বাবু সিদ্ধান্ত
ছোট বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত পছন্দের পাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার কথা ছেলেকে বলেছিল বাবা। তা সত্তেও ফোনে প্রেমিকার সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলতো ছেলে।তার জেরে ক্ষিপ্ত বাবার হাতে খুন হতে হল ছেলেকে । ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছে তার মা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার হামিদপুর গ্রামে ।খুনের ঘটনায় পরই গা ঢাকা দিয়েছে যুবকের বাবা।পুলিশ খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করে খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।পুলিশ জানিয়েছে মৃতর নাম আলিমউদ্দিন সেখ (২২) পূর্বস্থলীর হামিদপুর গ্রামে তার বাড়ি ।পেটে ধারাল ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে আলিম উদ্দিন কে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই বাবা আব্দুল সালেক সেখের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে বাড়িতেই ছেলের পেটে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে আব্দুল সালেক গা ঢাকা দেয় বলে অভিযোগ ।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে যুবক আলিমউদ্দিনের রক্তাত মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকেই খুনে ব্যবহৃত রক্তমাখা ধারালো ছুরিটি পুলিশ পেয়েছে।

পুলিশ সেটি বাজেয়াপ্ত করেছে ।রবিবার কালনা মহকুমা হাসপাতাল পুলিশ মর্গে যুবকের দেহের ময়নাতদন্ত হয় । মৃতর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে পালাতক অভিযুক্ত বাবার খোঁজ চালাচ্ছে ।মৃত যুবকের পরিবারের আত্মীয় কেরামত সেখ জানিয়েছেন , আব্দুল সালেক সেখ তার মামা হয় ।মামার ছেলে আলিমউদ্দিনের সঙ্গে পাশের গ্রাম খড়দত্তপাড়ার এক তরুণীর সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয় । সে নিজের পছন্দের ওই তরুণীর সঙ্গে প্রতিদিন ফোনে কথা বলতো । ছোট বোনের বিয়ের আগেই ওই তরুণীকে বিয়ে করবে বলেছিল আলিমউদ্দিন । মামা তাতে রাজি ছিলনা । মামার বক্তব্য ছিল তাঁর ছোট মেয়ের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত ছেলে ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবে না ।

কিন্তু তা সত্ত্বেও বাবার নিষেধ অমান্য করে আলিমউদ্দিন ওই তুরুণীর সঙ্গে ফোনে প্রতিদিন কথা বলতো । শনিবার বিকালেও আলিমউদ্দিন ওই তরুণীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা বলে । মামা তা জানতে পারার পর শনিবার রাতে বাড়িতে অশান্তি চরমে ওঠে । সেই কারনে রাত ৯ টা অবধি আলিম উদ্দিন ঘরের বাইরে ছিল । পরে সে ঘরে ঢোকে । কেরামত সেখ বলেন ,ক্ষিপ্ত আব্দুল সালেক তাঁর ছেলেকে সবক শেখানোর জন্য তখন বাড়িতেই ধারালো ছুরি নিয়ে বসেছিল। ছেলে ঘরে ঢোকার পরেই আব্দুল সালেক ওই ঘরে ঢুকে আচমকা ছেলের পেটে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দেয়।ওই সময়ে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মা রেজিনা বিবিও আহত হন ।

চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হতেই আব্দুল সালেক বাড়ি ছেড়ে পালায় । রেজিনা বিবিকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । তাঁর হাতে ৯ টি সেলাই পড়েছে । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আলিমউদ্দিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে । খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরিটিও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার। একমাত্র ছেলেকে বাবা এমন নৃশংস ভাবে খুন করে পালিয়েছে জেনে স্তম্ভিত হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দারা ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , ছেলেকে খুনের ঘটনা নিয়ে মা রেজিনা বিবি পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে । অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস জানিয়েছেন,‘খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে । অভিযুক্তের খোঁজ চালানো হচ্ছে ।
