আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

দলীয় পতাকা নয়, কাঁধে জাতীয় পতাকা! ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মিছিলে লকেট চট্টোপাধ্যায়, তীব্র আক্রমণে রাজ্য সরকার! পাল্টা জবাবে বিস্ফোরক জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

কল্যাণ দত্ত , পূর্ব বর্ধমান:-রবিবার পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান শহরে ভারতীয় সেনাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’ কর্মসূচি। বর্ধমান স্টেশন থেকে বিরহাটা পর্যন্ত আয়োজিত মিছিলে জাতীয় পতাকা হাতে অংশ নেন সাধারণ মানুষ ও বিজেপি নেতা-কর্মীরা। উল্লেখযোগ্যভাবে আয়োজিত মিছিলে কোনও দলীয় পতাকা ছিল না, দলীয় পতাকা না থাকা সত্ত্বেও উপস্থিত ছিলেন, বিজেপির রাজ্য নেত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। মিছিল শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন লকেট। লকেট বলেন, “যারা চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সরকার চুপ করে বসে আছে। সাধারণ মানুষ যেন এখন সেই দুর্নীতিবাজদের বাড়ি ঘেরাও করে তাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করেন”। তিনি আরও বলেন, “চাকরি প্রার্থীদের উপর পুলিশ দিয়ে লাঠিচার্জ করিয়ে সরকার মানুষের গলা টিপে ধরার চেষ্টা করছে। এটা ‘জোর যার মুলুক তার’-এর রাজনীতি। পুলিশ এখন তৃণমূলের চাকর-বাকরে পরিণত হয়েছে”।

শিক্ষক আন্দোলনে শিশুদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই লকেটের জবাব, “চাকরি চলে গেলে, রোজগার বন্ধ হলে মানুষ সন্তানদের কোথায় রাখবে? এই সরকারের লজ্জা হওয়া উচিত যে তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে”। তবে লকেটের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ মহম্মদ অপার্থিব ইসলাম (ফাগুন)। তিনি বলেন,”লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ বিজেপির নেতারা যতবার মুখ খোলেন, ততবার বুঝতে পারা যায় তাঁদের মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই। এরা একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নয়, বরং হতাশ, বিভ্রান্ত, দিশাহীন মানুষের মতো আচরণ করছেন। বাংলার মানুষ এদের বহুবার প্রত্যাখ্যান করেছে। লোকসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত—সব জায়গাতেই বিজেপি পিছিয়ে পড়েছে। তবুও এদের চোখে-মুখে লজ্জা নেই”। তিনি আরও বলেন, “যে নেত্রী একদিন তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেছিলেন, পরে অন্য দলে গিয়ে বাংলাকে গালি দিচ্ছেন, সেই নেতাদের মানুষের মনে কোনও জায়গা নেই। যারা আজ ‘এক পাতে খাই তো কাল অন্য পাতে’, সেই রাজনৈতিক দিশাহীনতার নাম বিজেপি। বাংলার মানুষ ঘৃণা করে এই সুবিধাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ।

See also  বন দফতরের অনুমতি ছাড়াই শতাধিক গাছ কাটায় মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাইয়ের নাম জড়ালো

পুলিশকে নিয়ে লকেটের মন্তব্যে কড়া ভাষায় আঘাত করেন অপার্থিব ইসলাম। তিনি বলেন,
“লকেট বলেছেন পুলিশ তৃণমূলের চাকর! এটা চরম অসভ্য ও দায়িত্বহীন মন্তব্য। বাংলার পুলিশ সারা দেশে পরিচিত তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের জন্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিজেপি নেতৃত্ব পুলিশের এই ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন। দেশের অন্যান্য রাজ্যে, বিশেষত ডবল ইঞ্জিন সরকারের অধীনে থাকা রাজ্যগুলিতে, প্রকাশ্যে পুলিশের কলার ধরা হয়, অথচ বাংলায় পুলিশ সর্বদা মানুষের পাশে থেকে কাজ করে চলেছে”। তিনি আরও যোগ করেন, “বিজেপির এখন একটাই কাজ—সমস্ত বিষয়কে রাজনীতিকরণ করা। শহিদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মতো গম্ভীর বিষয়কেও রাজনীতির হাতিয়ার করছে তারা। বিজেপি আর কিছু করতে পারে না, তাই শুধু বিভ্রান্তি ছড়ায়, উস্কানি দেয়, ঘৃণা ছড়ায়”। এই মিছিল ও পরবর্তী পাল্টা মন্তব্য ঘিরে পূর্ব বর্ধমানে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। একদিকে বিজেপির তোপ, অন্যদিকে শাসক দলের কড়া জবাব—রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে বলাই বাহুল্য।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি