পরলৌকিক কাজ এখনও সম্পাদন হয় নি ।বাবার মৃত্যুশোক বুকে নিয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে প্রিয়া মাহাতো। মাত্র ১১ দিন আগে প্রয়াত হওয়া বাবার ইচ্ছা পূরণে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই অসৌচের লালপাড় সাদা শাড়ি পরিহিত হয়েই প্রিয়া পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে।পিতৃশোক কাটিয়ে প্রিয়া যাতে ভালকরে পরীক্ষা দিতে পারে তারজন্য তাঁর সহপাঠীরা প্রতিনিয়ত তাঁকে মনোবল যুগিয়ে যাচ্ছে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী প্রিয়া মাহাতো পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বৈদ্যডাঙ্গা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে হওয়া পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। নিজের স্কুলের ড্রেসের পরিবর্তে প্রিয়া যখন অসৌচের লালপাড় সাদা শাড়ি পরিহিত হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে বসছে তখন পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশও যঠেষ্ট আবেগঘন হয়ে পড়ছে।প্রিয়ার বাবা অনেক বয়সে মারা গেছেন এমনটা নয়। কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্রর ৩৮ বছর বয়সে প্রিয়ার বাবা মারা যান।এত অল্প বয়সে বাবার মৃত্যু হওয়ায় প্রিয়া সহ তাঁর পরিবারের সবাই গভীর ভাবে শোকাতুর হয়ে পড়েছেন ।
প্রিয়ার কথায় , তাঁর বাবাই ছিলেন,তাঁর বড় অনুপ্রেরণা। বাবার স্বপ্ন ছিল তাঁর মেয়ে প্রিয়া যেন ভালকরে পড়াশোনা করে মাধ্যমিক সহ জীবনের সকল পরীক্ষায়সফল ভাবে উত্তির্ণ হয়ে এগিয়ে যায় জীবনে।বাবার সেই স্বপ্নই পূরণ করতেই তাই বাবার শোক বুকে নিয়ে প্রিয়া পরীক্ষা দিতে বসেছে। বাবার শেষ ইচ্ছে পূরণের প্রিয়াও যেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত শিক্ষক সহপাঠী ও অন্য পরীক্ষার্থীরর অভিভাবকরা প্রিয়ার এই মানসিক দৃঢ়তা দেখে বিস্মিত ও গর্বিত।প্রিয়ার বন্ধুরাও তাঁকে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। সবার একটাই আশা—প্রিয়া মাধ্যমিকে ভালো ফল করে ওয়হর বাবার স্বপ্নপূরণ করুক।
পরীক্ষাকেন্দ্রে মঙ্গলবার ঢোকার আগে প্রিয়া জানায় ,“আমার বাবা চেয়েছিলেন আমি যেন যে কোন অবস্থাতেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিই। তাই এই বাবার মৃত্যুশোক বুকে নিয়েই আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছি। বাবার ইচ্ছা পূরণে এই লড়াই আমাকে লড়তেই হবে“।প্রিয়ার বান্ধবী অনিতা রায় জানায়, ’প্রিয়ার এই লড়াই তাদের সবার কাছেও প্রেরণা।’