প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- কোন মহিলার হাতে থাকা ব্যানারে যোগীর ছবির নিচে লেখা রয়েছে গণতন্ত্রের ধর্ষক । আবার অন্য মহিলাদের হাতে থাকা ব্যানারের কোনটিতে মোদিজীকে গণতন্ত্রের ধর্ষক ও
যোগীকে ‘রেপিস্ট ডন ’ বলে আক্ষা দেওয়া হয়েছে । উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার এই ভাবেই যোগী আদিত্যনাথ ও নেরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এদিন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বাসস্ট্যান্ডে
প্রতিবাদ সভার আয়োজন করছিলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা ।এমনই সব ব্যানার হাতে নিয়ে সেই প্রতিবাদ সভায় দলের কয়েক শো মহিলা অংশ নেন ।সভা শেষে তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে হাথরসের তরুণীকে গণধর্ষণ কাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবি তোলেন । মহিলাদের এমন প্রতিবাদ রাজনৈতিক মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে ।
গণধর্ষন ও ধর্ষণকারীদের নির্যাতনে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের হাথরসে এক তরুণীর মৃত্যু হয় । সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে । ঘটনা ধামাচাপা দিতে যোগী সরকারের পুলিশ ও প্রশাসন নির্যাতিতার পরিবার , সংবাদ মাধ্যম ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সংসদের উপর যেভাবে দমন পিড়ন চালিয়েছে তার নিন্দা সরব হয়েছে গোটা দেশ। প্রতিবাদে সামিল হয়েছে বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দল গুলি।
পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীও এদিন কলকাতার রাজপথে নেমে প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান । পরে তিনি প্রতিবাদ সভাও করেন ।নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এদিন জামালপুরের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে জামালপুর বাসস্ট্যান্ডে । সেই সভায় জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান , ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি ভূতনাথ মালিক উপস্থিত থাকেন ।
প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী শিপ্রা ওঝা ,মিনু ঘোষ , মাবিয়া বেগম প্রমুখরা বলেন ,বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ চলছে । উত্তরপ্রদেশে মহিলারা সুরক্ষিত নন । নির্ভয়া কাণ্ডের থেকেও ঘৃণ্যা
গণধর্ষন কাণ্ড ঘটেছে হাথরসে । মৃত্যুর পরেও নির্যাতিতাকে রেহাই দেয়নি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
ও প্রশাসন । মৃতার পরিবারকে পুলিশ বন্দি করে রেখে তার দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ।
গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেবার জন্য যোগী সরকার নির্যাতিতার পরিবার ও সাংবাদ মাধ্যমের উপরেও রাষ্ট্রিয় সন্ত্রাস চালাতে কশুর করেনি। তৃণমূলের সাংসদ প্রতিনিধীদেরকেও নির্যাতিতার বড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি । উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বলপ্রয়োগ করে তৃণমূলের সাংসদদের হাথরস ছাড়তে বাধ্যকরে ।এই সমস্ত অগনতান্ত্রিক ও ঘৃন্য ঘটনার প্রতিবাদে গোটা দেশের পাশাপাশি তাঁরা জামালপুরের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও প্রতিবাদে স্বোচ্চার হয়েছেন ।
অপর তৃণমূল নেত্রী পূর্ণিমা মালিক বলেন ,
উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন যে ভাবে গণধর্ষণ কাণ্ড ধামাচাপা দেবার কৌশল নেয় তার জন্যই তাঁরা বলতে বাধ্য হয়েছেন যোগী আদিত্যনাথই হলেই ‘রেপিস্টদের ডন ’। পাশাপাশি গনতন্তের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যমকে গণধর্ষনের খবর সংগ্রহে যে ভাবে বাধা দেওয়া হল তার জন্যই তাঁরা নরেদ্র মোদি ও যোগী আদিত্যানাথকে গণতন্ত্রের ধর্ষক হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ।
পূর্ণিমা মালিক আরও বলেন ,মহালয়ার পর এখন দেবীপক্ষ চলছে ।আরকয়েকদিন বাদ মহিষাসুর বধ হবে । বাংলার নারীরা এখন মনেকরছেন বিজেপির যোগী আদিত্যনাথই বর্তমান ভারতে সেই মহিষাসুর । আগামী বিধানসভা ভোটে বাংলার মহিলারা এই মহিষাসুর ও তার দলকে যোগ্য জবাব দেবে ।