আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

প্রতি মাসে বাঁকুড়া জেলায় প্রায় ৫৪ হাজার মৃত গ্রাহকের নামে রেশন উঠছে বলে অভিযোগ

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

নিজস্ব প্রতিনিধি ( বাঁকুড়া ) :- প্রতি মাসে বাঁকুড়া জেলায় প্রায় ৫৪ হাজার মৃত গ্রাহকের নামে রেশন উঠছে। ফলে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা সরকারী অর্থের অপচয় হচ্ছে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। খাদ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত চার বছরের হিসেব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যার সঙ্গে চালু থাকা রেশন কার্ড সংখ্যার বিস্তর ফারাক রয়েছে। আর সেই সংখ্যা সম্ভাব্য প্রায় ৫৪ হাজার। ঐ বিপুল সংখ্যক মৃত গ্রাহকের কার্ডে এখনও রেশন সামগ্রী তোলা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। দ্রুততার সঙ্গে মৃত গ্রাহকদের নাম চিহ্নিত করে ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা খাদ্যদপ্তর। আর এই কাজে পঞ্চায়েত থেকে পৌরসভায় সর্বত্র মৃতদের তালিকা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যে জেলায় যতটা সম্ভব ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা খাদ্যদপ্তরের আধিকারিক শেখ আলিমুদ্দিন বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মৃতদের রেশনকার্ড চিহ্নিত করে পরিবারের সদস্যদের ৭ নম্বর ফর্ম পূরণ করিয়ে তা বাতিল করার নির্দেশ এসেছে।

সেই মতো আমরা পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলির কাছ থেকে সাম্প্রতিককালের মৃতের তালিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি সেখানে ৭নম্বর ফর্ম রাখা হবে। ডেথ সার্টিফিকেট নেওয়ার সময় পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে ওই ফর্মে সই করানোর জন্য বলা হবে। সেই তথ্য রাজ্যে পাঠানো হবে। এছাড়াও পরিবারের কারও মৃত্যু হলে যেন ৭নম্বর ফর্ম পূরণ করে কার্ড সারেন্ডার করেন, সে ব্যাপারে প্রচার করা হবে।

খবরে প্রকাশ, এই মুহূর্তে জেলায় প্রায় ৪০লক্ষ রেশন গ্রাহক রয়েছেন। তার মধ্যে খাদ্য সাথী প্রকল্পে আর.কে.এস.ওয়াই-১ ও ২, অন্ত্যোদ্বয়, এস.পি.এইচ.এইচ ক্যাটাগরির কার্ড রয়েছে। বর্তমানে আর.কে.এস.ওয়াই-১ ক্যাটাগরির গ্রাহকরা প্রতি মাসে দু’কেজি চাল ও তিন কেজি গম পান। আর.কে.এস.ওয়াই-২ গ্রাহকরা ১ কেজি করে চাল ও গম পান। অন্ত্যোদ্বয় ক্যাটাগরিতে ১৫ কেজি চাল ও ১৯ কেজি আটা এবং এসপিএইএইচ গ্রাহকরা দু’কেজি চাল ও দু’কেজি ৮৫০ গ্রাম আটা পান। প্রত্যেক গ্রাহক বিনামূল্যে তা পান। সেই হিসেবে সম্ভাব্য ৫৪ হাজার মৃত গ্রাহকের রেশনের জন্য সরকার প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করছে।

See also  এক ক্লিকে দেখে নিন পূর্ব বর্ধমানের আজকের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

সূত্রের খবর, রেশন গ্রাহকদের কারও মৃত্যু হলে ৭ নম্বর ফর্ম পূরণ করে তা বাতিল করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু মৃতের কার্ড বাতিলের ব্যাপারে অনেক সময় সংশ্লিষ্ট পরিবারের আগ্রহ থাকে না। তাই প্রতিবছর মৃতের সংখ্যা অনুযায়ী রেশনকার্ড বাতিল হচ্ছে না। ওই কার্ডে বরাদ্দ রেশন সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। পরিবারের লোকজন তা তুলছেন। অনেক ক্ষেত্রে মৃত কার্ডের বরাদ্দ রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে তুলে নেওয়ার অভিযোগ আসে। বাঁকুড়ায় প্রায় ৫৪ হাজার মৃত ব্যক্তির নামে রেশন তোলা হচ্ছে বলে তথ্য উঠে আসায় আধিকারিকরা উদ্বিগ্ন। তাই সমব্যথী, ভোটার তালিকা সহ পঞ্চায়েত ও পুরসভার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির তালিকা সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরে তা বাতিল করা হবে।

‘ভূয়ো’ রেশন কার্ড বাতিল ইস্যুতে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে এম.আর.ডিলার অ্যাসোসিয়েশান। সংগঠনের জেলা সম্পাদক অরুপ পাল বলেন, আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা করতে চাই। মৃতের রেশন কার্ড বাতিল হোক তা চাই। আর একাজে তারা সর্বোতভাবে সাহায্য করবেন বলে তিনি জানান।
এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছে বিজেপি। দলের বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার বলেন, রাজ্য সরকার চায় এই ‘ভুয়ো কারবার চলুক’, তাই কেন্দ্রের ‘ওয়ান ন্যাশান ওয়ান কার্ড’ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে। কারণ এই ভুয়ো কারবারের ভাগ শাসক দলের নেতারাও পাবে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি