প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান

শৈশবে উজির আলি খান ছিলেন পরাধীন ভারতের নাগরিক।দেশ যখন স্বাধীন হয় তখন তিনি তরুণ।আর এখন দেশের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন চলার সময় তিনি শতায়ু পার করা এক প্রবীণ নাগরিক।পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের উদয়কৃষ্ণপুর গ্রাম নিবাসী উজির আলি খানের বয়স এখন ১০১ বছর।বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত তাঁর শরীর।তবুও ভোটদানের অধিকার থেকে কিছুতেই তিনি পিছু হঠে আসতে চান নি।তাই ভোটদানের ইচ্ছা পূরণে শনিবার তাঁর বাড়িতেই পৌছে গেলেন নিবাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা ।কমিশনের ব্যবস্থাপনায় বাড়িতে বসে নিজের ভোটাধীকার প্রয়োগ করতে পেরে তিনি আপ্লুত ।
খণ্ডঘোষ বিধানসভা বিষ্ণুপুর লোকসভার অধীন।আগামী ২৫ মে হবে এই লোকসভার ভোট গ্রহন ।তাই ভোট নিয়ে এখন উন্মাদনায় ভাসছে খণ্ডঘোষ।বয়সের ভারে শরীর ভারাক্রান্ত হলেও গণতন্ত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব প্রৌঢ় উজির আলি খানের মনেও যথেষ্ট প্রভাব ফেলে।দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে ভোট দানে অংশ নেওয়াটা যে জরুরী,সেকথা যেন বাবেবারে তাঁর মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তবে এর জন্যে তাঁকে বিশেষ ঝঞ্ঝাট পোয়াতে হয় নি । ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা খণ্ডঘোষ ব্লকের আধিকারিকরা শনিবার তাঁর বাড়িতে পৌছে যান । তাদের সহায়তায় উজির আলি পোস্টাল ব্যালটে নিজের ভোটাধীকার প্রয়োগ করেন।
কমিশনের আধিকারিকদের কথায় জনা গিয়েছে ৮৫ বছরের বেশী বয়সী দেশের প্রবীণ নাগরিকরা যাতে বাড়িতে বসেই ভোট দিতে পারেন ,তার ব্যবস্থা এবার নির্বাচন কমিশন করেছে।এমন ক্ষেত্রে বয়স্ক মানুষরা বাড়িতে বসে তাঁদের ভোট ইভিএম এর পরিবর্তে ’পোস্টাল ব্যালটে ’দিতে পারছেন।এমন ব্যবস্থায় শুক্রবার খণ্ডঘোষের খুদকুড়ি গ্রামনিবাসী ১০২ বছর বয়সী সত্যনারায়ন
সাঁই ভোট দিয়েছেন।আর এদিন খণ্ডঘোষের উদয়কৃষ্ণপুর গ্রাম নিবাসী উজির আলি খানও ভোট দিলেন।
ভোট দেওয়ার ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় সত্যনারায়ন বাবুর মতোই উচ্ছাস প্রকাশ করেন উজির আলি ।
তিনি এদিন বলেন, আমার এখন ১০১ বছর বয়স। ।যৌবনে যখন ভোট দিতাম তখন পুলিশি তৎপরতা থাকতো ঠিকই।কিন্তু ভোট নিয়ে তখন কমিশনের এত ব্যবস্থাপনা,প্রচারের এত জৌলুস ,এসব ছিল না । ভারাক্রান্ত শরীর নিয়ে বাড়িতে বসেই যে ভোট দিতে পারবো ,সেটা ভাবতে পারিনি । কমিশনের লোকজন বাড়িতে এসে আমার ভোট নিয়ে খেছেন। এভাবে ভোট দিতে পেরে আমি খুশি । আমি আপ্লিত ।