বর্ধমান উৎসব ময়দানে আয়োজিত ৪৮তম বইমেলা প্রাঙ্গণে এক অভিনব ও শিক্ষণীয় দৃশ্যের সাক্ষী রইলেন মেলা দর্শনার্থীরা। ‘অভিযান’ গোষ্ঠীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো “সাইবার সচেতনতা ও প্রতিকার” শীর্ষক এক বিশেষ কর্মসূচি। অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর স্নেহাশিস চৌধুরী।
কর্মসূচির সবচেয়ে আলোচিত পর্ব ছিল হাতেকলমে সাইবার হ্যাকিংয়ের সরাসরি প্রদর্শন। উপস্থিত দর্শক ও বইপ্রেমীদের সামনে এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কীভাবে খুব সহজেই সাইবার হ্যাকাররা প্রবেশ করতে পারে, তার বাস্তব ডেমো দেখান পুলিশ আধিকারিক। এই দৃশ্য দেখে প্রথমে সকলেই বিস্মিত হয়ে পড়েন। এসআই স্নেহাশিস চৌধুরী ব্যাখ্যা করে জানান, মানুষের একটি ছোট্ট অসাবধানতাই কীভাবে হ্যাকারদের হাতে তুলে দিতে পারে যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাঙ্কিং তথ্য ও গোপন নথি।
ডেমো শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেই পুলিশকে ধন্যবাদ জানান এবং উপস্থিত সকলেই সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে এক নতুন বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেন। দ্রুত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল যুগে সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা রুখতেই এই সচেতনতা কর্মসূচি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। পুলিশ আধিকারিক এদিন যে সমস্ত সাইবার প্রতারণার বিষয়ে বিশেষভাবে আলোকপাত করেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—ব্যাঙ্ক জালিয়াতি ও ওটিপি প্রতারণা। ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর নামে প্রতারণা।
‘এসআইআর’-এর নাম করে ওটিপি চাওয়ার নতুন কৌশল। পাশাপাশি, তিনি স্মার্টফোন নির্ভর বর্তমান প্রজন্মে বাড়ির খুদে সদস্যদের অনলাইন ব্যবহার কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সেই বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশ দেন।মেলায় উপস্থিত সাধারণ মানুষ এই উদ্যোগকে অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করেন। তাঁদের বক্তব্য, বর্তমান সময়ে পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল সুরক্ষা ও সাইবার সচেতনতাও সমানভাবে জরুরি। বর্ধমান বইমেলার বুকে এমন বাস্তবভিত্তিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য উদ্যোগ বলে মনে করছেন সকলেই।








