আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

রবিনসন স্ট্রিটে কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এবার মেমারিতে -দিদির পচাগলা মৃতদেহের সঙ্গে পাঁচ দিন শুয়ে বসে কাটালেন বোন

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

 

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১০ মার্চ

ঠিক যেন কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটে কাণ্ডেরই পুনরাবৃত্তি ।সেই রকমই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে।ঘরের মধ্যে মৃত দিদি সুপ্তিকণা কোলের পচাগলা দেহের সাথেই শুয়ে-বসে পাঁচটা দিন কাটায়ে দিলেন বোন মুক্তিকণা কোলে। সেই ঘর থেকে বৃহস্পতিবার সকালে মাত্রাছাড়া দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকার লোকজন বিষয়টি মেমারি থানায় জানায় ।দুপুরে মেমারি থানার পুলিশ শহরের কৃষ্ণ বাজার এলাকায় থাকা মুক্তিকণা কোলেদের বাড়ি থেকে পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার করে ।ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই মৃতদেহটি পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে।কি কারণে মহিলার মৃত্যু হল তার তদন্ত পুলিশ শুরু করেছে।

 

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ৫৩
বয়সী সুপ্তিকণা কোলের সঙ্গেই একই বাড়িতে থাকতেন তাঁর ছোট বোন মুক্তিকণা।এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন,মুক্তিকণারা চার বোন ও এক ভাই। কয়েক বছর আগে মেমারি শহরে
একটি পথ দুর্ঘটনায় তাঁদের ভাই অসিত কোলে মারা যান। সুপ্তিকণা ও মুক্তিকণা এই দুই বোনই অবিবাহিত ছিলেন। তাঁরা এক সঙ্গে একটি ঘরেই থাকতেন। মেমারি শহর নিবাসী মৃতার আত্মীয়, প্রদীপ বসু বলেন, “ওরা ওঁদের বাবার ভুল সিদ্ধান্তের জন্যেই সমাজজীবন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিল। মানসিকভাবেও ওরা বিধ্বস্ত ছিল। খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করতো না। দুই বোনের মনের ভিতরেও অনেক ক্ষোভ জমা হয়েছিল।
প্রদীপ বাবু দাবি করেন, সম্ভবত অপুষ্টির জন্যেই সুপ্তিকণার মৃত্যু হয়েছে। তারপর দিদির মৃতদেহ কিভাবে সৎকার করবেন তার কিছু বুঝে উঠতে না পেরেই মুক্তিকণা দেহ আগলে পড়েছিল বলেই তাঁরা মনে করছেন “। এলাকার বাসিন্দারা বলেন ,এই ঘটনা তাঁদের
২০১৫ সালের জুন মাসে কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনাকেই মনে করিয়ে দিয়েছে।

 

 

 

মেমারি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চিরঞ্জীব ঘোষ বলেন , ঘরের দরজায় তালা দিয়ে এ দিন সাতসকালে মুক্তিকণা বাইরে বেরিয়ে পড়ে ।ওনাদের বাড়ির ভিতর থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল ।
এলাকার লোকজন আমাকে জানায় । বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানান ,দুপুরে মুক্তিকণা বাড়ি ফিরলে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে । মুক্তিকণা কোলে এদিন বলেন,“আমার দিদি মারা গিয়েছে তা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। কিন্তু কী করবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। তাই দিদির দেহের পাশেই শুয়ে-বসে কাটিয়েছি ।“

See also  মোটা টাকা ’তোলা’ চেয়ে না পেয়ে বিদ্যালয়ে সেলেন্ডার কল বাসানো বন্ধ করে দিল তৃণমূল নেতা -অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসলো প্রশাসন

 

 

এলাকার বাসিন্দারা জানান ,মুক্তিকণাদের দোতলা বাড়ির প্রতিটি ঘরের জানলা ৩৬৫টি দিনই বন্ধ থাকত। কারুর সঙ্গে ওনারা মেলামেশা করতেন না। মাঝে মধ্যে কখনও কখনও জল নিতে নীচে নামতেন। বাড়ির বিদ্যুতের সংযোগও ওনাা কেটে দিয়েছিলেন। বছরের পর বছর ধরে মোমবাতির আলো জ্বেলেই ওনারা দুই বোন থাকতেন।ওনাদের বাবা তাঁর প্রচুর সম্পত্তি সম্পত্তি টাকা পয়সা মেমারিরই একটি আশ্রমে দান করে দেয়েছেন। ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ কি হবে তা তিনি ভাবেন নি ।এলাকার সবাই চাইছেন, চিকিৎসার মাধ্যমে মুক্তিকণাকে সুস্থ করে তোলার জন্যে সরকার বা প্রশাসন কিছু একটা করুক ।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি