মালদাঃ- বৃদ্ধা মাকে একমাত্র গুনধর ছেলে কথা দিয়েছিল জমি ও ভিটেবাড়ি তার নামে করে দিলে মাকে আমৃত্যু পর্যন্ত দেখাশোনা করবে ও পাশে রেখে খাওয়াবে।দেখাশোনা তো দূরের কথা মায়ের মুখে একমুঠো ভাতও তুলে দেয় না গুনধর ছেলে।দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে একঘর হয়ে একাই দিন যাপন করছেন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা তহমিনা বেওয়া। অভাবের সংসারে কখনো অনাহারে আবার কখনো অর্ধাহারে থাকতে হয় তাকে।
স্বামী মারা যাওয়ার কুঁড়ি বছর কেটে গেলেও হয়নি বিধবা ভাতা।ভাতার করিয়ে দেওয়ার আশায় যার কাছে গেছে সেই তাকে ৫০০-১০০০ টাকার দাবি করেছে।টাকাও দিয়েছেন। হয়নি ভাতা!
জানা যায় তহমিনা বেওয়ার তিন মেয়ে ও এক ছেলে।ছেলে ও মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী মহম্মদ আনিস প্রায় কুঁড়ি বছর আগে হৃদয় রোগে মারা গেছে। বুকে এক রাশ আশা ছিল স্বামী বেঁচে না থাকলেও এক মাত্র ছেলে হামেদুল ইসলাম (৩০) মাকে আগলে রাখবে।ছেলে বিয়ে করতে না করতেই বৃদ্ধা মাকে আলাদা করে মায়ের সব সম্পত্তি নিজের নামে করে নেয়। তবুও আশায় বুক বেঁধে ছিল বিধবা মা,ছেলে না দেখলেও বউমা তাকে দেখবে। কিন্তু বউমাও ছেলের পথে হাঁটলো।
সেই থেকে একাই দিনগুজরান করছেন তহমিনা বেওয়া। রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়িয়ে দিয়েছেন তবুও সাহায্য করতে আসেনি কেউ।

তহমিনা বেওয়া জানান, স্বামী কুঁড়ি বছর আগে মারা গেছে। একমাত্র ছেলে বিয়ে করে মাকে ছেড়ে আলাদা সংসার করছে।জমি ও বাস্তুভিটা ছেলের নামে করে দিয়েছে।ছেলে মাকে দেখাশোনার কথা দিলেও দেখে না।শরীরের চামড়া কুঁচকে গেছে। চুলে পাক ধরেছে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষিনো হয়ে আসছে।রোজগার বলতে কিছু নেই। অভাবের সংসারে শুকনো মুড়ি,পান্তা ভাত ও শাকপাতা খেয়ে দিন গুজরান করেন। কখনো কখনো প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চেয়ে খাবার জোগাড় করেন।তিন মেয়েও জমির ভাগ নেওয়ার পর মায়ের আর কোনো খোঁজখবর নেই না বলে আক্ষেপের সুরে জানান।
মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মহম্মদ গোলাম মর্তুজা জানান তহমিনা বেওয়া ছেলের নামে সব সম্পত্তি করে দিলেও শেষ বয়সে বৃদ্ধা মাকে দেখে না ।গ্রামে ছেলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসেছে। কিন্তু ছেলে বৃদ্ধা মাকে খাওয়াতে নারাজ। স্বামীর মৃত্যু সার্টিফিকেট না থাকায় আজও পর্যন্ত বিধবা ভাতা চালু হয়নি।