বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভূত অগ্রগতীর যুগেও অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কাররে বশবর্তী হয়ে রয়েছেন গ্রাম গঞ্জের মানুষজন ।এটা যে নিছক কথার কথা নয় তার প্রকৃষ্ট প্রমান মিলেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে মাঝের গ্রামে ।ডাইনি অপবাদ দিয়ে মাঝেরগ্রাম উত্তর পাড়ার এক মহিলার গোটা পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠে কয়েকজন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে । ঘটনা জানার পরেই নড়ে চড়ে বসে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ । কড়া পদক্ষেপ নিয়ে পুলিশ ঘটনায় জড়িত এক গুনিন সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে ।
পুলিশ জানিয়েছে ,ধৃতদের নাম ধনঞ্জয় বৈরাগ্য , কেনা মাঝি ,সুকুমার ধারা , হারু মাঝি ও রাজু মাঝি। এদের মধ্যে গুনিন হলেন ধনঞ্জয় বৈরাগ ।তাঁর বাড়ি কাটোয়ায় । বাকি চার ধৃত নির্যাতিত পরিবারের প্রতিবেশী । সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ বুধবার ধৃতদের পেশ করে কালনা মহকুমা আদালতে । যদিও বিচারক পাঁচ জনেরই জামিন মঞ্জুর করেছেন ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে , মাঝের গ্রাম উত্তর পাড়ায় বসবাস করেন সরস্বতী সাঁতরা ও তাঁর পরিবার । ওই পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ কিছুদিন আগে কাটোয়ার ওই গুনিন ব্যক্তি তাঁদের গ্রামে আসেন । তিনি নিদান দেন গ্রামে এক ডাইনি রয়েছে ।তার জন্যই গ্রামের মানুষজনের ক্ষতি হচ্ছে । অবিলম্বে গ্রামের ওই ডাইনিকে দূর করতে হবে। না হলে ক্ষতি থেকে গ্রামবাসীদের মুক্তি মিলবে না।
গুনিনের কথা মতো প্রতিবেশীদের কয়েকজন সরস্বতী সাঁতরাকে ডাইনি চিহ্নিত করে । এরপর তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে একঘরে করেদিয়ে নানা ভাবে নির্যাতন চালানো শুরু করে বলে অভিযোগ ।এই নির্যাতনের কথা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিও অফিসেও জানান সরস্বতী সাঁতরা ও তাঁর পরিবার । ঘটনা জানার পরেই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ঘটনায় জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চালাচ্ছে । সাঁতরা পরিবারের সদস্যরা এদিন বলেন ,অভিযুক্তরা সবাই গ্রেফতার হয়নি । তাই এখনও আতঙ্কেই রয়েছেন ।
পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সহ সভাধীপতি দেবু টুডু এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভূত উন্নতি ঘটেছে ষারা বিশ্ব জুড়ে ।সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তার সুবিধা উপভোগ করছে । তাস্ত্বেও গ্রামে গঞ্জের কিছু মানুষ কুসস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস মুক্ত হতে পারছেন না ।তারা ডাইনি ,ভুত প্রেত এসব অাঁকড়ে বসে আছে । দেবু টুডু জানিয়েছেন, মাঝেরগ্রাম উত্তর পাড়ার মানুষজনকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে ।