রাজ্য সরকারের এবার নতুন প্রকল্পের নাম প্রসব সাথী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এ যেন এক অভিনব উদ্যোগ। ইতিপূর্বে অন্তঃসত্ত্বারা এতদিন প্রসবের সময় বাড়ির কাউকেই পাশে পেতেন না। শুধু হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ছাড়া বাড়ির কোনও সদস্যেরই থাকার নিয়ম ছিল না। প্রসবের সময় বিভিন্নধরনের ভীতিতে ভোগেন মায়েরা।
প্রসবের আগে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পক্ষে ক্ষতিকারক বলেই মনে করেন চিকিৎসকেরা। এছাড়াও প্রসবের সময় অন্তঃস্বত্তাকে হাঁটানো এবং অন্যান্য বিশেষ পজিশনে রাখা প্রয়োজন হয়। তাছাড়া, কঠিন সময়ের সময় অন্তঃস্বত্তাকে কাছে তার মা বা কাছের কেউ থাকলে প্রসূতিকে তারা মানসিকভাবে সাহস যোগাতে পারেন। সেই কথা বিবেচনা করেই অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামী অথবা মাকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দিল রাজ্য সরকার।

প্রসবের সময় মহিলার মনোবল বাড়াতে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কর্তৃক গৃহীত নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে এবং দেশেপ্রসবকালীন সময়ে প্রসূতির সঙ্গীর উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই চালু রয়েছে। এবার সেই পথেই হাঁটলো রাজ্য সরকার। সরকারি হাসপাতালের পাশাপশি জেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদনগুলোতে এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে।
সিজারের ক্ষেত্রে এই সুবিধা থাকবে না। প্রসব সাথী উদ্যোগের ফলে প্রসবের সময় অন্তঃস্বত্তার স্বামীও লেবার রুমে থাকতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে অন্যান্য প্রসূতিদের গোপনীয়তা বজায় রাখার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই নজর দিতে হবে। প্রসব সাথীরা যাতে লেবার রুমে ঢুকতে পারেন তার জন্য তাদের বিশেষ কার্ড বা ব্যাজ দেওয়া হবে। যেহেতু তারা মা এবং সদ্যজাত সন্তানের দেখাশোনা করবে তাই তাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক আশাক পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানতে হবে কোভিড বিধি। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, যে সমস্ত হাসপাতালে বেডের সংখ্যা কম রয়েছে সেই সমস্ত হাসপাতালগুলোতে বেড বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।