কৃষ্ণ সাহা, বর্ধমান, ৩০ নভেম্বর: সারাদিন নিখোঁজ থাকার পর রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শুভেন্দু মালিকের দেহ। রবিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের ইটলা গ্রাম সংলগ্ন রাস্তার ধারের নির্জন কলাবাগানে ঘেরা একটি পুকুরে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। পুকুরের গায়েই পড়ে ছিল তাঁর মোটরবাইক, আর পুকুরের পাড়ে গুছিয়ে রাখা ছিল তাঁর পায়ের চপ্পল জোড়া। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তুমুল চাঞ্চল্য।
খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান হাসপাতালে পাঠায়। তদন্তের স্বার্থে মোটরবাইকটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। এটি খুন, নাকি দুর্ঘটনা—তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪২ বছরের শুভেন্দু মালিক জামালপুর ব্লকের পাড়াতল ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা শুভেন্দু পারুল গ্রামের ১১৪ নম্বর বুথের দায়িত্বে ছিলেন। পেশায় তিনি ধান কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। পরিবারের সদস্য বলতে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক পুত্র। কিছুদিন আগেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।
পরিবারের দাবি, শনিবার দুপুরে বাইকে চেপে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরেননি শুভেন্দু। পরিচিতজন ও পরিবারের সদস্যরা বহুবার ফোন করলেও তাঁর মোবাইল সুইচ অফ ছিল। রবিবার সকালে থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ঠিক সেই সময়েই পুকুরে শুভেন্দুর দেহ ভেসে ওঠার খবর আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই ভেঙে পড়েন পরিজনরা।
ঘটনাস্থলে পৌঁছান ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেহেমুদ খাঁন। তিনি বলেন, “কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না। বিষয়টি রহস্যজনক। পুলিশকে যথাযথ তদন্তের আবেদন করেছি।”
মৃতের শ্যালক সুপ্রিয় দাস স্পষ্টভাবে বলেন, “এটা কোনও দুর্ঘটনা নয়। যদি দুর্ঘটনা হতো, তবে চপ্পল গুছিয়ে পুকুরের ধারে থাকবে কেন?”—তার দাবি, এটি খুন হতে পারে।
পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চালাচ্ছে।








