কল্যাণ দত্ত :- বছরের বিভিন্ন ঋতুতে বিশেষ বিশেষ পিঠা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাছাড়া বাড়িতে অতিথি এলে কম করে হলেও দু’তিন পদের পিঠা খাওয়া গ্রামবাংলার মানুষের চিরায়ত ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত। কালের বিবর্তণে সেই ঐতিহ্য এখন ম্লান হয়ে আসছে। তবে শীত এলে বাংলার ঘরে ঘরে এখনো পিঠা তৈরির উৎসব শুরু হয়। অগ্রহায়ণের নতুন চালের পিঠার স্বাদ সত্যিই বর্ণনাতীত। শীতের পিঠার স্বাদের কথা বলতে গিয়ে অনেকেই ছন্দে ছন্দে বলেন, ‘শীতের পিঠা ভারি মিঠা’।
চুলার পিঠে বসে পিঠা খাওয়ার শৈশব স্মৃতি সবারই কম বেশি রয়েছে। ‘পৌষ-পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে, আরও উল্লাস বাড়িয়েছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে।’ এক সময় শুধু গ্রামের মানুষই পিঠা খেত। শহুরে ব্যস্ততার কারণে পিঠার স্বাদ নিতে নগরজীবীদের কেউ গ্রামে গিয়ে পিঠা খেয়ে আসতো। অথবা গ্রাম থেকে শহরে বসবাসকারী প্রিয়জনদের জন্য পিঠা তৈরি করে পাঠাতো কেউ কেউ। কিন্তু এখন সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্যপটও আমূল বদলে গেছে। গ্রামের মত শহরেও শীতের সব ধরনের পিঠা পাওয়া যেত ।


বিগত দিনে শীত এলে গ্রাম্য মেলায় পিঠা উৎসবের আয়োজন হয়ে থাকে। বাবা-মার সঙ্গে দলে দলে শিশু-কিশোরদের পিঠা উৎসবে আসতে দেখা যায় ।।শীতের মজাদার পিঠার মধ্যে রয়েছে ভাপা, পাটিসাপটা, পুলি, মিঠা, ক্ষীরপুলি, নারকেলপুলি, আনারকলি প্রভৃতি। শীতের সকালের কুয়াশা কিংবা সন্ধ্যার ঠান্ডা বাতাসে ভাপা পিঠার গরম আর সুগন্ধি ধোঁয়ায় মন ব্যাকুল হয়ে উঠতো একসময় । কিন্তু এখন পিঠের রমরমা খুব একটা নেই। তাই বলা যায়, পিঠা ছাড়া শীত সত্যিই জমে না। গ্রামের ঘরে ঘরে আবার ফিরে আসুক শৈশবের স্মৃতি পটে থাকা পিঠের হৈ চৈ।