বাবু সিদ্ধান্ত

পেটে ছুরি ঢুকিয়ে একমাত্র ছেলেকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হল বাবা । ধৃতের নাম আব্দুল সালেক । তার বাড়ি পূর্ব বমানের পূর্বস্থলীর হামিদপুরে । রবিবার গভীর রাতে গড়াগাছা বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । সোমবার ধৃতকে পেশ করা হয় কালনা মহকুমা আদালতে । তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার । বিচারক ধৃতকে চারদিন পুলিশী হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন । ধৃতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন মৃত যুবকের মা ও পরিজনরা ।
পুলিশ জানিয়েছে ,শনিবার রাতে ছেলে আলিমউদ্দিন শেখকে খুন করে ফেরার হয়ে যায় বাবা আব্দুল সালেক। ছেলেকে খুনের ঘটনা নিয়ে মা রেজিনা বিবি তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ আব্দুল সালেকের খোঁজ চালানো শুরু করে । রবিবার গভীর রাতে গড়াগাছা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে এদিন পুলিশ আদালতে পেশ করে হেপাজতে নিয়েছে ।মৃত যুবকের মা রেজিনা বিবি পুলিশ কে জানিয়েছেন , পাশের গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তার ছেলে আলিমউদ্দিনের । তার সঙ্গে সে প্রতিদিন ফোনে কথা বলতো। ছোট বোনের বিয়ের আগেই আলিমউদ্দিন ওই তরুণীকে বিয়ে করতে চেয়েছিল ।

ছেলের এই আবদার মেনে নিতে পারেনি তার বাবা আব্দুল সালেক । ফোনে তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবেনা বলেও আলিমউদ্দিনকে জানিয়ে দিয়েছিলেন আব্দুল সালেক । সেই নিষেধ না মেনে আলিমউদ্দিন শনিবার রাতেওদীর্ঘক্ষণ ওই তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে । তা দেখে বেজায় চটে যান সালেক । ছেলেকে সবক শেখানোর জন্য ওই দিন তিনি ধারাল ছুরি নিয়ে ঘরে বসে থাকেন । ছেলে আলিমউদ্দিন ঘরে ঢোকার পরেই বাবা আব্দুল সালেক তার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান । ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মা রেজিনা বিবিও আহত হন । খবর পেয়ে পূর্বস্থলী থানার পুলিশঘটনাস্থলে পৌছে রক্ত মাখা ছুরিটি উদ্ধার করে ।

যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ ও স্থানীয় মানুষজন হাসপাতালে নিয়ে যায় । সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক যুবককে মৃত ঘোষনা করেন ।পুলিশ সূত্রে জানাগিয়েছে ,‘ ধরা পড়ার পরেই নিজের দোষ কবুল করে নেন আব্দুল সালেক।পাশাপাশি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন ,ছোট মেয়ের বিয়ের আগে ওই তরুণীকে ছেলে বিয়ে করতে চাইছিল । তা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না । কান্নায় ভেঙে পড়ে আব্দুল সালেক পুলিশকে জানিয়েছেন , রাগের বশেই তিনি ছেলেকে খুন করে ফেলেছেন । এখন বারবার ছেলের মুখটা মনে পড়ছে।আমি যে আপরাধ করে ফেলেছি তার কোন ক্ষমা নেই । ’অন্যদিকে ছেলের মৃত্যু শোকে মা রেজিনা বিবি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
আরো পড়ুন-বর্ধমান শহরে আবারও কিছু নিয়ম জারি করেছে জেলা প্রশাসন
