রাঢ় বাংলার মাটির সুরের গানে সংগীত প্রেমীদের মুগ্ধ করেন ভাদু ও টুসু গানের শিল্পীরা ।পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও ভাতার থানার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে রয়েছে ভাদু, টুটু গানের শিল্পীদের আস্তানা ।এখানকার অজয় নদের তীরবর্তী সেনপাহাড়ির জঙ্গল লাগোয়া বনভূমি ঘেরা গ্রাম ছাড়াও কুনুর নদীর তীরের গ্রামের আস্তায় ভাদু, টুসু সহ বিভিন্ন লোক গানের সুর বাঁধেন শিল্পীরা।মূলত মহিলা মহলের শিল্পীরাই এই গানের চর্চায় বেশী এগিয়ে রয়েছেন ।
লোক শিল্পীদের মধ্যে এখানকার কেউ কেউ রাজ্য সরকারের শিল্পী পরিচয় পত্রও পেয়েছেন । ভাদ্র মাস থেকে শুরু হয় গানের প্রস্তুতি । তারপর বৈশাখ মাস থেকে শুরু হয় সংগীত পরিবেশন । পৌষ সংক্রান্তির মকরে টুসু পরব মাতোয়ারা হয় এখানকার লোক শিল্পীদের লোকগানে । মূলত গান গেয়েই তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করা।কিন্তু সেই পথ এখন বন্ধ । লকডাউনে লোক শিল্পীরা চরম বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। তাঁরা ক্ষেত খামারের কাজেও যেতে পারছেন না । ফলে লোক শিল্পী পরিবারে দেখা দিয়েছে অভাব ।
আউশগ্রাম ২ ব্লকের রামনগর গ্রামের উল্লাসপুরের মালতি মেটে, ভাদু মেটে, শ্যামলি মেটে প্রমুখ শিল্পীরা সোমবার জানালেন,তাঁরা শিল্পী ভাতা পান না ।লক ডাউনের জন্য খেতের কাজও নেই। সে কারণে এখন নিদারুণ কষ্টের মধ্যেই তাঁদের দিন কাটছে ।”
অন্যদিকে অমরপুর, শ্রী চন্দ্রপুর, মঙ্গলপুর গ্রাম গুলিতে কয়েক হাজার লোক শিল্পী বসবাস করেন । মঙ্গলকোট, কাটোয়া, কেতুগ্রামেও রয়েছে এমন প্রচুর লোক শিল্পীরা।এখন তাদের ঘরে ঘরেও দেখা দিয়েছে অভাব। এই শিল্পীরা জানালেন
,সরকার তাঁদের পাশে না দাঁড়ালে আগামী দিনে দুর্বিসহ পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ।
এবিষয়ে জেলার বিশিষ্ট লোক গবেষক রাধামাধব মণ্ডল জানান, “এই সব লোক শিল্পীদের কোনো তালিকা নেই সরকারের কাছে। এরজন্য দায়ী জেলার তথ্য সংস্কৃতি কেন্দ্র। ফলে শিল্পীদের, সে ভাবে চাইলেও পাশে দাঁড়াতে পারবে না সরকার। তবে পঞ্চায়েত এলাকার কিছু মানুষ, সমাজ কর্মী ভাদু, টুসু, হাবু, বাউল ও বিভিন্ন লোক শিল্পীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। পুলিশও চাল, ডাল দিয়ে সাহায্য করছে। তা দিয়েই এখন তাদের পেট চলছে । ।”
আউশগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, “আমরা ওই সকল লোক শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। অসহায় ভাবে দিন কাটানো লোক শিল্পীদের কোনো তালিকা থাকলে আপনারা জানান। আমি ওনাদের পাশে দাঁড়াবো।