আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

সরকারী প্রতিষ্ঠানে মমতা ও আম্বেদকারকে সাক্ষী রেখে হল বিডিও’ র আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ৪ জুলাই

সাত পাকে বাঁধা পড়তে চলেছেন বিডিও সাহেব ।
সেই আনন্দে বর্ধমান ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির
ঘরে ঘটাকরে হল বিডিও রজনীশ কুমার যাদবের
আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান।বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভারতের সংবিধান রচয়িতা
বাবা সাহেব আম্বেদকরের ছবির সামনে হয় সেই
অনুষ্ঠান ।যার সর্বময় কর্ত্রী ছিলেন বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের (বি ডি এ) চেয়ারম্যান তথা ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কাকলী তা গুপ্ত।তাঁর সাথী হয়েছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ অন্য কর্মাধ্যক্ষ গণ।তবে এই ছবি যাঁরা
সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন তাঁরা অনুষ্ঠানটিকে
’ভি ডি ও সাহেবের আইবুড়ো ভাত’ বলে সন্মোধন করে বিষয়টিকে হাসির খোরাক বানিয়ে দিয়েছেন।

কাঁসার থালা ও বাটিতে হরেক রকম রান্না করা খাবার টেবিলে সাজিয়ে তার সামনে চেয়ারে বসানো হয় গলায় মালা পরিহিত বিডিও রজনীশ যাদবকে।তার পর শুরু হয় শাঁখ বাজানো।তৃণমূল নেত্রী কাকলীদেবী বিডিও সাহেবের কপালে পরিয়ে দেন চন্দনের ফোঁটা।দুর্বা ঘাস মাথায় ছুঁইয়ে দিয়ে বিডিওকে আশীর্বাদও করেন কাকলীদেবী।সৌজন্য দেখিয়ে বিডিও সাহেবও রীতিমত কাকলীদেবীর পায়ে হাত ছুঁয়ে প্রণাম করেন।বিডিও সাহেবের এমন আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠানই এখন রাজনৈতিক মহলেও চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও এ নিয়ে সমাজ মাধ্যমে কটাক্ষ করেছেন ।

যদিও বিডিয়ে চেয়ারম্যান কাকলী তা গুপ্তের স্নেহময়তা এবং ব্লকের দাপুটে তৃণমূল যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্যের পৌরহিত্যে হওয়া বিডিও সাহেবের আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান ব্লকেও যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। এর মধ্যে যে বিষয়টি নিয়ে সবথেকে বেশী চর্চা চলছে তা হল, কাকলীদেবীকের পা ছুঁয়ে বিডিও সাহেবের প্রণাম করা ! তবে এমন নিদর্শন
পূর্বেও এই পূর্ব বর্ধমান জেলার মানুষ দেখেছে।
কোভিড কালে ২০২১ সালের ১৭ জুন জেলার গুসকরার কৃষি মাণ্ডিতে হওয়া একটি অনুষ্ঠানে
দোর্দণ্ড প্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিলেন তৎকালীন
আউশগ্রামের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। এ নিয়ে কম সমালোচনার ঝড় বয় নি। সেই সমালোচনার তালিকায় এবার জায়গা করে নিলেন বর্ধমান ১ ব্লকের বিডিও রজনীশ কুমার যাদব। তবে তিনি অবশ্য এসবকে পরোয়া করতে নারাজ ।
তবে ’বিডিও-র আইবুড়ো ভাত’ অনুষ্ঠানকে ’ভিডিও-র আইবুড়ো ভাত“ আখ্যা দেওয়ার বিষয়টিকে নিজিরবিহীন বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা।

See also  তৃণমুল কংগ্রেসের মাটির সাথে জুড়ে থাকা কর্মী, মানুষের আশীর্বাদ সব মিলিয়ে ছক্কা মেরে আউট করে দেওয়া হবে বললেন কীর্তি আজাদ

এদিকে এমন অনুষ্ঠান নিয়ে সমালোচনার ঝড় বওয়া শুরু হতেই বিডিও রজনীশ কুমার যাদব বলেন, অনুষ্ঠানটি সরকারী জায়গায় হয় নি। আর তৃণমূল নেত্রী কাকলী তা গুপ্তের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা প্রসঙ্গে বিডিওর ব্যাখ্যা ,উনি (কাকলীদেবী) মায়ের মত । উনি আমায় আশীর্বাদ
করেছেন। আমার পারিবারিক শিক্ষা আছে মাতৃ তুল্য কাউকে পায়ে হাত ছুঁয়েই প্রণাম করতে হয় । সেটাই আমি করেছি।“ যদিও কাকলী তা গুপ্ত পরিস্কার জানান,“সরকারি জায়গাতেই হয়েছে বিডিও’র আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান ”। আর এ নিয়ে কটাক্ষ করে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’সরকারি আধিকারিকরা যে দলদাসে পরিণত হয়েছে,এটা তারই একটা জলন্ত উদাহরণ“।

রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন সরকারী অসিসে আইবুড়ো ভাতের আয়োজন করটা এখন একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। তাঁদের মতে সরকারী অফিসে এই প্রথম কোন বিডিও’র আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান হল এমনটা নয় । এর আগে ২০২২ সালের ২৪ জুন পূর্ব বর্ধমানের জালালপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে হয়েছিল উপ প্রধান শেখ সাহাবুদ্দিন মণ্ডলের আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠান । শাসক দলের সকল পঞ্চায়েত সদস্যরা ছিলেন সেই আয়োজক ।উপ প্রধানের আইবুড়ো ভাতের অনুষ্ঠানেও সেই সময় ছিল এলাহি আয়োজন । সরকারী কাজের দিনে সানাইয়ের সুর , শঙ্খ ধ্বনী ,উলু ধ্বনী সবই বেজেছিল পঞ্চায়েতর অফিসে। তা নিয়ে কম সমালোচনা হয় নি । ফের একই ঘটনার পুণরাবৃত্তি এবার হল বর্ধমান ১ ব্লকের সরকারী প্রতিষ্ঠানে।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি