উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: মোবাইলে যুগে বই পড়ার অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে মানুষ।আর সুন্দরবনে এবার কিশোর যুবকদের বইমুখী করতে গাছ তলায় চালু হয়েছে দুর্গাচরণের বর্ণ পরিচয় কেন্দ্র।যা ইতিমধ্যেই এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছে। দিনের পর দিন শিশু, কিশোরদের মোবাইলে আশক্তি বাড়ছে। স্কুল, কলেজে গেলেও বইমুখী হতে চাইছে না অনেকেই। তাই গ্রামের শিশু,কিশোরদের কথা মাথায় রেখে একটা আস্ত লাইব্রেরী খুলে ফেলেছেন সুন্দরবনের বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ নম্বর আমঝাড়া গ্রামের বাসিন্দা দুর্গাচরন রায়।
নাম দিয়েছেন বর্ণ পরিচয় কেন্দ্র।পেশায় কৃষক হলে ও সপ্তাহে দুদিন কলকাতার দুটি কাপড়ের হাটে সেলসম্যানের কাজ করতে যান দুর্গাচরণ। কিন্তু তাঁর নেশা গ্রামের ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা শেখানো। ১৯৯৬ সাল থেকে গ্রামের ক্লাব ঘরেই চলতো তাঁর পাঠশালা। কিন্তু দিনের পর দিন সেই ক্লাবের পাঠশালায় পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকে। দুর্গাচরন লক্ষ্য করেন সর্বদাই ছেলে মেয়েরা মোবাইলে আশক্ত হয়ে পড়ছে। কেউ গেম খেলছে তো কেউ রিলস দেখছে।
তাই তাদেরকে আবার বইমুখী করতে উদ্যোগ নেন তিনি। মাসখানেক আগে ক্লাবের ছেলেদের সাথে কথা বলে গ্রামের মাঠে বটগাছের নিচে নতুন করে শুরু করেন এই বর্ণপরিচয় কেন্দ্র। স্কুল, কলেজের বইপত্রের পাশাপাশি নানা ধরনের গল্পের বই, মনিষীদের জীবনী, ধর্মগ্রন্থ সবই স্থান পায় সেই লাইব্রেরীতে। তবে এখানে বসেই পড়তে হবে বই, কোন ভাবে বই বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে না বলে কঠোর নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি দেশের ও বিশ্বের ম্যাপ ও রাখা হয়েছে এই পাঠাগারে।গ্রামের কচি কাঁচাদের একপ্রকার ধরে এনেই সেই গাছতলায় বই পড়াতে শুরু করেন তিনি।তবে মাত্র কয়েক দিনেই তাঁর এই উদ্যোগ সফল হয়েছে। শুধুমাত্র শিশুরা নয়, গ্রামের বহু কিশোর, কিশোরী এমনকি বয়স্ক মানুষজনও এই বর্ণ পরিচয় কেন্দ্রে বই পড়তে আসতে শুরু করেছেন। এখন প্রতিদিন দুবেলাই বই পড়ার জন্য আবাল বৃদ্ধ বনিতা আসতে শুরু করেছেন এই বর্ণ পরিচয় কেন্দ্রে।আর সুন্দরবনে বইমুখী বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে দূর্গাচরন।








