আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

ভারতের স্বাধীনতা সগ্রামের ইতিহাস।

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

✍️: সাথী দাস

 

স্বাধীনতা দিবস হলো ভারতীয় প্রজাতন্তের একটি জাতীয় দিবস।১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট (১৩৫৪বঙ্গাব্দের ২৯ শে শ্রাবণ শুক্রবার )ভারত ব্রিটিশ রাজশক্তির শাসন কতৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন সেই ঘটনা কে স্মরণীয় করে রাখার জন্যে প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট তারিখটিতে ভারতে স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালন করা হয়।

 

 

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে আলোচনা করলে যে সব বিষয় গুলি উঠে আসে তা হলো :-১.সিপাহী বিদ্রোহ ১৮৫৭ সাল।২. ভারতীয় রাজনৈতিক দল গঠন।৩. বঙ্গভঙ্গ ও স্বদেশী আন্দোলন।৪. খিলাফত, অসহযোগ ও সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন।৫. লাহোর প্রস্তাব, এবং ব্রিটিশ শাসনের অবসান।

 

১৬১২ সালে ইংরেজরা প্রথম ভারতে আসে বাণিজ্য করতে।১৭৬৫ সালে দিল্লি সম্রাটের কাছ থেকে অনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার শাসন ক্ষমতা দখল করে, এবং শুরু করে নির্মম অত্যাচার।১০০ বছরের নির্মম অত্যাচারের ফলস্বরূপ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভের পরিবেশ সৃষ্টি হয় ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে।

 

 

কোনো একটি নৃদিষ্ট আন্দোলনের ফলে ভারতের স্বাধীনতা আসেনি, এসেছিলো পর্যায়ক্রমে বহু আন্দোলনের ফলস্বরূপ।
কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দের প্রথম বিদ্রোহ ‘সন্ন্যাসী বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০খ্রী:)এছাড়াও চূযাড় বিদ্রোহ (১৭৭০খ্রী:), পাইক বিদ্রোহ (১৮১৭খ্রী:), পলিগার বিদ্রোহ (১৮০৩খ্রী:), ওয়াহাবী আন্দোলন (১৭৮৬-১৮৩১খ্রী:), সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৮৫৫খ্রী:), সিপাহী বিদ্রোহ (১৮৫৭খ্রী:), নীল বিদ্রোহ(১৮৫৯-৬০খ্রী:)।

 

 

তবে ১৮৫৭সালের সিপাহী বিদ্রোহকেই ভারতের প্রথম স্বধীনতা যুদ্ধ বলে মনে করা হয়। একবছরেই ক্রমশ এই বিদ্রোহ গোটা উত্তর ভারতে ও মধ্যে ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল। ঝাঁসির রানী লক্ষীবাঈ, তুলসীপুরের রানী ঈশ্বরী কুমারী দেবী প্রমুখেরা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে লোক নয়কে পরিণত হয়।

 

 

১৮৫৮সালে ভারতের শাসন ভার ব্রিটিশ ইষ্টইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটানের রানীর হাতে হস্তান্তরিত হয়।

 

 

ভারতীয়দরে মধ্যে ধীরে ধীরে পশ্চিত্যা শিক্ষার বিস্তার ঘটানো হয়। স্থাপন করা হয় এশিয়াটিক সোসাইটি (১৭৮৪খ্রী:), হিন্দু কলেজ (১৮১৭খ্রী:)গঠন করা হয় আত্মীয় সভা,ব্রহ্মসভা, কলকাতা মেডিকেল কলেজ (১৮৩৫খ্রী:) প্রাথনা সমাজ, অর্জসমাজ,

See also  অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন সন্দেহে স্ত্রীর গলায় বঁটির কোপ মারলেন স্বামী

 

 

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে সংবাদপত্র গুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল,’বঙ্গদর্শন ‘,’হিন্দু প্যাট্রিয়ট ‘,’অমৃতবাজার পত্রিকা ‘,’সঞ্জীবনী ‘, ‘কেশরী’, প্রভৃতি। ব্রিটিশ সরকার দেশীয় সংবাদপত্র গুলিকে জনমত গঠনের থেকে বিরত করার জন্যে ১৮৭৮সালে ভার্নাকুলার প্রেস আইন চালু করেন।

 

 

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পরিচালনার জন্য একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ৭২ জন প্রতিনিধি নিয়ে বোম্বেতে যার নাম ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ‘। ১৮৮৫-১৯০৫ খ্রী: পর্যন্ত এই প্রীতিষ্ঠান কে নেতৃত্ব দেন ‘নরমপন্থী ‘ দল।এই দলের উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দ ছিলেন উমেশেচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দাদাভাই নৌরজি, ফিরোজ শাহ মেহতা, গোপাল কৃষ্ণ গোখলে, সুরেন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

 

নরমপন্থী নেতৃবৃন্দের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ব্যর্থতা উপলব্ধি করেই ভারতীয় রাজনীতিতে চরমপন্থার উদ্ভব হয়। এদের নুতুন আদর্শ ও কির্মসূচীর দারা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন প্রকৃত অর্থেই সংগ্রামশীল ও বৈপ্লবিক হয়ে ওঠে। চরমপন্থী নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বলগঙ্গাধর তিলক, অরবিন্দ ঘোষ, বিপিন চন্দ্র পাল, অশ্বিনী কুমার দত্ত, লালা লাজপাত রায়।

 

 

