আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

গুলি করে ও শ্বাসনলী কেটে দিয়ে টোটো চালককে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার গৃহশিক্ষক ও তাঁর অনুগত এক ছাত্র

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও বাদশা সেখ ( বর্ধমান ) :- ছাত্রীর মায়ের সঙ্গে গৃহ শিক্ষকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে পথের কাটা হয়ে উঠেছিলেন টোটো চালক স্বামী।তারই বদলা নিতে অনুগত ছাত্রকে দিয়ে ছাত্রীর বাবাকে গুলি করে খুন করানোর পর মৃত্যু নিশ্চিৎ করতে গৃহশিক্ষকই কেটেদেন ছাত্রীয় বাবার শ্বাসনালী ।পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বড়ধামাস গ্রাম নিবাসী টোটো চালক পিন্টু পাল(৩৪) কে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনার পুলিশি তদন্তে উঠে এল এমনই রোমহর্ষক ঘটনাপঞ্জি ।

জেরায় খুনের ঘটনার কথা কবুল করার পরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক জিতেন ঘোষ এবং তাঁর অনুগত ছাত্র দিব্যেন্দু ঘোষ ওরফে কালু নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে । ওইদিনই দুই অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে খুনের ঘটনার পুননির্মান করায় পূর্বস্থলীর থানার পুলিশ।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , রোমহর্ষক এই খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১৪
ফেব্রুয়ারি রাতে।অন্যান দিনের মতো ওই দিনও টোটোচালক পিন্টু পাল সন্ধ্যার পর টোট নিয়ে বড়ধামাস গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন ।বাড়ি ফিরে বাড়ির অদুরে তিনি তাঁর টোটোর ব্যাটারি চার্জে বসিয়ে দিয়ে এসে রাতের খাওয়া সারেন । ঘুমাতে যাওয়ার আগে
তিনি তাঁর টোটোটি চার্জ দেওয়ার জায়গা থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে যান । সেই রাতেই
খুন হন টোটো চালক । টোটো চার্জ দেওয়ার জায়গার কাছেই আততায়ীরা গুলিকরে ও শ্বাসনালী কেটেদিয়ে তাকে খুন করে পালায় ।
সেই খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায় । পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই হাতে আসতে শুরু করে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য ।


তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের কথায় জানা গিয়েছে ,করোনা পরিস্থিতির সময়ে জয়পুরে সোনার কাজ ছেড়ে পূর্বস্থলীর বড়ধামাস গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে পিন্টু । তিনি বাড়ি ফিরে টোটো চালানো শুরু করেন।পিন্টু ভিন রাজ্যে থাকার সময়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর মেয়ের গৃহ শিক্ষক জিতেনের ।তারই মধ্যে পিন্টু বাড়ি ফিরে আসায় সবথেকে বেশী রুষ্ট হন গৃহশিক্ষক । পথের কাঁটা সরাতে ঠান্ডা মাথায় একেবারে পরিকল্পনা করে পিন্টুর মেয়ের গৃহশিক্ষক জিতেন খুনের পরিকল্পনা কষে পিন্টুকে । পুলিশ খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছে পিন্টু অবিবাহিত নয় । ইতিমধ্যেই সে তিন তিনটি বিয়ে সেরে ফেলেছে । তাঁর প্রথম স্ত্রীর অকাল মৃত্যু হয়েছে ,আর আত্মঘাতী হয়েছে দ্বিতীয় স্ত্রী। বাড়িতে তিন নম্বর স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও
টোট চালক পিন্টুর স্ত্রীর সঙ্গে সে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলে । জিতেন খুনের কাজে তাঁর সঙ্গী হিসাবে বেছে নেয় স্থানীয় লক্ষীপুর গ্রাম নিবাসী একসময়ের অনুগত ছাত্র কালু ঘোষ নামে এক যুবককে। তারা দুজনেই পিন্টুর গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো করে।পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র রাতে টোটো চার্জ দেওয়ার জায়গার কাছেই তারা পিন্টুকে খুন করে।এদিন পুননির্মানের সময়ে যুবক কালু ঘোষ ঘটনাস্থলে দাড়িয়েই পুলিশকে বলে ,সেই প্রথম পিন্টুকে গুলি করলে। দেহে গুলি লাগার পর পিন্টু ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে।তারপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে জিতেন ঘোষ ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিন্টুর গলার নলি কেটে দেয় । এরপর দুই জনেই ঘটনাস্থল ছেড়ে সড়ে পড়ে ।তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে,পিন্টুকে খুন করার জন্য কালু যে ওয়ান শটার রিভালবারটি ব্যবহার করেছে সেটি তার বাবার । কালুর বাবা দাগী দুস্কৃতি হিসাবেই এলাকায় পরিচিত ছিল । কয়েক বছর আগে তিনি মারা গিয়েছেন । এক সময়ে যে কালুকে লেখাপড়ার পাঠ দিয়েছিলেন তাকে খুনের পাঠ দিয়ে জিতেন তৈরি করে নেন বলে জেরায় পুলিশের কাছে কবুল করেছে ।


সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ শুক্রবার দুই ধৃতকে পেশ করা হয় কালনা মহকুমা আদালতে। খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেআস্ত্র উদ্ধার ও তদন্তের প্রয়োজনে দুই ধৃতকে ১৪ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার । বিচারক দুই ধৃতকে ৮ দিন পুলিশ হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক সাজার দাবি তুলেছেন মৃতর পরিজন ও এলাকাবাসী ।


জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস এদিন ছানিয়েছেন,‘ টোটোচালককে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।ঘটনার পুননির্মান করা হয়েছে।অপরাধীরা তাদের অপরাধ কবুল করেছে । শুক্রবার ধৃতদের আদালতে পেশ করে তদন্তের প্রয়োজনে হেপাজতে নেওয়া হয়েছে । ’

See also  বিজয় তোরণকে সাজানোর কাজ শুরু হলো

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি