প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ৯ জুলাই

বৃষ্টি ভেজা রাস্তায় বেপরোয়া গতীতে বাইক চালিয়ে
যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হল তিন জনের। বুধবার দুপুরে ভয়াবহ এই পথ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর শিবতলা এলাকায়
।পুলিশ জানিয়েছে,দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেন সুজয় কেদারবংশী (১৯),মুকেশ কেদারবংশী(২৯) এবং দিবাকর মজুমদার(২৯)।মৃত তিনজনেরই বাড়ি পূর্বস্থলীর পিলা সন্তোষপুর এলাকায়। দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করার পাশাপাশি পুলিশ দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটি বাজেয়াপ্ত করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই তিনটি মৃতদেহ পাঠানো হয় কালনা মহকুমা হাসপাতাল পুলিশ মর্গে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,‘মহারাষ্ট্রে প্যাণ্ডেলের কাজ করতেন সুজয় কেদারবংশী।
কিছুদিন আগে তিনি সন্তোষপুরের বাড়িতে আসেন
।সেই থেকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন।মায়ের কথামত বাজার করতে এদিন তিনি তাঁর নতুন বাইকে চেপে বাড়ি থেকে স্থানীয় পাটুলি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।ওই সময়েই তাঁর সঙ্গে দেখা হয় কয়েকদিন আগে ভিন রাজ্যের কর্মস্থল থেকে সন্তেষপুরের বাড়িতে ফিরে আসা দিবাকর মজুমদার ও মুকেশ কেদারবংশীর।বাজার সেরে সুজয় তাঁর বাইকে দিবাকর ও মুকেশকে চাপিয়ে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন । পথে ঘটে যায়
ভয়ংকর দুর্ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা অনুয়ায়ী,তিনজন আরোহী সওয়ার থাকা বাইকটি বৃষ্টিতে ভেজা রাস্তায় বেপোরোয়া গতীতে ছুটছিল। তখন কোন কারণে
চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাইকটি প্রথমে রাস্তার পাশে থাক একটি ইলেকট্রিক পোলে সজোরে ধাক্কা মারে। সেখান থেকে ছিটকে আরোহী সহ বাইকটি
একটি দেওয়ালে ধাক্কা মারে। বাইক আরোহীদের কারুর মাথায় হেলমেট না থাকায় তিন বাইক আরোহী এই দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হন । তিন জনেরই মাথায় ও শরীরে গুরুতর আঘাত লাগে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে
স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে চিকিৎসক তিনজনকেই মৃতবলে ঘোষণা করে।
এমন ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় পরিবারের রোজগেরে ব্যক্তির মৃত্যুতে শোকাতুর হয়ে পড়েছেন পরিজনরা
।সুজয়ের মা রুবী কেদারবংশী চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন,“ আমার ছেলে মহারাষ্ট্রে প্যাণ্ডেলের কাজ করতো। কয়েকদিন আগে ছেলে
বাড়ি ফিরে আসে। আমি ছেলেকে এদিন বাজার
করতে যেতে বলি। তবে সাত মাস আগে কেনা
বাইকটি নিয়ে বাজারে যেতে ছেলেকে নিষেধ করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত বাইক দুর্ঘটনাতেই ছেলের মৃত্যু হবে তা কল্পনাও করতে পারছি না“।একই ভাবে চোখের জল মুছতে মুছতে দিবাকরের স্ত্রী নমিতা মজুমদার বলেন,’ফের মহারাষ্ট্রে কাজে যাবে বলে আমার স্বামী ট্রেনের টিকিট করার জন্য এদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিল। দুর্ঘটনায় স্বামীর জীবনটা শেষ হয়ে গেল। স্বামীর মৃত্যুতে আমার পরিবারটা পথে বসে গেল। কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।”