আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

 ভিন ধর্মে বিয়ে করায় বৃদ্ধ মাকে একঘরে করেদিল গ্রামের মাতব্বররা – ধার্য করা হল মোটা অঙ্কের জরিমানা

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now
বাবু সিদ্ধান্ত  ( বর্ধমান ) :- 
র্মীয় ঐক্য,সম্প্রীতি ও সংহতি এই ভারতের মূল ভিত্তি। রাঢ়বঙ্গ তথা বর্ধমানের সঙ্গেও এই ধর্মীয় সম্প্রীতির যোগ অতি প্রাচীন।তবু আজও যেন ধর্মান্ধতার অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে পারেনি পূর্ব বর্ধমান জেলার মাধবডিহি থানার মসজিদপুর গ্রামের কতিপয় কিছু মানুষ ।
মসজিদপুর গ্রামের তুরণী কাশ্মীরা ভিন্ন ধর্মের যুবক কৌশিক মণ্ডলকে বিয়ে করায় তার মাশুল দিতে হচ্ছে তাঁরই বৃদ্ধা মা সুফিয়া বেগমকে।অভিযোগ ভিন ধর্মে বিয়েকরা মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখায় গ্রামের মাতব্বররা একঘরে করে দিয়েছে সুফিয়া বেগমকে। ধার্য করা হয়েছে মোটা অংকের জরিমানা।এমন
ঘটনার প্রতিকার চেয়ে রায়না ২ ব্লক প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মহিলা ।কিন্তু
ব্লক প্রশাসন প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা না করায় অসহায় সংখ্যালঘু বয়স্ক মহিলা সুফিয়া বেগম জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ।

সুফিয়া বেগমের বড় মেয়ে কাশ্মীরা । তার সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক গড়েওঠে মাধবডিহির কাইতির কুরচিগড়িয়া নিবাসী হিন্দু পরিবারের যুবক কৌশিক মণ্ডলের।বছর চার আগে তারা বিয়ে করে। কৌশিক ও কাশ্মীরা দুজনেই কাজকরে একটি বেসরকারী সংস্থায় । বর্তমানে সুফিয়ার মেয়ে ও জামাই কর্মসূত্রে বর্ধমান শহরের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকে। তাঁদের একটি নাবালক পুত্র সন্তান রয়েছে । কাশ্মীরার মা প্রথমে এই বিয়ে মেনে না নিলেও এক বছর পর সব মেনে নেন।
জেলাশাসককে চিঠি লিখে সুফিয়া বেগম
জানিয়েছেন , সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাঁকে দেখতে তাঁর মে কাশ্মীরা ও জামাই
কৌশিক মসজিদপুর গ্রামের বাড়িতে আসে ।
এরপরই থেকে তাঁর উপর শুরু হয় নিপিড়ন । গ্রামের কিছু মাতব্বর তাকে একঘরে করে দেয়। ভিনধর্মে বিয়ে করা মেয়ের সাথে কোনো সম্পর্ক রাখা যাবেনা বলে তারা ফরমান জারি করেছে ।

সুফিয়া বেগম বলেন, নিপিড়নের এখানেই শেষ নয় । তাঁর দশ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে । একই সঙ্গে নিদান দেওয়া হয়েছে গ্রামের কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে তাঁকেও ছয় হাজার টাকা জরিমানার মেটাতে হবে । সুফিয়া বেগম অভিযোগ করেছেন ,তিনি যাতে তাঁর স্বামীর তৈরি বাড়িতে থাকতে না পারেন এবং স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করারও চেষ্টার চলছে ।
সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় মাতব্বররা এমন মধ্যযুগীয় ফরমান জারি করলেও সুফিয়ার পাশে দাঁড়ায়নি তাঁর ছেলে, দেওর ,ননদ, এমনকি অন্য আত্মীয়রাও । সুফিয়া বলেন ,তাঁর উপর হওয়া নিপিড়নের কথা তিনি মাধবডিহি থানায় জানিয়ে ছিলেন । কিন্তু কোন প্রতিকার মেলেনি ।তাই বাধ্য হয়েই জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ।
কাশ্মীরা ও তাঁর স্বামী কৌশিক মণ্ডল বলেন ,
“ভিন ধর্মে বিবাহ সংক্রান্ত মামলায় ২০১৮ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালত যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করেছে। কেরলের হোমিওপ্যাথি কলেজের পড়ুয়া অখিল আশোকানা ও শাফিন জাহানের বিবাহ সংক্রান্ত মামলায় সর্বোচ্চ আদালত ওই রায় ঘোষনা করেছিল ।
রায়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়াহয়, কোন সাবালক পুরুষ কিংবা মহিলার বৈবাহিক বিষয়ে কারুর কোন মত প্রকাশের অধিকার নেই। ওই বিবাহ একান্ত ভাবেই ওই স্বামী স্ত্রীর ব্যক্তিগত বিষয় । ”কাশ্মীরা বলেন , দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় ঘোষণা করে এমনটা স্পষ্ট করেদিলেও তাঁর বিয়ে নিয়ে তাঁদের গ্রামের কিছু মাতব্বর মধ্যযুগীয় কায়দায় ফতোয়া জারি করেছে। বৃদ্ধা সুফিয়া বেগম বলেন, জেলাশাসক যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন এই প্রত্যাশা তাঁদের রয়েছে ।
জেলাশাসক বিজয় ভারতি এবিষয়ে জানিয়েছেন ,‘অভিযোগ পত্র এখনও হাতে পাইনি । তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি । সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে ’।
See also  কাটোয়ায় ‘বাংলার গর্ব মমতা ’ কর্মসূচিতেও প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদন্দ

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি