সংসদে দাঁড়িয়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন, মিথ্যা বলা কিংবা না–জেনে স্বরচিত মন্তব্য—বিরোধীপক্ষের অভিযোগ, বর্তমান রাজনীতিতে এই প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। জনগণের সামনে দায়িত্বশীল আচরণের পরিবর্তে কিছু নেতার মন্তব্য গণতান্ত্রিক পরিবেশকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সম্প্রতি বাংলার বেকারত্ব নিয়ে বিতর্ক ঘনিয়েছে। কখনও বাংলার ইতিহাস ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে, আবার কখনও মন্ত্রীদের বক্তব্যে দেখা যাচ্ছে অসঙ্গতি। রাজনৈতিক নেতারা যখন তথ্য-ভিত্তিক বক্তব্যের বদলে বিভ্রান্তিকর দাবি করেন, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ তৈরি হয় বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষক- দের।
প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা নিয়ে বিভ্রান্তি, কিংবা জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য—এসব মিলিয়ে বিরোধীদের দাবি, রাজনৈতিক ভাষা ও আচরণের শালীনতা ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। অন্যদিকে শাসকদলের বক্তব্য—বিরোধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে।
এই অবস্থায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ মোঃ অপার্থিব ইসলাম। তাঁর প্রশ্ন—“বিজেপি কোন ভারতবর্ষের ছবি দেখাচ্ছে দেশের মানুষকে”?
অপার্থিব ইসলামের বক্তব্য, “সংসদে দাঁড়িয়ে ভুল তথ্য দেওয়া, মিথ্যে বলা, কিংবা না জেনে স্বরচিত মন্তব্য করা—এগুলো এখন বহু বিজেপি নেতার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর থেকেই এই ঔদ্ধত্য আরও বেড়েছে। কখনও বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস বিকৃত করে বলা হচ্ছে, কখনও মনীষীদের নাম টেনে এনে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টাকে ‘বঙ্কিমদা’ বলে দিলেন—যা সম্পূর্ণ ভুল। বিপ্লবী পুলিনবিহারী দাসকে ‘পুলিন বিকাশ’ বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের নায়ক সূর্যসেনকে ‘মাস্টার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—যেন ইতিহাসের দায় আর সত্য-মিথ্যার বিভাজন সবই গুলিয়ে ফেলেছেন তাঁরা”।
তিনি আরও বলেন, “বিচারপতি থেকে সাংসদ হওয়া অম্লান বদন সংসদে দাঁড়িয়ে ‘নরেন্দ্র বাজপেয়ি’ বলে ফেললেন। আবার এক মন্ত্রী ‘বন্দেমাতরম’কে ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনের সঙ্গে গুলিয়ে দিলেন! তারপরও নিজেদের দেশের সেবক বলে দাবি করেন! এসব ভুল শুধু হাস্যকর নয়, জনগণের কাছে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার নমুনা”।
অপার্থিব ইসলামের মতে, এ ধরনের মন্তব্য ও ভুল তথ্য গণতন্ত্রের মান কমিয়ে দেয় এবং তরুণ প্রজন্মের সামনে বিভ্রান্তিকর উদাহরণ তৈরি করে।








