প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান, ২৮ অক্টোবর: ছট পুজো দিন ভোরে ভাগীরথীতে পূণ্যস্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল দুই ভাই।মঙ্গলবার মর্মন্তিক এই ঘটনাটি ঘেটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দেবরাজ ঘাটে।তলিয়ে যাওয়া দু’জনের নাম শিবম সাউ(২৫)
ও সুজন সাউ(২০)। এমন ঘটনার পর ভাগীরথীর ঘাটেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সাউ পরিবারের সদস্যরা।ভক্তি ও আনন্দের ছট পুজার দিনের সকালে শোকের মূর্ছনায় ভাসে ভাগীরথীর দেবরাজ ঘাট।
এই ঘটনার খবর পেয়েই কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।ডুবুরির দল নিখোঁজ দুই ভাইয়ের সন্ধানে ভাগীরথীতে কদমে তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললেও
ভাগীরথীতে তলিয়ে যাওয়া দুই ভাইয়ের সন্ধান এখনো পর্যন্ত মেলে নি।নদীর ধারে উদ্বিগ্নভাবে অপেক্ষা করছেন সাউ পরিবারের সদস্য ও পরিজনরা ।


প্রশাসন ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে,ছট পুজোর দিন সকালে ভাগীরথীতে তলিয়ে যাওয়া দুই ভাই কাটোয়া ন্যাশনালপাড়ার বাসিন্দা। পরিবারের কর্তারা পেশায় ব্যবসায়ী।ব্যবসায়ী মনোজ সাউয়ের দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে শিবম ছিলেন বড় আর মনোজের ভাই রঞ্জিত সাউয়ের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে হলেন সুজন। ব্যবসার তাগিদে রঞ্জিত সাউ মুর্শিদাবাদ জেলার সালারে থাকেন । ছটপুজো উপলক্ষ্যে তিনি বাড়ি এসেছিলেন।ছট পুজো দেওয়ার আগে পূণ্যস্নান সারার জন্য এই সাউ পরিবারের সদস্যরা এদিন ভোর পাঁচটা নাগাদ ভাগীরথীর দেবরাজ ঘাটে স্নান করতে এসেছিলেন । একে একে সবাই স্নান করে উঠে পড়লেও শিবম ও সুজন নদীর স্রোতে তলিয়ে যান।
নিখোঁজ দুই তরুনের কাকা প্রসেনজিৎ সাউ আক্ষেপ করে বলেন,“আমি ছেলে দুটোকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম । কিন্তু নদীর স্রোত এতটাই প্রবল ছিল যে আমার হাত ফস্কে গিয়ে ওরা তলিয়ে যায়। একথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন “।উৎসবের আবহে এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা চাওড় হতেই গোটা এলাকা জুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া । প্রচুর মানুষ কাটোয়ার দেবরাজঘাটে এসে জড়ো হয় ।কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘাটের কাছে আসেন। শুরু হয় তল্লাশি ।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ কাটোয়ার দেবরাজঘাট অত্যন্ত বিপদজনক।প্রায়ই প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও পূণ্যার্থীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে পুরসভা ও প্রশাসন স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নেয় নি। প্রতি বছরই ধর্মীয় স্নান বা পুজোর সময় কাটোয়ার দেবরাজ ঘাটে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেই চলেছে।প্রশাসনের পক্ষ থেকে এদিন জানানো হয়েছে, “নিখোঁজ দুই যুবককে উদ্ধারের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে ঘাটগুলির নিরাপত্তা কাঠামো পর্যালোচনা করা হবে।”








