আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

পুলিশ পরিচয় দিয়ে পুলিশে চাকরি করে দেবার নামে প্রতারণা । রায়নায় গ্রেফতার চার

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now
প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ):-
পুলিশ পরিচয় দিয়েই চলছিল বেকার ছেলেদের পুলিশে চাকরি করে দেবার নামে আর্থিক প্রতারণা।এক প্রতারিত যুবকের দায়ের করা অভিযোগে ওই প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস করলো পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার পুলিশ। অভিযান চালিয়ে প্রতারণা চক্রের দুই পাণ্ডা সহ চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ।এই ঘটনা সামনে আসার পরেই নড়ে চড়ে বসেছেন জেলা পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা । পুলিশের কাছে প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে প্রতারিতরা ।
পুলিশ জানাগিয়েছে ,ধৃতরা হল রাজেন হাজরা,নাজেম মল্লিক , সত্যজিৎ বিট্টার ও শেখ জানারুল ওরফে পিন্টু ।রাজেন ও সত্যজিৎতের বাড়ি বর্ধমান থানার কান্টিয়া এলাকায় । জামালপুর থানার জানকুলি গ্রামে বাড়ি নাজেমের । জানারুলের বাড়ি বর্ধমান শহরের বাথানপুরে । পুলিশ জানিয়েছে , প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা রাজেন হাজরা । তার প্রধান দুই সাগরেদ হল নাজেম ও সত্যজিৎ । অপর ধৃত জানারুল পেশায় গাড়ি চালক ।সোমবার রাজেন যে দামি গাড়িটিতে চড়ে প্রতারণা কাজে বেরিয়েছিল সেই গাড়ির চালক জানারুল ।
পুলিশ দাবি করেছে প্রতারকদের কাছথেকে উদ্ধার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ভূয়ো পরিচয় পত্র ,নিয়োগপত্র ,আবেদনপত্র ,একাধিক ব্যাঙ্কের চেকবই ‘ডেবিট কার্ড ও স্ট্যাম্প। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে প্রতারিতর মাধ্যমিকের অরিজিনাল অ্যাডমিট ,মার্কশিট ও সার্টি ফিকেট ।যে চারচাকা গাড়িটিতে চড়ে রাজেন প্রতারণার কাজে বের হত সেই দামি গাড়িটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে ।
তদন্তে নেমে পুলিশ কর্তারা জানতে পেরেছেন,
প্রতারকরা শুধুমাত্র মাত্র যে রায়না থানার ভগবতীপুরের বাপ্পাদিত্য পোড়েলের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে এমনটা নয় । কনস্টেবল ও হোমগার্ড পদে চাকরি করেদেবার প্রতিশ্রুতি ধৃত প্রতারকরা রায়না সহ জেলার বিভিন্ন জায়গার বেকার যুবকদের কাছথেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ।তারমধ্যে রায়না থানা এলাকার ৬-৭ জনের কাছ থেকে প্রতারকরা প্রায় ২৪ -২৫ লক্ষ টাকা আদায় করেছে ।
সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজুকরে রায়না থানার পুলিশ মঙ্গলবার চার ধৃতকেই পেশ করে বর্ধমান আদালতে । বেকারদের কাছথেকে হাতিয়ে নেওয়া নথি ও টাকা উদ্ধার সহ প্রতারণা চক্রের বাকি সদস্যদের হদিশ পেতে তদন্তকারী অফিসার রাজেন হাজরাকে ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান । ভারপ্রপ্ত সিজেএম রাজরষী মুখোপাধ্যায় রাজেনের ৩ দিনের পুলিশ হেপাজত ও বাকিদের বিচার বিভাগীয় হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।

প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে প্রতাড়নার শিকার হয়েছিলেন রায়না ভগবতীপুরের যুবক বাপ্পাদিত্য পোড়েল । লিখিত অভিযোগে ওই যুবক পুলিশকে জানায় কিছুদিন আগে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে রাজেন হাজরা তার সঙ্গে পরিচয় করে। বহু বেকারকে পুলিসে চাকরি করে দিয়েছে বলে বাপ্পাদিত্যকে জানায় রাজেন।পাশাপাশি বাপ্পাদিত্যকে পুলিশে চাকরি করে দেওয়ার টোপ দিয়ে রাজেন ৫ লক্ষ টাকা লাগবে বলে জানিয়েদেয় ।
এই কথা বিশ্বাস করে গত ২৫ জুন বাপ্পাদিত্য বর্ধমানে গিয়ে রাজেনের হাতে ৩ লক্ষ টাকা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিপত্র তুলে দেয় । বাপ্পাদিত্য বলে, এরপর দিনকয়েক বাদেই তাঁর ই-মেলে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য অ্যাডমিট কার্ড আসে । তারপরই বাকি ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য তাকে চাপ দেওয়া শুরু করে রাজেন ও তার সাগরেদরা । খোঁজখবর নিয়ে বাপ্পাদিত্য জানতে পারেন, কনস্টেবল পদে নিয়োগ এখন হচ্ছেনা। যে অ্যাডমিট কার্ডটি তাকে পাঠানো হয়েছে সেটি জাল। এরপরেই সোমবার রায়না থানায় সবিস্তার জানিয়ে বাপ্পাদিত্য পুলিশের সঙ্গেই রাজেনকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতেন ।
বাকি টাকা নেওয়ার জন্য সোমবার বিকালে রাজেনকে বর্ধমানে আসার জন্য বলে বাপ্পাদিত্য ।টোপ গিলে নিয়ে বর্ধমান শহরের আলিশা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গাড়িতে চেপে রাজেন, সত্যজিৎ ও জানারুল আসে। সেখানে আগেভাগেই পুলিশ ওৎ পেতে বসেছিল ।ওই তিনজনকেই পুলিশ ধরে ফেলে।থানায় জেরায় প্রতারণার কথা স্বীকার করে নেয় রাজেন ও তার দুই সাগরেদ । একই সঙ্গে তারা পুলিশকে জানায় তাদের সঙ্গে নাজেমও জড়িত রয়েছে ।এরপরই পুলিশ জামালপুরের জানকুলি গ্রাম থেকে নাজেমকে ধরে থানায় নিয়ে যায় । পুলিশের দাবি জেরার ধৃতরা প্রতারণায় জড়িত থাকার কথা কবুল করেছে ।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন ,“প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা রাজেন হাজরা । সে নিজেকে হোমগার্ডের একজন অফিসার হিসাবে পরিচয় দিত । সেই পুলিশে চাকরি করেদেবার কথা বলে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিল ।এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত রয়েছে তা তদন্তকরে দেখা হচ্ছে । ”
See also  আবারও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এলো পূর্ব বর্ধমানে।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি