ইডেন গার্ডেন্সের সবুজ গ্যালারি শনিবার বিকেলে যেন সোনার আলোয় ঝলমল করছিল। বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় মহিলা দলের তারকা ক্রিকেটার রিচা ঘোষকে ঘিরে গোটা বাংলার গর্ব যেন একত্রে ধ্বনিত হচ্ছিল সেই মাঠে। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী, ক্রিকেট বোর্ডের কর্তারা এবং হাজার হাজার দর্শক।
সিএবি-র পক্ষ থেকে রিচাকে দেওয়া হয় সোনার ও রুপোর ব্যাট-বল, আর্থিক পুরস্কার হিসেবে ৩৪ লক্ষ টাকা — এগুলো আগেই জানা ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন, “রিচা ঘোষকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে পুলিশ বিভাগের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (ডিএসপি) পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে”। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে করতালির গর্জনে মুখর হয়ে ওঠে ইডেনের আসনভরা দর্শক।
রিচাকে এদিন ‘বঙ্গভূষণ’ সম্মানেও ভূষিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে দেন একটি সোনার চেন ও সংবর্ধনা স্মারক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রিচা শুধু বাংলার নয়, গোটা ভারতের গর্ব। আজকের মেয়েরা যে কোনো ক্ষেত্রেই ছেলেদের সমকক্ষ, রিচা তার প্রমাণ”।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশও এই গর্ব ভাগ করে নিতে দেরি করেনি। রাজ্য পুলিশের সরকারি সোশ্যাল মিডিয়া পেজে লেখা হয়, “Welcome DSP Richa Ghosh — proud to have you in West Bengal Police family.”
সমগ্র রাজ্য জুড়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আনন্দের জোয়ার। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ অপার্থিব ইসলাম আবেগভরে বলেন, “আমরা বাঙালি হিসেবে গর্বিত। যেখানে কেন্দ্র সরকার বাঙালিদের সর্বদা অবহেলা করে, সেখানে আমাদের জননেত্রী তথা বাংলার অভিভাবক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় বাঙালিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রিচা ঘোষের মতো প্রতিভা আজ বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছে — মুখ্যমন্ত্রীর এই সম্মান প্রদর্শন তারই উজ্জ্বল প্রমাণ”।
ইডেনের সেই গৌরবময় বিকেল শুধু এক ক্রীড়াবিদকে সম্মান জানানোর অনুষ্ঠান নয় — তা ছিল বাংলার মেয়েদের সাহস, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। রিচার চোখেমুখে ছিল কৃতজ্ঞতা আর একরাশ আবেগ — “এই সম্মান আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমি বাংলার জন্য আরও খেলতে চাই, আরও জিততে চাই,” বলেন সদ্য ঘোষিত ডিএসপি রিচা ঘোষ।








