হারহিম করা ঘটনা বললেও কম বলা হবে !হাত,পা ও মুখ বেঁধে গায়ে কেরোসিন তেলঢেলে এক বধূকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা- গ্রেপ্তার দুই

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ২২ জুলাই
হারহিম করা ঘটনা বললেও কম বলা হবে ।হাত,পা
ও মুখ বেঁধে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে এক গৃহবধূকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠলো তাঁরই আত্মীয়দের বিরুদ্ধে।মধ্যযুগীয় বর্বতাকে হার মানানো এই হারহিম করা পাশবিক অত্যাচারের ঘটনাটি শনিবার ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কুরুম্বা গ্রামে।আশঙ্কাজনক অবস্থায় বধূ বীথিকা গড়াই (৪৩)এখন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ বধূর ভাসুরপো আসুতোষ গড়াই ও তার ছেলে পূর্ণচন্দ্র গড়াইকে গ্রেপ্তার করেছে।অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি করেছেন কুরুম্বা গ্রামের বাসিন্দারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,বীথিকাদেবীর স্বামী নবকুমার গড়াই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। কাজের তাগিদে তিনি বাইরে থাকেন ।তাই বীথিকাদেবী তাঁর ছেলে সুরজকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন।নবকুমারবাবুর বাড়ির উল্টোদিকে বাড়ি তাঁর ভাইপো আশুতোষ গড়াইদের। বাড়ির পশ্চিমদিকে একটি পুকুরপাড়ের কিছুটা জায়গা নিয়ে আশুতোষের সঙ্গে নবকুমারদের দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছিল।বিবাদ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে ।তারই মধ্যে এদিন নবকুমারের স্ত্রীর সাথে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়ে বসে তারই ওই আত্মীয়রা।
দগ্ধ বধূর খুড়তুতো দাদা সুবীর গড়াই জানিয়েছেন, অন্য দিনের মতো এদিন সকালে তিনি প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়েছিলেন। তখনই তিনি তাঁর খুড়তূতো বোন বীথিকার বাড়ির কাছে চিৎকার চেঁচামেচির শুনতে পান।এর প্রাতঃভ্রমণ বন্ধ করেদিয়ে তিনি বীথিকাদের বাড়ির কাছে চলে যান। সুবীর গড়াই পুলিশকে জানান,’ঘটনাস্থলে আসার পর তিনি দেখতে পান আশুতোষ গড়াইদের বাড়িতে দগ্ধ অবস্থায় কাতরাচ্ছেন বীথিকা। মুখ,হাত,পা বাঁধা অবস্থায় সেখানে বীথিকা পড়ে রয়েছেন। পাশে পড়ে রয়েছে কেরোসিন তেলের পাত্র। চারিদিকে কেরোসিন তেলের গন্ধ ছাড়ছে।ঘটনার সময় ঘুমাচ্ছিলেন বীথিকার একমাত্র ছেলে সুরজ“।এই খবর পেয়েই মঙ্গলকোট থানার আইসি পিন্টু মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ বধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি আসুতোষ গড়াই ও তার ছেলে পূর্ণচন্দ্র গড়াইকে গ্রেপ্তার করে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়,পুকুরপাড়ের জায়গা নিয়ে বিবাদ চলায় বীথিকাদেবীরা তাঁদের বাড়ির
দেওয়াল প্লাস্টার করতে পারছিলেন না। রবিবার বীথিকাদেবীদের দেওয়াল প্লাসটার করার কথা ছিল। সুবীর গড়াই বলেন,“আমাদের মনে হয় বোন বাড়ির প্লাস্টারের কাজ করাতে চলেছে এটা কোনোভাবে জেনে যায় আশুতোষরা। আর সেজন্যই পরিকল্পনামাফিক তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে খুন করার চেষ্টা করেছে।”
সুবীর বাবু পুলিশ কে জানান,”তিনি যখন বীথিকাদের বাড়িতে পৌছান তখন বীথিকার জ্ঞান ছিল। কি ঘটনা ঘটেছে তা তিনি বীথিকাকে জিজ্ঞেস করেন । সুবীর বাবু বলেন,কবীথিকাই তখন তাঁকে জানায়,“সকালে সে বাড়ির সামনে ঝাঁট দিচ্ছিল। তখন আশুতোষ গড়াই ও তার ছেলে মিলে জোরকরে তাকে নিজেদের বাড়িতে তুলে নিয়ে যায় । বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হাত,পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রতিবেশীরা আশুতোষের বাড়ি থেকেই প্রথম বীথিকাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে”।মঙ্গলকোট থানার আইসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় জানান,“ পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে