গত সপ্তাহে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমিতা মাঝির জন্য আনা রক্ত দেওয়া হয়েছিল নমিতা বাগদীকে। শুক্রবার ভোরে তিনি মারা গেছেন। এই ঘটনায় নতুন করে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । মৃতার ছেলে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে একটা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
নমিতা বাগদীর বাবা দুকড়ি বাগদী হতাশ। তিনি বলেন, আর কী হবে! আর কি আমার মেয়েটাকে ফিরে পাব?
তার কথায়, ভুল রক্ত দেবার পর থেকেই মেয়ের অবস্থা নতুন করে খারাপ হতে থাকে। অন্যদিকে নমিতার ছেলে রাহুল ও ভাইপো সুমন্ত জানায়, সেদিন রক্ত দেবার পর থেকে রোগীনির হাত খুলে যায়।তাকে আই সি ইউতে রাখা হয়। সেখান থেকে সে ঠিক হয়ে যায়।আজকালের মধ্যেই তার ছুটি হবার কথা ছিল।
তার ছেলে রাহুল জানায়, গতকাল তার মা ভালভাবেই ডায়ালেসিস নেয়। কিন্তু রাতে হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আবার নিয়ে যাওয়া হয় আই সি ইউতে। আজ ভোরেই তাকে জানান হয়,মা মারা গেছে। তাদের পরিস্কার অভিযোগ, সাপের কামড়ের চিকিৎসার পর তার মা ভাল ছিল। নার্সদের ভুলে তার মায়ের প্রাণ চলে গেল। তারা জানায়, তারা এ নিয়ে অভিযোগ করতে চায়।ঘটনার সুত্রপাত গত শনিবার ।
ভাতারের বলগোনার বাসিন্দা নমিতা মাঝি রক্তাল্পতায় বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সামনের তিনতলায় ভর্তি হন শনিবার সকালে। তাদের পরিবারের লোকজনকে দুটি কাগজ দিয়ে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে বলা হয়। নমিতা মাঝির ছেলে সঞ্জিত মাঝি বলেন, রক্ত আনার পর সেই রক্ত নমিতা মাঝির বদলে নমিতা বাগদি নামে অন্য একজনের শরীরে চালানো হয়। এও জানা গেছে, নমিতা বাগদিকে রক্ত দেওয়ার শুরু পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখনই টনক নড়ে সিস্টারদের। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত পরিবর্তন করা হয়। যদিও হাসপাতালের তরফে এই সংক্রান্ত কোন অভিযোগ বা তথ্য আসার সমর্থন পাওয়া যায় নি ।
বিশদ বিররণে জানা গেছে, নমিতা মাঝি নামে ৫৩ বছর বয়স্কা রোগীনির বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের ভাতার তুলসীডাঙ্গা গ্রামে। তার রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাবার চিকিৎসা হচ্ছিল। জরুরি বিভাগের সামনের ওই নিউ বিল্ডিং এর তিনতলাতেই আর একজন রোগীনি ছিলেন। যার নাম, নমিতা বাগদী। নাম একই,পদবী আলাদা। নমিতা মাঝির জন্য রক্ত লাগবে জানতে পেরে ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত আনেন তার ছেলে সঞ্জিত মাঝি।
পরে তিনি তার বৌদিকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, তার মাকে রক্ত দেওয়া হয় নি। পরিবর্তে অন্যজনকে সেই রক্ত দেওয়া হয়েছে। যদিও পরে নাকি ভুল বুঝতে পেরে সেই রক্ত খুলেও নেওয়া হয়েছে। এদিকে , নমিতা বাগদীর শরীরও খারাপ হতে থাকে। অবশেষে, আজ তিনি মারা গেলেন।
এদিকে, নমিতা বাগদীর মৃত্যুর পর আমাদের পক্ষ থেকে হাসপাতালের সুপারকে ফোন করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।