বাংলার জাতীয়তাবাদ কে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে ১৯০৫ খ্রী : ১৬ ই অক্টোবর লর্ড কার্জন “Divide and Rule” কেই অনুসরণ করেছিলেন।বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে শুরু করা হয় স্বদেশী ও বয়কট আন্দোলন ১৯০৫ খ্রী:১৩ই জুলাই। এই সময় ‘মুক্তি কোনপথে ‘, ‘ভবানী মন্দির ‘,’বর্তমান রণনীতি ‘ প্রভৃতি বই গুলি জনগনের মধ্যে অগ্নিসংযোগ এর কাজ করেছিল।

 

 

১৯০৬ খ্রী : ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহর উদ্যোগে গঠিত হয় সর্বভারতীয় “মুলিমলীগ”। যা ইংরেজ সরকারের ‘ Divide and Rule ‘ নীতির একটি বড়ো সাফল্য।

 

 

১৯১৫ খ্রী : মহাত্মা গান্ধীজি বিদেশ থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং গোপাল কৃষ্ণ গোখলের মাধ্যমে ভারতীয় রাজনীতির সাথে তাঁর পরিচয় হয়। ১৯১৯ খ্রী :অমৃতসরে ঘটে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড এর ফলস্বরূপ রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর ইংরেজ দের দাওয়া নাইটিহুড উপাধি ত্যাগ কইরেন। এর পর চালু হয় রাওলাট আইন, এর প্রতিবাদে গান্ধীজি ১৯২০সালে শুরু করেন ‘আহিংস অসহযোগ’ আন্দোলন এবং হিন্দু মুসলিম ঐক্য স্থাপনের জন্যে এর সাথে জুড়ে দেয় ‘খিলাফত ‘আন্দোলন কেও। এরপর ১৯৩০ সলে করেন ‘আইন অমান্য ‘আন্দোলন।১৯৪২ সালে ৮ই আগস্ট করেন’ ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন এই আন্দোলন এর সময় তিনি বলে ছিলেন ‘Do Or Die ‘।

See also  আমরা স্বাধীনতা বলতে কি বুঝি?

 

 

১৯২১ সালে সুভাষ চন্দ্র বসু ইংল্যান্ড থেকে ফিরে মহাত্মা গান্ধীর সাথে দেখা করেন এবং ১৯২৩ সালে সর্ব ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি হন।১৯৪২ সালে ১লা সেপ্টেম্বর রাসবিহারী বসু ‘আজাদহিন্দ বাহিনী ‘গড়ে তুলেন ও এর দায়িত্ব তুলে দেন সুভাষের হাতে। নেতাজি সিঙ্গাপুরে ১৯৪৩ খ্রী : ২১ অক্টোবর ‘আজাদহিন্দ সরকার ‘ প্রতিষ্ঠা করেন। ‘আজাদ হিন্দ বাহিনীর রোনোধ্বনি ছিল ‘দিল্লি চলো ‘ এবং ভাষণে তাঁর বিখ্যাত উক্তি উচ্চারণ করেন “তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো “।নেতাজির নিপুন নেতৃত্বে আজাদহিন্দ সেনারা মুক্ত কিরেছিল ভারতবর্ষের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ব্রিটিশের সাথে গোপন বোঝাপড়া নয়,২৬ হাজার আজাদী সেনার আত্মবলিদানে এটাই স্বাধীনতা দিবস।

 

 

১৯৩৯-৪৫ সাল পর্যন্ত চলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভারতের স্বাধীনিতায় একটি গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সময় ৩৬ টিরো বেশি দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্য ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত করে ফলে ভারত ও পাকিস্তান অধীরাজ্যের জন্ম ঘটে। ভারত বিভাগের এই পরিকল্পনায় গান্ধীজির সম্মতি না থাকলেও দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পিরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত ব্যাথিত চিত্তে শেষে পর্যন্ত মাউন্ট ব্যাটেন এর পরিকল্পনায় সর্মথন জানাতে বাধ্য হন।এই সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। অনেক মানুষ প্রাণ হারান এবং ১কোটি ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ বাস্ত হারা হন।ক্ষুদিরাম বসু, ভগৎ সিং, বিনা দাস, প্রীতিলতা ওয়াদেদ্দার, মাতঙ্গিনী হাজরা সহ আরো অনেকেই ছিলেন উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী।

 

 

১৯৪৭ সালে ১৫ ই আগস্ট জোহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের পর দিল্লির লালা কেল্লার লাহরি গেটের উপর ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং সংগ্রামীরা ‘বন্দেমাতরম’, ‘ইনকিলাবজিন্দাবাদ ‘ উচ্চারণ করেন। অপর দৃষ্টি ভঙ্গিতে বলা হয় তোমরা স্বাধীনতা পাওনি, এটা একটা জঘন্য সমঝোতা, তাও দেশ ভাগের মতো হীন শর্তে। ‘কমনওয়েলথ চুক্তি’। transfer of power act 47, UN chartered 41 সংবিধানের 147 নং ধারা অনুযায়ী ভারত, পাকিস্তান, ও বাংলাদেশ এখনো ব্রিটিশের অধীনে পিরাধীন ২১অক্টোবর দিচ্ছে ডাক ব্রিটিশ কমনওয়েলথ নিপাত যাক। স্বাধীন ভারতের সংবিধান গৃহীত হয় ১৯৪৯ সালে এর ২৬ শে নিভেম্বর এবং তা কার্যকরী হয় ১৯৫০খ্রী:২৬ শে জানুয়ারী থেকে। স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন ড: রাজেন্দ্র প্রসাদ।

See also  আনলক টু এর প্রথম দিনে পালিত হলো একলক্ষী বাজারে রথ উৎসব

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি