ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া বাবার দেহাংশ ছেলেকে দিয়ে রাস্তা থেকে তোলানো করালো পুলিশ। হাড়হিম করা সেই দৃশ্য চাক্ষুষ করে সোমবার রাতে কার্যত শিউরে ওঠেন পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের বাসিন্দারা। মৃতর ছেলে সুূদীপ দাস মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানান,“রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা আমার বাবার দেহের টুকরো টুকরো অংশ আমাকেই তুলতে বলেছিল পুলিশ। তাই আমি আমার বাবার দেহাংশ রাস্তা থেকে তুলে দিই“। পুলিশের এমন অমানবিক ভূমিকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। ঘটনার কথা জেনে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে আইনজীবীরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ৮ ট নাগাদ ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে গুসকরা বাস টার্মিনার্সের কাছে।
একটি ডাম্পার পিষে দেয় বছর ৬০ বয়সী লটারি টিকিট প্রদীপ কূমার দাস কে। পথেই দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়ে মৃত্যু হয় গুসকরা পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শিরিষতলার বাসিন্দা প্রদীপ দাসের । জানা গিয়েছ,’প্রদীপ কুমার দাসের কোন দোকান ছিল না। তিনি গুসকরা শহরে ঘুরে ঘুরে লটারি টিকিট বিক্রি করতেন।সারাদিনে তিনবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুর ঘুরে তিনি টিকিট বিক্রি করতেন।

স্থানীয়দের কথা অনুযায়ী ,দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় মৃত প্রদীপ দাসের ছেলে সুদীপ দাস।একই সময়ে দুর্ঘটনাস্থলে যায় গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। সুদীপ দাস জানান,“ঝড় বৃষ্টির পর তাঁর বাবা রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। ওই সময়ে পিছন দিক থেকে আসা একটি ডাম্পার তাঁর বাবাকে ধাক্কা মারে। তাঁর বাবা ডাম্পারের নীচে পড়ে গেলে বাবার শরীরের উপর দিয়ে ডাম্পারের চাকা চলে যায়। ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে তাঁর বাবার দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। যে
দেহাংশ পুলিশের কথা মেনে তাঁকেই রাস্তা থেকে তুলতে হয়। এই বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,“খোঁজ নিয়ে দেখছি কি হয়েছে।“ যদিও এমন ঘটনার কথা জেনে যেমন স্তম্ভিত তেমনই ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের সিনিয়ার আইনজীবী রবিশংকর চট্টোপাধ্যায়।তিনি বলেন ,আইনত পুলিশ মৃতর শোকার্ত ছেলেকে দিয়ে এই কাজ করাতে পারে না। এটা পুলিশের নির্মমতা,মানবাধিকারেরও পরিপন্থী“ । জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,“তৃণমূলের রাজত্বে পুলিশ যে বিবেক ,মনুষ্যত্ববোধএসব খুইয়ে ফেলেছে ,তার বড় প্রমাণ সোমবার রাতের গুসকরার ঘটনা“
