গত কয়েক সপ্তাহে চারবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোন করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। কিন্তু মোদি তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে রাজি হননি—এমনটাই দাবি জার্মান সংবাদমাধ্যম ‘ফ্রাঙ্কফুর্টার অলজেমাইন’।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী মোদি বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি। ১০ আগস্ট তিনি খোলাখুলি সেই মন্তব্যের বিরোধিতা করে জানান, ভারত বিশ্বের শীর্ষ তিন অর্থনীতির মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার পথে এগোচ্ছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প চান বিশ্ব দেশগুলো আমেরিকার উপর নির্ভরশীল হোক। তবে মোদি স্পষ্ট করেছেন, ভারত সবসময় জাতীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দেবে। এদিকে ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত-মার্কিন বাণিজ্যচুক্তি আপাতত সম্ভব নয়। বরং ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

মার্কিন প্রশাসন প্রথম দফায় ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পর, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারতের তেল কেনার অর্থই রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্র চালাচ্ছে। যদিও নয়াদিল্লি স্পষ্ট করেছে, এই যুক্তি ভিত্তিহীন। ভারতের দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চিনসহ বহু দেশ রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস কিনছে, এমনকি আমেরিকাও রুশ পণ্যের ক্রেতা। তাই শুধুমাত্র ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো অন্যায়। ভারতের বক্তব্য, জাতীয় স্বার্থে যেখানে সস্তায় জ্বালানি পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই তেল কেনা হবে।
এদিকে সোমবার আহমেদাবাদের সভা থেকে মোদি কড়া বার্তা দেন— “শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের চাপ সহ্য করব না। মাথা নত করব না। আমাদের সরকার ঠিক রাস্তা খুঁজে বের করবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “ভারত এধরনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে এবং নাগরিকদের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেবে।” মোদির সংযোজন, “আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমাদের সরকার কখনই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, পশুপালক এবং কৃষকদের কোনও ক্ষতি হতে দেবে না।”