মাফলার দিয়ে বাধা দুু পা। দুই হাত বাধা দড়ি দিয়ে ।প্যান্টের দিয়ে আষ্টে-পৃষ্টে গলায় বাধা আছে ফাঁস ।এমন এবস্থায় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের নবগ্রাম রেল স্টেশন সংলগ্ন শ্মশানের পাশ থেকে উদ্ধার হল এক জুয়াড়ির অর্ধনগ্ন রক্তাত মৃতদেহ। ঘটনা জানাজানি হতেই বুধবার নবগ্রাম এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।এটি যে খুনের ঘটনা তা সবিস্তার খতিয়ে দেখার পর পুলিশ কর্তারা এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যান।নিহতের পরিবারও একই দাবির কথা পুলিশ কে জানিয়েছে।পুলিশ খুনের কারণ ও খুনিদের নাগাল পেতে জোরদার তদন্তে নেমে পড়েছে।মৃত ব্যক্তির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য এদিনই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় ।
মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (SDPO)অভিষেক মণ্ডল জানিয়েছেন ,“মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃতর হাত ও পা বাধা ছিল ।প্যান্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া ছিল। দেহে শার্প ইনজুরির চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হবে ।পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে,আনুমানিক
৪৫ বছর বয়সী নিহত ব্যক্তির নাম ওহাব আনসারি ।জামালপুর থানার অন্তর্গত মসাগ্রাম স্টেশন বাজার সংলগ্ন মাঠ পাড়ায় এই ব্যক্তির বাড়ি হলেও তিনি সেখানে থাকতেন না।নিহতের আত্মীয় মহম্মদ মুস্তাক ও শেখ নবাব জানিয়েছেন,“ওহাব আনসারী বিবাহিত। তার ছেলে ও মেয়ে সাবালক । ছেলে চেন্নাইয়ে কাজ করে। সেখানেই ছেলের কাছে ওহাবের স্ত্রী ও মেয়ে থাকে । শেখ নবাব জানান ,“আগে মসাগ্রাম স্টেশন বাজারে সবজির ব্যবসা করতো ওহাব। তবে সে ’জুয়া’ খেলা ও মদের নেশায় খুব বেশী আশক্ত হয়ে পড়েছিল। যেখানে জুয়া খেলা হত সেখানেই জুয়া খেলতে চলে যেত । ওহাব মাস পাঁচেক আগে মসাগ্রামে সবজি ব্যবসা লাটে তুলে দেয়। মসাগ্রামনের বাড়িতেও আর থাকতো না। ইদানিং শক্তিগড় এলাকার কোন জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওহাব থাকছিল।
মহম্মদ মুস্তাক ও শেখ নবাব আরো জানান,ওহাব আনসারি খুন হয়েছে খবর পেয়ে তাঁরা বুধবার বেলায় নবগ্রামে ছুটে যান।ঘটনাস্থলে পৌছে তাঁরা বিভৎস অবস্থায় ওহাবের দেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন।কেমন অবস্থায় ওহাবের মৃতদেহ
পড়েছিল ? এর উত্তরে মুস্তাক ও নবাব জানান ,“নবগ্রাম রেল স্টেশন থেকে আনুমানিক ১০০ মিটার দূরে রয়েছে একটি শ্মশান। সেই শ্মশানের কাছে ফাঁকা জায়গায় ওল্টানো অবস্থায় ওহাবের মৃতদেহ পড়েছিল। তার দুটো পা মাফলার দিয়ে বাধা ছিল । পিঠ ও বুকের সঙ্গে জড়িয়ে দু হাত দড়ি দিয়ে বাধা ছিল।ওহাবের পরণে থাকা প্যান্টটা ওহাবের গলায় আষ্টে-পৃষ্টে ফাঁস দিয়ে জড়ানো ছিল। তাই তার দেহ ছিল অর্ধনগ্ন।এছাড়াও ওহাবের নাকে , মুখে এবং পায়ের হাঁটের পিছনের অংশে আঘাতের চিহ্ন ও রক্তের দাগও তাঁরা দেখতে পেয়েছেন বলে জানান’।তাঁরা এও জানান,’ওহাবের পায়ের হাওয়াই চটির একটি তার মৃতদেহ থেকে প্রায় ২০ মিটার দূরে ,আর অপরটি প্রায় ৩-৪ মিটার দূরে পড়েছিল’। পুলিশের দেওয়া বর্ণনাতেও একই অবস্থায় মৃতদেহ পড়ে থাকার কথা জানা গিয়েছে।তদন্তের প্রয়োজনে পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে ।
ওহাব কি কারণে খুন হয়ে থাকতে পারে ? এই প্রশ্ন ওহাবের আত্মীয় মহম্মদ মুস্তাক ও শেখ নবাবের কাছে রাখা হলে তাঁরা বলেন,“মনে হয় মঙ্গলবার রাতে নবগ্রাম এলাকায় জুয়া খেলতে গিয়ে ওহাব মোটা টাকা পেয়েছিল ।সেই টাকা কেড়ে নিতেই দুস্কৃতিরা নৃশংস ভাবে ওহাবকে খুন করে থাকতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন । যে ভাবে হাত ও পা বেধে ,প্যান্ট দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ওহাব কে খুন করা হয়েছে ,তা দেখে তাঁদের অনূমান খুনি একজন নয় । খুনিরা সংখ্যায় একের বেশী ছিল ।