ঢাকির ঐতিহ্য পরিচিতি
দুর্গাপূজা আসতে আর কিছুদিন বাকি। রায়নার সেহারা অঞ্চলের বেঁন্দুয়া গ্রামে ঢাকের আওয়াজ ভেসে আসছে, যেন এক অসাধারণ উৎসবের আবহ। এই প্রবন্ধে আমরা জানব, বেঁন্দুয়া গ্রামে ঢাকিরা কিভাবে তাদের মহড়া এবং প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন এবং এই ঐতিহ্যের গুরুত্ব।

দুর্গাপূজায় ঢাকির ভূমিকা
দুর্গাপূজা উৎসব ঢাকির বিট ছাড়া অসম্পূর্ণ। বেঁন্দুয়া গ্রামের কৃষ্ণ দাস, উত্তম দাস, দিলিপ দাস এবং গোপাল দাসের মতো ঢাকিরা উৎসবের মেজাজ তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বছরের অন্য সময় তারা দিনমজুর অথবা অটোরিকশা চালক হিসেবে কাজ করেন, কিন্তু উৎসবের সময় তাদের মনোযোগ পুরোপুরি ঢাকের প্র্যাকটিসে নিবদ্ধ থাকে।
বেঁন্দুয়া গ্রামে মহড়া এবং প্রস্তুতি
দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে, ঢাকিরা এক মাস আগে থেকেই মহড়া শুরু করেন। গ্রামজুড়ে ঢাকের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় এবং তাঁরা বিভিন্ন বিট এবং ছন্দ অনুশীলন করেন। নতুন প্রজন্মের যুবকরাও প্রশিক্ষিত হন, যাতে তারা ঐতিহ্যবাহী বিট সঠিকভাবে বাজাতে পারেন।
ঢাকির জীবন: উৎসবের বাইরে
যদিও ঢাকিরা উৎসবের সময় তাদের ভূমিকা জন্য পরিচিত, তাদের জীবন উৎসবের বাইরে কিছুটা ভিন্ন। কৃষ্ণ দাস উল্লেখ করেন যে এই পেশা থেকে তেমন বেশি আয় হয় না। তবুও, ঐতিহ্যের প্রতি তাদের ভালবাসা এবং তাদের পূর্বপুরুষের পেশার প্রতি আনুগত্য তাঁদের উৎসাহিত করে। উৎসবের বাইরে, অনেক ঢাকি অটো চালক অথবা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
ঢাকির দক্ষতার বিবর্তন
পুরনো দিনে ঢাকিরা বিভিন্ন ধরনের বিট তুলতে পারতেন। বর্তমানে, অনেক ঢাকির দক্ষতা সীমিত হয়ে পড়েছে এবং তাঁরা ঐতিহ্যবাহী বিট বাজাতে পারেন। দুর্গাপূজার চার দিন ধরে চার প্রকারের বিট বাজাতে হয়, যা তাদের দক্ষতা এবং প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে।
উপসংহার
বেঁন্দুয়া গ্রামে ঢাকির মহড়া শুধুমাত্র একটি রুটিন নয়—এটি একটি প্রিয় ঐতিহ্য যা বর্তমানকে অতীতের সঙ্গে সংযুক্ত করে। উৎসব ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে, এই শিল্পীদের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে যে দুর্গাপূজার বিট গুলি ভক্তি এবং রিদম দিয়ে পরিপূর্ণ থাকবে।