্ধরা দেখে যেতে পারব কি !!
সোজা কথায় আমরা আমাদের কর্মস্থলে চিকিৎসালয় সময়ে পৌঁছানোর জন্য তীর্থের কাক হয়েই রইলাম ।আমাদের পূর্ত দপ্তর এবং তাকে যারা নিয়ন্ত্রণ করেন আমাদের সেই প্রশাসকগণ কে সনির্বন্ধ অনুরোধ আপনারা আর চোখ বন্ধ রাখবেন না ।বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্র স্বার্থকে প্রয়োজন হলে এড়িয়ে যেতেই হবে নাহলে দিনের পর দিন আমাদের প্রশাসনের উদ্দেশ্যে গালি দেয়া আর কপালে হাত চাপড়ানো ছাড়া কিছুই করার থাকবেনা ।আর নেতৃত্বের প্রতি একটা প্রবল বিতৃষ্ণা জমে উঠছে মানুষের বুকে।