পত্রিকায় একসময় প্রকাশিত হয়েছিল এক চাঞ্চল্যকর সংবাদ — “সোনা নয়, বন্ধক নেওয়া হয় রেশন কার্ডও”। সেই খবর থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বাংলা ছবি “রেশন কার্ড”, যার পোস্টার লঞ্চ হয়ে গেল সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক জমকালো অনুষ্ঠানে।

প্রিমিয়ার ফিল্মস প্রোডাক্সন্স নিবেদিত এবং অশোক গুপ্তা প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রটি একটি কাল্পনিক, কিন্তু বাস্তবঘেঁষা ২০০৮ সালের প্রেক্ষাপটে গড়ে ওঠা কাহিনি। বাংলার এক প্রান্তিক গ্রামের দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন সংগ্রাম এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের করুণ চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে এই ছবির গল্পে।
পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েনে কখনও মেয়ের বিয়ে, কখনও অসুস্থতার চিকিৎসার খরচ — এসব মেটাতে শেষ পর্যন্ত মানুষ বাধ্য হয় রেশন কার্ড বন্ধক রাখতে। এই সুযোগ নেয় গ্রামের ক্ষমতাবানরা। শর্ত জুড়ে দেয়, যতদিন না টাকা শোধ করা হয়, ততদিন রেশন কার্ড ফেরত মিলবে না — এমনকি রেশনের মালপত্রও পাওয়া যাবে না। এই অমানবিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী মহিলা রুখে দাঁড়ায়, কারণ সেও একসময় এই নিপীড়নের শিকার ছিল। ধাপে ধাপে সংগ্রাম করে সে হয়ে ওঠে গ্রামের মানুষের ভরসার প্রতীক এবং ন্যায়ের যোদ্ধা।
ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও অতিরিক্ত সংলাপ লিখেছেন জয়ন্ত উপাধ্যায়, এবং তিনি-ই পরিচালনার দায়িত্বে। চিত্রনাট্য নির্মাণে ছিলেন দেবজয় ব্যানার্জী।
সঙ্গীত পরিচালনায় রয়েছেন বাবুল বোস ও কুন্দন সাহা, গান লিখেছেন দেব প্রসাদ চক্রবর্তী ও স্মরণজিৎ ব্যানার্জী। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়, অন্বেষা দত্ত গুপ্ত, জোজো ও শ্রেষ্ঠা দাশগুপ্ত।
চিত্রগ্রহণে পার্থ রক্ষিত ও উজ্জ্বল মুখার্জী।
অভিনয়ে আছেন সুদীপ মুখার্জী, ভাস্কর ব্যানার্জী, অনামিকা সাহা, পিয়া দাস, মেঘনা হালদার, ছন্দা চ্যাটার্জী, নিমাই ব্যানার্জী, মুম্বইয়ের পরিচিত মুখ আলি খান এবং নবাগতা সমৃদ্ধা চক্রবর্তী সহ একগুচ্ছ দক্ষ শিল্পী।
পরিচালক জয়ন্ত উপাধ্যায় জানিয়েছেন, ছবিটি খুব শীঘ্রই কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
বাংলা ছবির দর্শকদের জন্য এই ছবি এক নতুন বাস্তবধর্মী অভিজ্ঞতা হয়ে উঠতে চলেছে, যা শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করবে।