আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

যেখানে সময় থেমে যায়, মানুষ ফিরে যায় মানুষের কাছে—মা মনসার শয়লা মেলার গল্প

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

১২ বছর পর পর যেন সময় নিজেই থেমে দাঁড়ায়—আর মানুষ ফিরে যায় মানুষের কাছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না দুই ব্লকের নরোত্তম বাটি গ্রামে তেমনই এক আবেগঘন মিলনের নাম মা মনসার শয়লা মেলা।

দীর্ঘ বারো বছরের অপেক্ষা শেষে আবারও গ্রামজুড়ে ফিরেছে সেই চিরচেনা ডাক। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় মা মনসার পূজা। ধূপ–ধুনোর গন্ধে, ঢাকের তালে আর মন্ত্রোচ্চারণে ভরে ওঠে চারপাশ। পূজা শেষে শুরু হয় সবচেয়ে সুন্দর পর্ব—বন্ধুত্ব ঝালাই করার উৎসব।

এখানে বন্ধুত্ব শুধু কথায় নয়, রীতিতে।
মহিলারা একে অপরকে বরণ করে নেন স্নেহের ছোঁয়ায়, আর পুরুষেরা মালা পরিয়ে নতুন করে বন্ধুত্বের বন্ধনে বাঁধেন। কারও চোখে জল, কারও মুখে হাসি—সব মিলিয়ে এক অনির্বচনীয় আবেগের মুহূর্ত। বন্ধুত্বের এই শপথ শেষে সবাই একসঙ্গে মিষ্টিমুখ করে—মিষ্টির স্বাদে যেন মিশে যায় সম্পর্কের মাধুর্য।

সময় বদলেছে, প্রজন্ম বদলেছে—তবু আবেগ রয়ে গেছে একই। আজকের তরুণ–তরুণীরা বন্ধুত্বের সেই মুহূর্তকে বন্দি করছে সেলফিতে, মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে দিচ্ছে সমাজমাধ্যমে। যেন গ্রামবাংলার মাটিতে পালিত হচ্ছে নিজের মতো করে বাংলার ফ্রেন্ডশিপ ডে।

এ বছর এই আবেগের উৎসবকে ঘিরে বসেছে তিন দিনের মেলা। যাত্রা, অর্কেস্ট্রা, নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখর নরোত্তম বাটি গ্রাম। সকাল থেকেই ছিল মহিলা ঢাকিদের বিশেষ প্রদর্শন—ঢাকের তালে তালে যেন নারীর শক্তি, সংস্কৃতি আর আত্মবিশ্বাস একসঙ্গে ধ্বনিত হলো।

মা মনসার শয়লা মেলা শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়—এ এক মানবিক মিলনমেলা।
যেখানে বন্ধুত্ব নতুন করে জন্ম নেয়, পুরনো সম্পর্ক আবার শক্ত হয়, আর গ্রামবাংলা মনে করিয়ে দেয়—মানুষই মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব।

See also  মমতার ধমক: সৈকতের হোটেলে বাধ্যতামূলক ঘর ভাড়ার তালিকা ঝোলানোর নির্দেশ, নিয়মভঙ্গকারীদের জরিমানা

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি