গলার নলি কাটা অবস্থায় শ্বশুর বাড়ির ঘরের মেঝেতে পড়েছিল এক বধূর দেহ । তার পাশে পড়ে থাকে ধারালো চাকু।এই ঘটনা ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া শহরের মনসাপাড়া এলাকায় ।পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা রক্তাত অবস্থায় বধূ শম্পা ঘোষ (৩৮) কে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বধূকে মৃত ঘোষনা করেন। এদিনই কাটোয়া হাসপাতাল পুলিশ মর্গে বধূর মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয় । বধূর মৃত্যুর ঘটনায় প্রকৃত কারণ কি তার তদন্ত কাটোয়া থানার পুলিশ শুরু করেছে । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান বধূ হয়তো আত্মঘাতী হয়েছেন ।
পুলিশ ও স্থানীয় সৃত্রে জানাগেছে কাটোয়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাপাড়ায় বধূর শ্বশুর বাড়ি । তার বাবার বাড়ি কাটোয়ার ঘোরানাশ গ্রামে । মনসাপাড়া নিবাসী পেশায় দুধ ও ছানা ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় । দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়েগেছে ।ছোট মেয়ে লিপিকা স্থানীয় বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ।এদিন সকালে বিশ্বনাথ নিজের কাজে বাইরে বেরিয়ে যান । ওই সময়ে বাড়ির পাশের অন্য একটি ঘরে লিপিকা পড়াশুনা করছিল । অপর ঘরে ছিল তাঁর মা। লিপিকা জানায় ,পড়ার ফাঁকে সে একবার তাঁর মায়ের ঘরে যায় । তখনই সে দেখতে পায় মায়ের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রয়েছে।
অনেক ডাকাডাকি করেও মায়ের সাড়া মেলে না। জানালা দিয়ে উঁকি মেরে সে দেখতে পায় নলি কাটা অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে তাঁর মায়ের দেহ ।আর দেহের পাশেই পড়ে রয়েছে ধারাল চাকু । এমনটা দেখে সে চিৎকার শুরু করতেই পরিবারের অন্যরা এবং প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দরজা ভেঙে তাঁর মাকে উদ্ধার করে । হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও মাকে প্রাণে বাঁচানো যায়নি । বধূর স্বামী বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন,তিনি দুধ ও ছানার ব্যবসা করার পাশাপাশি মাংসও বিক্রি করা শুরু করেছিলেন।কিন্তু ‘লক ডাউন’ শুরু হতেই সব কাজ-কর্মই একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
সেই কারণে সংসারে অনটন দেখা দিয়েছে । স্ত্রী শম্পা যাদের কাছে টাকা পেত তাও অনাদায় হয়ে রয়েছে ।এই পরিস্থিতিতে সংসার কিভাবে চলবে তা নিয়ে স্ত্রী শম্পা মানসিক দুঃশ্চিন্তায় পড়েযায় । শেষ পর্যন্ত মানুষিক অবসাদে স্ত্রী শম্পা নিজেই নিজের জীবন শেষ করে দিল ।বধূর মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীন) ধ্রুব দাস বলেন, ওই মহিলার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে । মৃত্যু নিয়ে কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। ঘটনার তদন্ত চলছে।