কৃষকসেতু, কৃষ্ণ সাহা , গলসি :- পূর্ব বর্ধমানের গলসির শিল্ল্যাঘাট এলাকায় দামোদর নদের উপর নির্মিত একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া এবং লাগাতার বৃষ্টির কারণে আকস্মিকভাবে ভেঙে পড়েছে। বুধবার সকালে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি ঘটে, যার ফলে সেতুর মধ্যবর্তী অংশ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে তীব্র জলের তোড়ে নদীতে ভেসে যায়। এই ঘটনায় শুধু স্থানীয় বাসিন্দারাই নন, এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও ভীষণভাবে প্রভাবিত হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত:
জানা গেছে, দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে দামোদর নদের জলস্তর অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যায়। নদীর প্রবল স্রোতের চাপ সামলাতে না পেরেই দুর্বল অস্থায়ী কাঠামোর সেতুটি ভেঙে পড়ে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই সকালে সেতুর মাঝের অংশটি বিকট শব্দে ভেঙে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে যায়।
চরম ভোগান্তিতে আটকে পড়া লরি ও সাধারণ মানুষ:
সেতু ভেঙে যাওয়ায় নদীর ওপারে বালি লোড করতে যাওয়া কয়েকটি বালির লরি মাঝপথেই আটকা পড়ে গেছে। এই লরিগুলোর চালকরা নিরুপায় অবস্থায় সেতুর ভাঙা অংশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছানো এখন অনিশ্চিত। এর পাশাপাশি, এই অস্থায়ী সেতুটি ছিল শিল্ল্যাঘাট এলাকার দুই পাড়ের মানুষের দৈনন্দিন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন বহু মানুষ, শ্রমিক এবং ছোট যানবাহন এই সেতু ব্যবহার করে নদী পারাপার করতেন। সেতু ভেঙে যাওয়ায় এখন কার্যত দু’পারের মধ্যে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যা স্থানীয় জনজীবনে এক চরম বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। স্কুল-কলেজে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থী, কর্মস্থলে যাওয়া মানুষ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পরিবহনেও ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা:
বর্তমানে নদী পারাপারের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয়দের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে এলাকার অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও বেশি ব্যাহত হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে একটি স্থায়ী বা অন্তত একটি টেকসই অস্থায়ী সেতুর ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী জনসাধারণ।