প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- বিধানসভা ভোটের ঢাকে এখনও কাঠি পড়েনি । তার আগেই এই রাজ্যে বেজে গিয়েছে বিধানসভা ভোটের দামামা।শাসক দল বিভিন্ন কর্মসূচীকে সামনে রেখে নেমে পড়েছে দলীয় প্রচারে ।তারই মধ্যে খুব সন্তর্পণে বিজেপি শুরু করে দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন বিধানসভা ভিত্তিক কৌশল রুপায়নের কাজ।
কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বের মনোনিত ব্যক্তিরা ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু করেদিয়েছেন ।
এবার রায়না বিধানসভায় পদ্ম ফোটাতে সেই দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন আমলা (আইসিএস )তথা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র ঘনিষ্ট বিজেপি নেতা পরেশচন্দ্র দাস ।দায়িত্ব পেয়েই শুক্রবার দিল্লি থেকে মঙ্গলকোটের বাড়িতে ফিরছেন পরশেবাবু।আগামী রবিবার থেকেই পরেশবাবু রায়না বিধানসভায় ঘাঁটি গাড়ছেন বলে জানাগিয়েছে ।যদিও পরেশবাবুর রায়নায় আগমনকে কোন আমল দিতে চাইছেন না রায়নার তৃণমূল নেতৃত্ব ।
বিজেপি নেতা পরেশচন্দ্র দাস বৃহস্পতিবার টেলিফোনে জানিয়েছেন ,কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথা মেনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব
তাঁকে রায়না বিধানসভার ভোট পরিচালনার
দায়িত্ব দিয়েছেন । দল যে দায়িত্ব দিয়েছে সেই দায়িত্ব পূরণে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন ।
পরেশবাবু দাবি করেন ,“আমরা পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের “একান্ত মানবতাবাদে” শুধু বিশ্বাসি-ই নই, তা বাস্তবেও রূপায়ণ করবো।এখন পশ্চিম বাংলায় আইনের শাসন বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। কুশাসন ও নিজ স্বার্থ চরিতার্থকারীদের জন্য বাংলা তাঁর নিজস্ব গৌরব হারিয়ে ফেলেছে ।
সেই কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রায়না সহ গোটা বাংলায় তৃণমূলের পতন ঘটাতে হবে। বদল ঘটাতে হবে সরকারের ।তার লক্ষেই রায়না বিধানসভায় পদ্ম ফোটাতে বিজেপি নেতা ও কর্মীরা আর কয়েকদিন পর থেকেই সামাজিক ন্যায় ও সমতার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে ময়দানে নেমে পড়বে । আর্থ- সামাজিক ও রাজনৈতিক বিকেন্দ্রীয় করণ ছাড়া সকল মানুষের আর্শীবাদ পাওয়া সম্ভব নয়। তার জন্য রায়নার সকল সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি লড়াইয়ে নামবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । ”বিজেপি সূত্রে খবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শা নিজে যোগ দেবেন রায়নার জনসভায়।
রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন আমলা পরেশচন্দ্র দাস । এদিন তিনি বলেন ,”২০১৯ লোকসভা ভোটে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থি হয়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন। মূলত রায়নায় তৃণমূলের রিগিংয়ের কারণে তিনি জিততে পারেন নি । তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডল শুধুমাত্র রায়না বিধানসভা থেকে ব্যপক লিড পেয়ে জয়ী হন ।এবারের বিধানসভা ভোটে রায়নার বিজেপি কর্মীরা সেই রিগিং রুখেই রায়নায় পদ্ম ফোটাবে । পরেশ বাবুর মতে ,এবারের লড়াইটা মানুষের জন্য ও মানুষের দ্বারা মানুষের লড়াই হবে । ”
রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে পরেশবাবু বলেন ,“এখন পশ্চিম বাংলার কোন রাজনৈতিক ও আর্থিক ভবিষ্যত নেই । মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি বন্দ্যোপাধ্যায় সোনার বাংলাকে খুনী বাংলায় পরিনত করেছেন। এই বাংলায় এখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিও আক্রান্ত হন । এই বাংলায় আইনের শাসন বলে এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।” সেই কারণেই বাংলার মানুষ এবার বাংলায় বিজেপিকেই ক্ষমতায় আনবেন। বিজেপি-ই একমাত্র দল যারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের জন্য কাজ করতে বদ্ধ পরিকর ।
রায়না ১ ব্লকের দাপুটে তৃনমূল নেতা তথা সভাপতি বামদেব মণ্ডল যদিও জানিয়েছেন ,
বিজেপির রায়না বিধানসভা জয়ের স্বপ্ন অধরাই রয়েযাবে । সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে যোগ্য জবাব দেবেন রায়নাবাসী ।কারণ রায়নাবাসী জানেন ,মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতেই রায়না সহ রাজ্যের
সর্বত্র প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে । সেই উন্নয়নের সুফল পাওয়া রায়নার বাসিন্দারা বিজেপিকে প্রত্যাক্ষ্যান করবেন ।একই কথা শুনিয়েছেন ,
রায়না ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অসীম পাল ।
তিনি জানিয়েদেন ,এবারও রায়নায় ঘাসফুলই ফুটবে । পরেশচন্দ্র দাসকে একরাশ হতাশা নিয়েই দিল্লি ফিরতে হবে ।