উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: শীত পড়ে গেছে, আর শীতের জনপ্রিয় জয়নগরের মোয়া ও প্রস্তুতের পথে।আর এই মোয়া তৈরির প্রধান উপাদান খেজুর গাছ থেকে উৎপাদিত নলেন গুড়।যত দিন যাচ্ছে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ।আগে জয়নগর ও বকুলতলা থানার এলাকার তুলসিঘাটা, ফুটিগোদা, সাহাজাদাপুর, নিমপীঠ,শ্রীপুর, বনমালিপুর,বহড়ু, মিঠানি,ময়দা, কাকাপাড়া, তাজপুর, জোড়াপুল, দক্ষিন বারাশত সহ একাধিক জায়গায় রাস্তার পাশে, নয়নজুলির পাশে অবহেলা, অনাদরে খেজুর গাছ দেখতে পাওয়া যেত।কিন্তু সময় যত এগিয়েছে বয়সের কারনে,জঙ্গল থেকে বসতি স্থাপনের কারনে খেজুর গাছ নস্ট হয়ে গেছে।

আর তার ফলস্বরুপ নলেন গুড়ের ভাঁড়ারে টান পড়েছে।আর তাই এবার সরকারের পাশাপাশি নড়েচড়ে বসেছে জয়নগরের মোয়া কারবারিরা।আর জয়নগরের প্রাচীন মোয়া ব্যবসায়ী খোকন দাস তার ব্যবসার ৩৫ বছরকে সামনে রেখে শনিবার জয়নগর বিধানসভার ফুটিগোদা গ্রাম পঞ্চায়েতের তুলসিঘাটা কাটা খালের পাশে ৩৫ টি খেজুর গাছ বসালেন।এদিন এই গাছ বসাতে এগিয়ে আসেন জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস।এই উপলক্ষে সেখানে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস,ফুটিগোদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রীণা মন্ডল,জয়নগর অবর স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ, শিক্ষক কনক কান্তি ঘোষ,ভবানী সরকার,এদিনের অনুষ্ঠানে আয়োজক খোকন দাস, রাজেশ দাস সহ আরো অনেকে।

এদিন বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস বলেন, খেজুর গাছ ক্রমশ কমে যাওয়ায় ভালো মানের জয়নগরের মোয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খাদ্য প্রেমীরা। আর এই মোয়াকে বাঁচাতে বেশি করে খেজুর গাছ লাগাতে হবে আমাদের।সাথে গাছ গুলির পরিচর্যার দিকে ও নজর দিতে হবে।খোকন দাস নিজে এগিয়ে এসেছেন। ওনার এই কাজকে স্বাগত জানাই।পাশাপাশি চাইবো তার মতো আরও মোয়া ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসে খেজুর গাছ বসাক ও পরিচর্যা করুক, যাতে আগামী দিনে নলেন গুড়ের ভাঁড়ার শেষ না হয়।

আর আমি জয়নগর বিধানসভার একাধিক হোবগা খাল আমি কিছুদিন আগে সংস্কার করিয়েছে সেচ দফতর সহায়তায় সেই খালের পাশে লাইন দিয়ে অনেক খেজুর গাছ বসানো যেতে পারে।মোয়া ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসলে আমি তাদের পাশে থেকে এই খেজুর গাছ বসানোর কাজে সহায়তা করবো।এদিন এব্যাপারে খোকন দাস বলেন,১৯৯০ সালে আমি জয়নগরে মা কালি সুইটস এর হাত ধরে জয়নগরের মোয়া তৈরির কাজ শুরু করি।আর সেই কাজ ৩৫ বছরে পড়লো।আর তাই ৩৫ তম বর্ষের জন্মদিনটা খেজুর গাছ বসানোর মধ্যে দিয়ে পালন করলাম।
খেজুর গাছ কমে গেছে, বয়স জনিত কারনে বহু গাছ মারা গেছে,নতুন করে এই গাছ হচ্ছে না।তাই জয়নগরের মোয়া কে বাঁচাতে আসল নলেনগুড়ের তৈরি মোয়া খাদ্যপ্রেমী মানুষের হাতে তুলে দিতে আমি এই খেজুর গাছ বসানোর উদ্যোগ নিই।আর এই গাছ গুলোর পরিচর্যা ও আমি করবো।আর খোকন দাসের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন খাদ্য প্রেমিক মানুষ জন।








