প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- হাসপাতাল নয় , সাত দিন ধরে বাড়িতে রেখেই চলছিল জ্বরে আক্রান্ত বৃদ্ধার চিকিৎসা।তাতে সুস্থ হয়ে ওঠা তো দূরের কথা উল্টে আরো আরো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভার উচিৎপুর গ্রাম নিবাসী বৃদ্ধা সুচিত্রা যশ(৫৯)।বুধবার দুপুর থেকে জ্বরের সাথে তাঁর প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ।
এরপর গ্রামের চিকিৎসকের ওপরে আর ভরাসা না রেখে পরিবারের লোকজন এদিন সন্ধায় সুচিত্রাদেবীকে ভর্তি করেন জামালপুর ব্লক হাসপাতালে। হাসপাতালে তাঁর অ্যান্টিজেন টেস্ট হতেই ’করোনা পজিটিভ’ রিপোর্ট আসে। করোনার চিকিৎসার জন্য বৃদ্ধাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ভর্তির পর ঘন্টা খানেকের মধ্যেই জামালপুর হাসপাতালে বৃদ্ধা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
মৃতার ছেলে দেবীপ্রসাদ যশ বলেন ,সাত দিন ধরে তাঁর মা জ্বরে ভুগছিলেন।স্থানীয় সাঁকটিয়া এলাকার একজন চিকিৎসক তাঁর মায়ের চিকিৎসা করছিলেন । ওষূধ খেলেও জ্বর আসছিল , আবার ছেড়ে যাচ্ছিল । ওই চিকিৎসকের কথা মতো মঙ্গলবার জামালপুর হাসপাতালে তাঁর মায়ের মালেরিয়া ও টাইফয়েডের পরীক্ষা করান । করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে মায়ের জ্বর হয়ে থাকতে পারে এমন কথা ওই চিকিৎসক কিছু বলেন নি ।দেবীপ্রসাদবাবু বলেন ,এদিন দুপুরের পর থেকে তার মায়ের জ্বর বাড়ার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টও খুব বেড়ে যায় । সন্ধ্যায়
জামালপুর হাসপাতালে বৃদ্ধা মাকে ভর্তি করেন।
অক্সিজেন দিয়ে মায়ের চিকিৎসা শুরু হয় । একই সঙ্গে চিকিৎসকরা তাঁর মায়ের অ্যান্টিজেন টেষ্টও করান । তখনই ধরা পড়ে তাঁর মা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন । করোনার চিকিৎসার জন্য তাঁর মাকে বর্ধমান হাসপাতালে রেফার করা হয় । অ্যাম্বুলেন্স আসার আগেই তাঁর মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ।আক্ষেপ প্রকাশ করে দেবীপ্রসাদ বাবু বলেন , প্রথম দিন জ্বর আসার পরেই যদি মায়ের করোনা পরীক্ষাটা করাতেন তাহলে হয়তো এতদিনে মাকে অনেকটা সুস্থ করে ফেলতে পারতেন ।স্বাস্থ্য দপ্তরের হাজারো সচেতনতা প্রচার সত্ত্বেও গ্রামীন এলাকার মানুষজন করোনার উপসম ও তার চিকিৎসা নিয়ে যে এখনও অন্ধকারে রয়েছেন তা এই ঘটনা আরো একবার সামনে এনেদিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।
বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষ বলেন ,“পরিবারের লোকজন বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তাঁর উপশম দেখেই চিকিৎসকরা অ্যান্টিজেন টেষ্ট করান ।তখনই তাঁর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে । তাঁকে বর্ধমান হাসপাতালে রেফার করা হলেও অ্যাম্বুলেন্স আসার আগেই বৃদ্ধা মারা যান” । করোনা বিধি মেনে বৃদ্ধার দেহ সৎকারের বিষয়ে প্রশাসনিক ততপরতা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।