আরামবাগ, হুগলি: হুগলি জেলার আরামবাগ শহরে এই প্রথম এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হানায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মূলত একটি চিটফান্ড কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে এই অভিযান চালানো হয়েছে। ইডি অফিসারদের সাথে সিআরপিএফ জওয়ানরাও এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন এবং প্রায় ২৫ থেকে ৩০টি গাড়ি শহর জুড়ে ঘোরাঘুরি করছে।
চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মূল হোতা ও তার সহযোগীরা:-

জানা গেছে, আরামবাগের এলএফএস ব্রোকিং সংস্থার কর্ণধার জিয়াজুর রহমান এই চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত। এর আগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং তিনি বর্তমানে উড়িষ্যার কটক জেলে বন্দী আছেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ‘টাকা ডবল’-এর আশায় এই এলএফএস সংস্থায় টাকা রেখেছিল, কিন্তু জিয়াজুর রহমান সমস্ত টাকা লুট করে পালিয়ে যান। যদিও জিয়াজুর রহমান পলাতক ছিলেন, তার বেশ কয়েকজন সহযোগী আরামবাগেই বসতি স্থাপন করে রেখেছিল।
ইডির অভিযান ও তল্লাশি:-
কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর পেয়ে আজ গোটা আরামবাগ শহর জুড়ে তাদের বাড়িতে ইডি হানা দেয়। প্রায় পাঁচটি বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাসুদেবপুর এক নম্বর ওয়ার্ডের অলোক রায়ের বাড়ি, আরামবাগের পারুল দুই নম্বর ওয়ার্ডের সৌরভ অধিকারীর বাড়ি, বিবেকানন্দ পল্লী ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের দিলীপ মাইতির বাড়ি এবং আরামবাগ বসন্তপুর আমতলা ঘণাপাড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের হামিল শেখের বাড়ি।

এছাড়াও, এলএফএস ব্রোকিং সংস্থার মালিক জিয়াজুর রহমানের আরেকটি বড় ব্যবসা, ‘আরামবাগ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট’, ইডি আধিকারিকরা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
গতকাল রাত থেকে শুরু হওয়া এই তল্লাশি অভিযান আজ বেলা গড়িয়ে গেলেও চলছে এবং পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিলীপ মাইতিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে ইডি অফিসাররা তুলে নিয়ে গেছেন। অন্যান্য বাড়িতেও তল্লাশি চলছে এবং এই ঘটনায় আর কার কার নাম জড়িয়ে আছে, ইডি সে বিষয়ে তদন্ত করছে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ:-
আরামবাগে এই প্রথম ইডির হানা পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানান, অন্যান্য শহরে ইডির হানা টিভির পর্দায় দেখা গেলেও, আরামবাগে এমন ঘটনা এই প্রথম। ফলে শহরের প্রত্যেক বাসিন্দার মধ্যে এক ধরনের উৎকণ্ঠা কাজ করছে।