প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১১জুন
মুরগির ছানা ভেবে আত্মীয় যে পাখি পুষতে দিয়েছিল সেটা যে আসলে ময়ূর তা ঘুনাক্ষরেও টের পাননি পরিবার সদস্যরা। কিন্তু পাখিটির আসল স্বরুপ যখন প্রকাশ্যে আসে ,ততদিনে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়।শুধুমাত্র মায়ায় পড়ে গিয়ে ময়ূরটিকে আর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে পারেননি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার আঝাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মীরেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র কিষ্কু।
আর বাড়িতে ময়ূরটিকে
আশ্রয় দিয়ে রাখাতেই এখন চুড়ান্ত বিপাকে পড়ে গিয়েছেন কিস্কু পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে ময়ূর পোষার কারণ নিয়ে বন দফতরে কর্মীদের
কাছে তাঁকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে।যদিও বন দফতরের লোকজন ময়ূয়টিকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানালে তাতে কিস্কু পরিবারের সদস্যরা সন্মতি দিয়েছেন।
ময়ূরটিকে খাঁচা বন্দি করতে শনিবার আঝাপুরের
মীরেপাড়া গ্রামে পৌছান বন দফতরের কর্মী দল এবং বর্ধমানের সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সংস্থার সদস্যরা।তারা পূর্ণচন্দ্র
কিস্কুর বাড়িতে পৌছে ময়ূরটিকে তাদের বাড়ির চালায় ও আশেপাশের গাছ গাছারি ঘেরা জায়গায় ময়ূরটিকে ঘোরা ঘুরি করতে দেখেন। কিন্তু সারাদিন ধরে অনেক চেষ্টা চালিয়েও বন ডফতরের কর্মীরা কিছুতেই ময়ূয়টিকে খাঁচা বন্দি করতে পারেন না।তবে হাল ছাড়েননি বন দফতরের কর্মীরা । দিন গড়িয়ে রাত হয়ে যাবার পরেও বন দফতরের কর্মীরা ময়ূরটিকে ধরার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাড়িতে ময়ূর পোষা নিয়ে পূর্ণচন্দ্র কিস্কু বা তাঁর পরিবারের কেউ এদিন সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি । তবে কিস্কু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সংস্থার পক্ষে অর্ণব দাস বলেন,
“পূর্ণচন্দ্র কিস্কু চাকুরিজীবী। পূর্ণচন্দ্র তাদের জানিয়েছে,প্রায় নয় মাস আগে পুরুলিয়া নিবাসী আত্মীয় খেপা কিস্কু তাদের বাড়িতে আসে।খেপা কিস্কু বলে দুটো মুরগির ছানা এনেছি,তোর বাড়িতে পুষবি। পূর্ণচন্দ্রর কথা অনুযায়ী ,তখন খেপা কিস্কুও জানতেন না মুরগির ছানা ভেবে যে দুটি পাখি তিনি দিলেন সেই দুটির একটি আদৌ মুরগির ছানা নয় ।
সেটা যে ময়ূরের ছানা সেটা পূর্ণচন্দ্র পরিবারেও কেউ তখন বুঝতে পারেন নি।
মুরগির ছানা ভেবে প্রতিপালন করার পর
একসময় তাঁরা বুঝতে পারেন তাঁরা একটি ময়ূর প্রতিপালন করছেন। বাড়ির অন্য মুরগিদের সঙ্গেই ময়ূরটি থাকতে শুরু করে । সারাদিন গ্রামের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ময়ূরটি সন্ধ্যায় পূর্ণচন্দ্রর বাড়িতে ফিরে আসে । ময়ূরটির প্রতি মায়া জন্মেযায় বাড়ির লোকজনের। তাই ময়ূরটিকে আর বাড়িথেকে হঠিয়ে দিতে পারেন নি“।
অর্ণব দাস বলেন ,পূর্ণচন্দ্র কিস্কু হয়তো মিথ্যা বলছেন না। তবে জাতীয় পাখি ময়ূর কোনভাবেই বাড়িতে পোষা যায় না । সেটা শাস্তিযোগ্য আপরাধ ।পূর্ণচন্দ্র কিস্কু ও তার পরিবারের লোকজনকে ময়ূরটি বনদপ্তরের হাতে তুলে দিতেই হবে।